জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরীক্ষায় জালিয়াতি করে সুযোগ পাওয়া ৪ শিক্ষার্থীকে কারাগারে পাঠিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
রবিবার সাক্ষাৎকার দিতে এসে লিখিত পরীক্ষার কাগজের সাথে লেখার মিল না পাওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তাদেরকে আটক করে।
আটকৃতরা হলেন, মাহবুব হোসেন, ইমাম হোসেন, অমিত হাসান, আশিকুল হাসা রবিন। এদের মধ্যে তিনজন জালিয়াতির কথা স্বীকার করলেও রবিন অস্বীকার করেছে। পরে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তাদেরকে পুলিশের হাতে তুলে দেয়। পুলিশ তাদেরকে আটক করে আশুলিয়া থানায় নিয়ে যায়।
প্রক্টর অফিস সূত্রে জানা গেছে, আদমদিঘি উপজেলার তহিদুল ইসলামের ছেলে মাহবুব হোসেন। তিনি ভর্তি জালিয়াতি চক্রের সদস্য সনদের সাথে সাড়ে তিন লাখ টাকা চুক্তি করেন। চুক্তি অনুযায়ী মাহবুবের পরিবর্তে সনদ পরীক্ষা দেয়। তাতে মাহবুব ‘ই’ ইউনিটে (বিজনেস স্টাডিজ অনুষদ) ৩য় স্থান লাভ করে। তার ভর্তি পরীক্ষার রোল নং- ৫৩০৯৪২। সে বগুড়া আর্মপুলিশ ব্যাটলিয়ান কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেছে।
আরেকজন ময়মনসিংহ জেলার সদর থানার হাফেজ আব্দুল মান্নানের ছেলে ইমাম হোসেন। তার পরীক্ষা ছয় লাখ টাকার বিনিময়ে রাহাত নামের একজন দিয়ে দিলে সে ‘এফ’ ইউনিটে (আইন ও বিচার অনুষদ) ৩য় স্থান লাভ করে। তার ভর্তি পরীক্ষার রোল নং- ৬৩৭৩৪৪। সে ময়মনসিংহ আনন্দমহন কলেজের শিক্ষার্থী ছিলেন।
অন্যজন ঢাকা জেলার কেরানীগঞ্জের হারেছ মিয়ার ছেলে অমিত হাসান। তার পরীক্ষাও ছয় লাখ টাকার বিনিময়ে সনেট দিয়ে দেয়। এতে সে ‘এইচ’ (আইআইটি) ইউনিটে ১১তম স্থান লাভ করে। তার ভর্তি পরীক্ষার রোল নং- ৮১২৬৮৬।
অমিত ধরা খাওয়ার পর জিজ্ঞসাবাদকালে বলেন, ‘যদি আমার এখানকার (জাবির) পরীক্ষা বাতিল করেন। তাহলে আমিতো এইচএসসি পরীক্ষাও প্রশ্ন পেয়ে পরীক্ষা দিয়েছি। এখন আমার এইচএসসি পরীক্ষার রেজাল্ট বাতিল করেন। ’
অন্যদিকে কুষ্টিয়া জেলার সদর থানার আবুল কালাম আজাদের ছেলে আশিকুল হাসা রবিন। সে ‘এফ’ (আইন ও বিচার অনুষদ) ইউনিটে ১৬তম স্থান লাভ করে। তার লেখার সাথে পরীক্ষার কাগজের লেখার মিল না পাওয়ায় তাকে আটক করা হয়।
সে জালিয়াতির কথা অস্বীকার করে বলেন, ‘আমি কোন জালিয়াতি করি নাই। আমাকে এখন পরীক্ষা দিতে দিলে আমি পরীক্ষা দিব। আমি নারভাস থাকার কারণে ঠিক মতো লিখতে পারিনি।’
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক তপন কুমার সাহা বলেন, ‘তার লেখার মিল না পাওয়ায় তাকে আটক করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে মনে হয়েছে সেও অপরাধী। তাই তাকে আশুলিয়া থানা পুলিশের হাতে সোপর্দ করা হয়েছে। পুলিশ বাকি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।’
আর বাকি তিনজনের বিষয়ে প্রক্টর বলেন, ‘তারা মুচলেকায় ভর্তি জালিয়াতির কথা স্বীকার করে নিয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে মামলা করা হবে।’
আটকৃতদের বিষয়ে আশুলিয়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) নয়ন বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের অভিযোগ অনুযায়ী তাদেরকে আটক করা হয়েছে। থানায় নিয়ে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
বিডিপ্রতিদিন/ ১২ নভেম্বর, ২০১৭/ ই জাহান