রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) ছাত্র ধর্মঘট চলাকালে হামলার অভিযোগ পাওয়া গেছে। প্রক্টরের উপস্থিতিতে ছাত্রলীগের সাবেক নেতাকর্মীরা এ হামলা চালায় বলে দাবি প্রগতিশীল ছাত্রজোটের।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নিপীড়নবিরোধী শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে ছাত্র ধর্মঘটের আয়োজন করা হয়। সোমবার সকাল থেকে শুরু হওয়া কর্মসূচির কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ওই হামলার ঘটনা ঘটে।
জোটের নেতাকর্মী ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, পূর্বঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে প্রগতিশীল ছাত্রজোটের নেতাকর্মীরা সোমবার সকাল ৮টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবনের সামনে অবস্থান নেয়। এরপর ৮টা ১০ মিনিটে তারা ক্যাম্পাসের বাস আটকে দেয়। এতে সকালের প্রথম ট্রিপের বাসগুলো যথাসময়ে ছেড়ে যেতে পারেনি। এরপর সাড়ে ৯টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন কর্মকর্তা ও ছাত্রলীগের সাবেক দুই নেতার নেতৃত্বে কয়েকজন ছাত্রজোটের নেতাকর্মীদের সঙ্গে বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়ে এবং একপর্যায়ে জোটের নেতাকর্মীদের সরিয়ে দেয়। পরে ৯টা ৪০ মিনিটে ক্যাম্পাস থেকে বাস চলাচল শুরু হয়।
এদিকে হামলার প্রতিবাদে বেলা ১২টায় ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল ও কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে সমাবেশ করেছে প্রগতিশীল ছাত্রজোটের নেতাকর্মীরা।
সমাবেশে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্র ফেডারেশনের সভাপতি কিংশুক কিঞ্জল বলেন, পূর্ব নির্ধারিত কর্মসূচি অনুযায়ী আমরা জোহা চত্বরে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছিলাম। এসময় কোনো বাস চলাচল করতে দেয়া হয়নি। একপর্যায়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর এসে আমাদের একটি বাস ছেড়ে দিতে বলেন। এ নিয়ে প্রক্টরের সঙ্গে আমাদের কথাবার্তা চলছিল। কথাবার্তার একপর্যায়ে প্রক্টর উত্তেজিত হয়ে বলেন, 'দেখি তোমরা কীভাবে বাস আটকাও। এসময় পুলিশ বাঁশি বাজাতে বাজাতে আমাদের সরিয়ে দিলে কাজলার দিকে একটি বাস চলে যায়। হঠাৎ সাবেক ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা এসে আমাদের ধাক্কা দিতে শুরু করে।'
বিপ্লবী ছাত্রমৈত্রীর কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক দিলীপ রায় বলেন, জোহা চত্বরে আমরা ছাত্রজোট শান্তিপূর্ণভাবে অবস্থান করছিলাম। প্রক্টর আমাদের সঙ্গে কথা বলতে আসলে আমরা খুব বিনীতভাবে বোঝানোর চেষ্টা করি যে, ধর্মঘটে কোনো গাড়ি চালানো যাবে না। একপর্যায়ে তিনি উত্তেজিত হয়ে যান। এর মধ্যে গাড়ি চলাচল শুরু হয়। তখন আমরা নেতাকর্মীরা সরাসরি গাড়ির সামনে অবস্থান নিলে ছাত্রলীগের নামধারী দুই জন এসে আমাদের অনেককে কিলঘুষি মারে।
ছাত্রলীগের হামলার বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ রুনু বলেন, ছাত্রলীগের কেউ ওখানে ছিল না। একটা ছবি দেখেছি, ওখানে ছাত্রলীগের গত কমিটির দুই সহ-সভাপতি ছিলেন। বর্তমান ছাত্রলীগ কমিটির কেউ ওখানে উপস্থিত ছিলেন না।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক লুৎফর রহমান বলেন, এখানে ছাত্রলীগ ছিল না। আমি সকাল থেকেই প্রশাসন ভবনের সামনে ছিলাম। প্রগতিশীল ছাত্রজোটের নেতাকর্মীদের সঙ্গে হাসিমুখে কথা বলে বাস ছাড়তে বলেছি। আমাদের বাস ছেড়ে গেছে। আমাদের শুধু সকালের সিডিউলের কিছু বাস বন্ধ ছিল। তারপর থেকে সকল বাস চলছে।
ভিডিও ফুটেজে ধাক্কাধাক্কির বিষয়টি রয়েছে বললে তিনি বলেন, হয়তো এ রকম কিছু হতে পারে। তবে কে এটা করেছে, সেটা বলতে পারবো না। আমি তখন হয়তো ওখানে ছিলাম না।
বিডি প্রতিদিন/২৯ জানুয়ারি, ২০১৮/ফারজানা