জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের নয়তলা ভবন নির্মাণের কাজ নিয়ে ছয় তলা করেই পুরো বিল তুলে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে। এর মাধ্যমে অন্তত ৭ কোটি টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন শিক্ষা প্রকৌশল অধিদফতরের তত্ত্ববধায়ক প্রকৌশলী দেলোয়ার হোসেন। এ নিয়ে বারবার মন্ত্রণালয়ে লিখিত অভিযোগ দিয়েও লাভ হয়নি। উল্টো এই প্রকৌশলীকে নানা হেনস্থা করা হচ্ছে।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছয়তলা একাডেমিক ভবন ১৫ তলা করতে ২০১৫ সালে দ্য বিল্ডার্স নামের একটি প্রতিষ্ঠানকে কাজ দেয় শিক্ষা প্রকৌশল অধিদফতরের প্রধান প্রকৌশলী দেওয়ান মোহাম্মদ হানজালা। নির্মাণ ব্যয় ধরা হয় ৪৫ কোটি ২৪ লাখ টাকা। অর্থ্যাৎ মোজাইকসহ প্রতি তলার ব্যয় ধরা হয় ৫ কোটি দুই লাখ টাকা।
২০০৭ সালে ভবনটি ছয় তলা করা হয়েছিল। দ্বিতীয় দফায় ২০১৫ সালে ১৫ তলা পর্যন্ত নির্মাণকাজ শুরুর দুই বছর পর হঠাৎ করেই প্রধান প্রকৌশলী ডিএম হানজালা ভিত্তি দুর্বল এমন অজুহাতে ১২ তলা পর্যন্ত ভবন করার মতামত দেন। যদিও ভবনটির ভিত্তি দেয়া আছে ২০ তলার। ১২ তলার জন্য সংশোধিত ব্যয় ধরা হয় ৩৭ কোটি ৪০ লাখ টাকা।
মূল দরপত্রে মোজাইকের কথা বলা হলেও দেয়া হয় টাইলস। প্রথম দরপত্রে মোজাইকসহ প্রতি তলার ব্যয় ধরা হয়েছিল ৫ কোটি দুই লাখ টাকা। সেই হিসেবে ছয় তলার জন্য ব্যয় হওয়ার কথা ৩০ কোটি ১২ লাখ টাকা। কিন্তু প্রধান প্রকৌশলী ডি এম হানজালার হস্তক্ষেপে দর নির্ধারিত হয় ৭ কোটি টাকা বেশি, ৩৭ কোটি ৪০ লাখ টাকায়।
এসব অনিয়ম ও দুর্নীতির বিষয়ে দফায় দফায় মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়ে আপত্তির কথা জানান, তত্ত্ববধায়ক প্রকৌশলী। কিন্তু কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। তত্ত্ববধায়ক প্রকৌশলী দেলোয়ার হোসেন বলেন, এখানে ঠিকাদারকে বাড়তি সুবিধা পাইয়ে দেয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। সরকারি অর্থের যথেচ্ছা ব্যবহার বা অন্যকে সুবিধা করিয়ে দেয়ার জন্য যারা আইনপ্রয়োগ করে তারা রাষ্ট্রের নয়, দেশের মানুষের নয়, তারা তাদের জন্যই করে।
নিজ দফতরের এ দুর্নীতি নিয়ে কথা বলতে চাননি শিক্ষা প্রকৌশল অধিদফতরের প্রধান প্রকৌশলী দেওয়ান মোহাম্মদ হানজালা। তবে তদন্ত সাপেক্ষে এই দুর্নীতির বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দিলেন শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল। তিনি বলেন, আমাদের কাছে কেউ অভিযোগ দিলে আমরা লিখিতভাবে তদন্ত করতে বলব। অনেক চলতেছে এগুলা।
সূত্র: একাত্তর টিভি
বিডি প্রতিদিন/ফারজানা