প্রায় প্রতি বছরই শীতের শেষের দিকে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের আইইআর বিভাগের শিক্ষার্থীরা আয়োজন করে একটি অনন্য উৎসবের। সেটি হল পিঠা উৎসব। যেখানে থাকে হরেক রকমের পিঠার সমাহার। পিঠাগুলো রাত জেগে তৈরি করেন সেই বিভাগের বিভিন্ন সেশনের শিক্ষার্থীরা। দিনভরই জমজমাট থাকে এ উৎসব।
বৃহস্পতিবার সকালে উৎসবের উদ্বোধন করেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট সদস্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মহীবুল আজিজ। এ সময় উপস্থিত ছিলেন শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইআর) শিক্ষক রাজীব আহমেদ ফয়সাল, হাসান তৌফিক ইমাম, তাসনিম মুশাররাত, সুস্মিতা দত্ত, জেরিন আক্তার, আমানুল্লাহ।
পিঠা উৎসবে আইইআরের বিভিন্ন শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীরা নিজেদের হাতে তৈরি রকমারি পিঠা-পুলি নিয়ে স্টল সাজান। ফুলঝুড়ি, পাকন পিঠা, লেয়ার পুডিং, ক্যারামেল পুডিং, বেণি পিঠা, নারকেল পুলি, ডিম কুকিজ, পাটি সাপটা, তালের পিঠা, ঝাল পিঠা, কলার পিঠাসহ প্রায় ৮০ রকমের পিঠা-পুলি ছিলো শিক্ষার্থীদের ১০টি স্টলে।
পিঠা উৎসবকে ঘিরে আইইআরের সক্রেটিস চত্ত্বরকে বর্ণিল সাজে সাজানো হয়। আইইআরের শিক্ষার্থীরা ছাড়াও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে পিঠা উৎসবটি মিলনমেলায় পরিণত হয়। তাদের পদচারণায় মুখর হয়ে উঠে আইইআর প্রাঙ্গণ।
পিঠা উৎসবে অংশ নেওয়া চবির রসায়ন বিভাগের শিক্ষার্থী পারভিন আক্তার জানান, শীতের সময়ে চবির বিভিন্ন বিভাগ, ইনস্টিটিউটে পরীক্ষা থাকে। তাই বাড়ি যাওয়া হয় না। শীতের পিঠাও খাওয়া হয় না। এ সময়ে আইইআরের শিক্ষার্থীরা শীতের রকমারি পিঠা নিয়ে যে উৎসবের আয়োজন করেছে তা সত্যিই প্রশংসনীয়।
‘প্রায় প্রতিটি স্টল থেকেই পিঠার স্বাদ নিয়েছি। বাড়ির মতো করে তৈরি এসব পিঠার স্বাদ নিয়ে মায়ের হাতে তৈরি পিঠার কথা মনে পড়ে গেলো।’ যোগ করেন তিনি।
আবহমান বাংলার ঐতিহ্যবাহী বাহারী পিঠার স্বাদ নেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পিঠা উৎসবে অংশ নেওয়া চবির শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা আইইআর শিক্ষার্থীদের মনোমুগ্ধকর সাংস্কৃতিক পরিবেশনা উপভোগ করেন। বাউল গান, নাচের সঙ্গে কবিতা পাঠ পুরো উৎসবকে প্রাণবন্ত করে তোলে।
পিঠা উৎসবে সবচেয়ে বড় স্টল ছিলো ‘হিম হাওয়া’। ২৮ রকমের পিঠা ছিলো দ্বিতীয় ব্যাচের শিক্ষার্থী উম্মে সাদিয়া মিতুর তৈরি এ স্টলে। অন্যদিকে স্টলের সামনে ‘এই স্টলের অর্জিত অর্থ সামাজিক কাজে ব্যয় করা হবে’ লেখা নিয়ে নজর কাড়ে তৃতীয় ব্যাচের শিক্ষার্থী মিথিলা হকের তৈরি ‘নেমন্তন্ন’ স্টল।
পিঠা উৎসবের আয়োজক ষষ্ঠ ব্যাচের শিক্ষার্থী মো. সাব্বির জানান, ঋতুবৈচিত্র্যের এ দেশে শীত আমাদের অনেকের কাছেই প্রিয়। ঐতিহ্যগত কারণে এ ঋতুর সঙ্গে পিঠার অন্যরকম যোগসূত্র আছে। তাই শীতকে আমরা বরণ করে নিয়েছি পিঠা উৎসবের মাধ্যমে।
বিডি প্রতিদিন/এ মজুমদার