সেশনজট যেন পিছু ছাড়ছেনা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের। দীর্ঘমেয়াদী সেশনজটে পড়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের ১১ বিভাগ।
২০১৫ সালে সাবেক উপাচার্য প্রফেসর ড. ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী দায়িত্ব নিয়ে সেশনজট নিরসনের শপথ নেন। এ লক্ষ্যে তিনি সেশনজট নিরসন কমিটি গঠন করেন। এছাড়াও নানামুখী পরিকল্পনার ফলে সেশনজট শূণ্যের কোটায় নিয়ে আসা সম্ভব হয়েছিল। কিন্তু নতুন উপাচার্য দায়িত্ব নেওয়ার পর আবারো শিক্ষার্থীরা ভয়াবহ সেশনজটের মুখে পড়েছে।
চবি মেরিন সায়েন্স ইনস্টিটিউটের ২০১৪-১৫ সেশনের মো. জিয়াউল হক বলেন, আমাদের সেশনে অন্য বিভাগে যারা পড়ে তাদের অনেকের মাস্টার্স পরীক্ষা শেষ। কেউ ফলাফল পেয়েছে কেউ পায়নি। আবার কেউ অনার্স শেষ করে মাস্টার্সে ক্লাস করছে কিংবা চাকরির প্রস্তুতি নিচ্ছে। কিন্তু আমাদের এখনো অনার্সই শেষ হয়নি।
শুধু ১৪-১৫ সেশন নয়। ১৩-১৪ সেশনের যাদের এক বছর আগে মাস্টার্স শেষ করে চাকরিতে যোগদান করার কথা তারা সবেমাত্র মাস্টার্সে উঠেছে। ১৫-১৬ সেশন, যাদের অনার্স শেষ করার কথা তারা মাত্র তৃতীয় বর্ষে ফলাফল পেয়েছে। অনার্সে চারটির জায়গায় ছয়টি ব্যাচ চলমান রয়েছে। এর চেয়ে ভয়াবহ চিত্র একই অনুষদের ফিশারিজ বিভাগের।
অনুষদের আরেক বিভাগ ওশানোগ্রাফিতে ভয়াবহ চিত্র। এ বিভাগের সভাপতি স্বয়ং উপাচার্য প্রফেসর ড. শিরীণ আখতার ছিলেন। এরকম দীর্ঘমেয়াদী সেশনজটের শঙ্কা রয়েছে ১১ বিভাগের। এর মধ্যে চবি কলা ও মানববিদ্যা অনুষদের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউট, আধুনিক ভাষা ইনস্টিটিউট, ইংরেজি ও নাট্যকলা বিভাগ এবং জীববিজ্ঞান অনুষদের প্রাণিবিদ্যা বিভাগ, ১৬ মাসেও রেজল্ট হয়নি স্পোর্টস সায়েন্স বিভাগে।
জানা যায়, পরীক্ষা চলাকালীন ক্যাম্পাস বন্ধ হয়ে গেছে এরকম রয়েছে ২০ বিভাগের প্রায় ৩৫ বর্ষ। এর মধ্যে রয়েছে আবার করোনার আগেই পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে কিন্তু এখনো ফলাফল হয়নি এরকম রয়েছে প্রায় ৫০টিরও বেশি। এছাড়া করোনার ধাক্কায় প্রায় সব বিভাগেরই ছয় থেকে একবছরের জটে পড়তে হবে। করোনার কারণে গত আট মাস বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ রয়েছে। এর মধ্যে গত ৬ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হয়েছে অনলাইন ক্লাস। এতেও উপস্থিতি গড়ে অর্ধেক। অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ে সেশনজট এড়াতে আটকে পড়া পরীক্ষাগুলো নেওয়ার, করোনার আগে অনুষ্ঠিত পরীক্ষাগুলো ফলাফল দ্রুত প্রকাশ কিংবা অটোপাশের বিষয়ে বিভিন্ন সিদ্ধান্ত নিলেও চবি কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে কোনো পদক্ষেপ প্রহণ করেনি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক চৌধুরী আমীর মোহাম্মদ মুছা বলেন, বিষয়টি আমাদের মাথায় আছে। কয়েকদিনের মধ্যে এটা একাডেমিক শাখাসহ উপাচার্য ম্যাডামের সাথে বৈঠক হওয়ার কথা আছে।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল