২২ নভেম্বর, ২০২০ ১৭:৩০

ছাত্রলীগ নেতা দিয়াজ হত্যাকাণ্ডের ৪ বছর, তদন্তে নেই অগ্রগতি

বাইজিদ ইমন, চবি:

ছাত্রলীগ নেতা দিয়াজ হত্যাকাণ্ডের ৪ বছর, তদন্তে নেই অগ্রগতি

চবি ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক দিয়াজ ইরফান চৌধুরী

কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক দিয়াজ ইরফান চৌধুরী চাঞ্চল্যকর হত্যাকাণ্ডের এখনো কুল কিনারা করতে পারেনি পুলিশ। ঘটনার আসল রহস্যও এখনো উন্মোচিত হয়নি। এ নিয়ে জনেমনে দেখা দিয়েছে নানা প্রশ্ন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ২য় কলা অনুষদের নির্মাণ কাজের দরপত্র কোন্দলের সূত্র ধরেই পরিকল্পিতভাবে দিয়াজকে হত্যা করা হয়েছে বলে দাবি পরিবারের। কিন্তু বহুল আলোচিত এ হত্যাকাণ্ডের চার বছর পূর্ণ হলেও হত্যার আসল রহস্য উন্মোচন করতে পারেননি মামলার তদন্ত কর্মকর্তরা। প্রতিবছরই তদন্ত কর্মকর্তা পরিবর্তন হয়েছে, হয়নি শুধু মামলার অগ্রগতি। 

এদিকে সন্তানহারা দিয়াজের মা জাহেদা আমিন চৌধুরী সুষ্ঠু বিচারের আশায় এখনও ধুকে ধুকে কাঁদছেন। ছেলে হত্যার বিচারে চেয়ে করে বেশ কয়েকবার গায়ে কাপনের কাপড় জড়িয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন স্থানে অনশনেও বসছেন তিনি। 

দিয়াজের বড় বোন জুবাঈদা ছরওয়ার চৌধুরী নিপা বলেন, ‘কোনো নতুন আসামি গ্রেফতার হয়নি। দুইজন আসামি জামিনে আছেন। বাকিরা পলাতক। আমরা সিআইডি অফিসে যাচ্ছি। কিছুদিন আগে তদন্ত কর্মকর্তা পরিবর্তন হয়েছে। ওনাকে নতুন করে সব ডকুমেন্ট ও স্বাক্ষী দেখাতে হচ্ছে, বুঝাতে হচ্ছে।’ 

দিয়াজ হত্যার তদন্তকারী কর্মকর্তা চট্টগ্রাম ও জেলার সিআইডির সহকারী পুলিশ সুপার অবদুস সালাম মিয়া বলেন, ‘তদন্ত চলতেছে। আমি সবেমাত্র এ মামলার তদন্তের দায়িত্বে এসেছি। কিছুদিন আগে আমি ঘটনাস্থলে গেয়েছি। সাক্ষ্য প্রমাণ সংগ্রহ করা হচ্ছে। বাদীপক্ষ যেসব তথ্য দিয়েছে তা আমরা সংগ্রহ করছি। নিরপেক্ষ জবানবন্দি নেয়া হচ্ছে।’

জানা যায়, ২০১৬ সালের ২০ নভেম্বর রাতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন উত্তর ক্যাম্পাসে নিজ বাসা থেকে ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার করা হয় ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ সম্পাদক দিয়াজের লাশ। ঘটনার পর দিন প্রথম দফা ময়নাতদন্ত করা হয়। তিন দিন পর (২৩ নভেম্বর) ‘আত্মহত্যা’ উল্লেখ করে ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন দেয় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ কর্তৃপক্ষ। তবে দিয়াজের পরিবার এ ঘটনাটিকে ‘পরিকল্পিত হত্যা’ বলে দাবি করে আসছিল। দিয়াজের লাশ উদ্ধারের চার দিন পর চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে দিয়াজের মা জাহেদা আমিন চৌধুরী পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড বলে দাবি করেন। পরে ২৪ নভেম্বর দিয়াজের মা জাহেদা আমিন চৌধুরী বাদী হয়ে আদালতে মামলা দায়ের করেন। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন এক সহকারী প্রক্টর, ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি এবং সংগঠনটির ১০ নেতাকর্মীকে আসামি করা হয়। দিয়াজের মায়ের আপত্তির ফলে আদালত সিআইডিকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দেয়। এরপর দ্বিতীয় দফা ময়নাতদন্ত করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগের চিকিৎসকরা। তদন্তের স্বার্থে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগের প্রধান অধ্যাপক সোহেল মাহমুদের নেতৃত্বে একটি টিম দিয়াজের বাসা পরিদর্শন করেন। পরে ২০১৭ সালের ৩০ জুলাই দেওয়া দ্বিতীয় দফা ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে দিয়াজের শরীরে হত্যার হত্যার আলমত রয়েছে বলা হয়। প্রতিবেদন প্রকাশের পর দিয়াজের মায়ের করা এজাহার হত্যা মামলা হিসেবে নিতে হাটহাজারী থানার ওসিকে নির্দেশ দেন আদালত।

বিডি প্রতিদিন/হিমেল

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর