ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত কুমিল্লার নাঙ্গলকোট উপজেলার শিক্ষার্থীদের সংগঠন ‘ঢাকা ইউনিভার্সিটি স্টুডেন্ট ইউনিয়ন অব নাঙ্গলকোট-ডিউসানে’র এক যুগপূর্তি উপলক্ষ্যে পুনর্মিলনী অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শুক্রবার বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি’র ক্রীড়াকক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, দেশের সর্বাধিক প্রচারিত সংবাদপত্র বাংলাদেশ প্রতিদিনের সম্পাদক নঈম নিজাম। প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য দেন কুমিল্লা-১০ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুল গফুর ভূঁইয়া।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুজীববিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক হুমায়রা আখতার, সুপ্রিমকোর্টের সিনিয়র আইনজীবী ড. জামিলুর আখতার, সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব মোসাম্মাৎ জোহরা খাতুন, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব ফরিদা ইয়াসমিন, অর্থমন্ত্রীর একান্ত সহকারী সচিব বাবু কল্যাণ মিত্র সিংহ রতন।
ডিউসানের সভাপতি জহিরুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করে সাধারণ সম্পাদক জোনায়েদ বাগদাদী।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ প্রতিদিন সম্পাদক নঈম নিজাম বলেন, ‘কুমিল্লা কাজী নজরুল, ওস্তাদ আলাউদ্দীন খাঁ, শচীন দেববর্মণের স্মৃতি বিজড়িত; যারা বিশ্বকে নতুন রূপ দিয়েছিলেন। লাকসাম, নাঙ্গলকোট থেকে অনেক আগে থেকে নারী জাগরণের শুরু। নারী জাগরণের প্রথম পথিকৃৎ কিন্তু আমাদের অঞ্চলের। আমরা নবাব ফয়জুন্নেসার জন্য গর্বিত। ১৮৬২ সালে তিনি কুমিল্লা শহরে ইংরেজি শিক্ষা প্রচলন করেছিলেন। তখনও বেগম রোকেয়ার জন্ম হয় নাই। বিট্রিশ ম্যাজিস্ট্রেট ডাগলাস তাকে বলেছিলেন, আমাকে ১০ হাজার টাকা ধার হিসেবে দেন। তিনি তখন জিজ্ঞেস করেছিলেন, এ টাকা কীসে ব্যয় হবে? ডাগলাস বললেন, শিক্ষা ও উন্নয়ন খাতে। নবাব ফয়জুন্নেসা একেবারে টাকা দিতে রাজি হলেন। ডাগলাস ফেরত দেওয়ার কথা বললে তিনি বললেন, নবাব ফয়জুন্নেসা যে টাকা একবার দান করে, তা আর ফেরত নেয় না। তিনি আমাদের অঞ্চলের বাসিন্দা। আমরা সেখান থেকে উঠে আসা মানুষ। এছাড়াও সূর্যসেন ও তার দল চট্টগ্রাম থেকে পালিয়ে যাচ্ছিলেন, তখন কিন্তু নাঙ্গলকোটে বিশ্রাম নিয়েছিলেন। এভাবেই ইতিহাসে নাঙ্গলকোট এসেছে।’
উপস্থিত শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘আপনারাই আগামীর বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দেবেন। আপনাদের সেই যোগ্যতা আছে। নাঙ্গলকোটকে যদি এগিয়ে নিতে চান, তাহলে দল-মত নির্বিশেষে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। নাঙ্গলকোটের ভবিষ্যত উন্নয়নের জন্যও এ বিষয়টি জরুরি। সেটা গড়ে না উঠলে আমরা থমকে যাবো।’
কুমিল্লা-১০ আসনের সাংসদ আব্দুল গফুর ভূঁইয়া বলেন, ‘আজকে এমন একটি অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকতে পেরে খুবই আনন্দিত বোধ করছি। এ ধরনের আয়োজনের মধ্য দিয়েই নিজেদের মধ্যে ঐক্য ও হৃদ্যতা বৃদ্ধি পায়।’
অনুষ্ঠানে ‘উন্মীলন’ নামে একটি স্মরণিকার মোড়ক উন্মোচন করা হয়। এছাড়াও নবীন শিক্ষার্থীদের বরণ করে নেওয়া হয়। অনুষ্ঠান শেষে সাংস্কৃতিক পরিবেশনা অনুষ্ঠিত হয়।
বিডি প্রতিদিন/নাজমুল