সারাদেশের মতো বন্ধ ছিল মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল উপজেলার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো। দীর্ঘ আঠোরো মাস পর আজ রবিবার থেকে খুলেছে উপজেলার সবকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। প্রথম দিনে বিদ্যালয়গুলোতে বইছে উৎসবের আমেজ। দীর্ঘ দিন পর সহপাঠিরা একসাথে হতে পেরে আনন্দে আত্মহারা হয়ে উঠেছে। দৌঁড়ে গিয়ে জড়িয়ে ধরছে একে অন্যের গলা। প্রতিটি বিদ্যালয়ে ছিল আনন্দ ঘন পরিবেশ।
সরজমিনে দেখা যায়, সকাল থেকেই প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও কলেজের শিক্ষার্থীরা তাদের নিজ নিজ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আসতে শুরু করে। তাদের সবার মুখে ছিল মাস্ক। শিক্ষার্থীদের সাথে আসা অভিভাবকারও মুখে মাস্ক পরিধান করে আসেন। তবে অনেক শিক্ষার্থীর পরনে স্কুল ড্রেস ছিল না। অভিভাবকরা জানান, গত দেড় বছরে অনেক শিক্ষার্থীর ড্রেস খাটো হয়ে গেছে।
এদিকে শিক্ষার্থীদের বরন করে নিতে ব্যাপক প্রস্তুতি ছিল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে। বিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে ছিল তাপমাত্র মাপর যন্ত্র, হ্যান্ড স্যানেটাইজার, মাস্ক। ফুল, বেলুন ও রঙ্গিণ কাগজ দিয়ে সাজানো হয়েছিল বিদ্যালয় ও শ্রেণী কক্ষ। মেঝেতে ছিল আলপনা। শিক্ষার্থীদের বরণ করা হয়েছে হাতে হাতে ফুল দিয়ে। প্রতি শ্রেণী কক্ষে পাঠদানে মানা হয়েছিল স্বাস্থ্যবিধি।
চন্দ্রনাথ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৫ম শ্রেণীর শিক্ষার্থী ইসরাত জাহান জানান, অনেক দিন পর স্কুলে আসলাম। বন্ধুদের সাথে দেখা হয়ে ভালো লাগছে। খুব আনন্দ হচ্ছে।
শ্রীমঙ্গল সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) জহির আলী জানান, ‘তারা প্রথম দিন শিক্ষার্থীদের হাতে একটি করে গোলাপ ফুল দিয়েছেন। সাথে ছিল একটি চকলেট। এছাড়া প্রত্যেক শিক্ষার্থীর তাপমাত্রা মেপে হাতে হ্যান্ড স্যানেটাইজার দেয়া হয়েছিল। যাদের মাস্ক ছিল না তাদের দেয়া হয়েছিল। স্বাস্থ্যবিধি মেনে পাঠদান করা হয়েছে।’
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা দীলিপ বর্ধন বলেন, আজ থেকে বিদ্যালয়গুলো খুলেছে। শিক্ষার্থীদের সতস্ফূর্ত উপস্থিতি ছিল। আনন্দঘন পরিবেশে ক্লাস শুরু হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা সরকারি নির্দেশনা পেয়ে গত এক সপ্তাহ ধরে এ উপজেলার স্কুলগুলো খোলার প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। সরকারের নির্দেশনা বাস্তবায়নে শিক্ষক, অভিভাবক ও ম্যানিজিং কমিটির সাথে মিটিং করেছি। প্রথম দিন প্রায় ৭০ শতাংশ শিক্ষার্থী বিদ্যালয়ে উপস্থিত হয়েছে। পর্যায়ক্রমে এই সংখ্যা বাড়বে। শিক্ষার্থীদের মধ্য স্বাস্থ্যবিধি মানার প্রবনতা উৎসাহের সহিত লক্ষ্য করে গেছে। এটা আমাদের ধরে রাখতে হবে।’
বিডি প্রতিদিন/হিমেল