ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যে সাম্প্রতিক ১২ দিনের ভয়াবহ সংঘাতের পর বর্তমানে দুই দেশের মধ্যে যুদ্ধবিরতি কার্যকর রয়েছে। যদিও শুরুতে এ যুদ্ধবিরতির স্থায়িত্ব নিয়ে অনিশ্চয়তা থাকলেও এখন পর্যন্ত উভয়পক্ষ আপাতত আক্রমণাত্মক অবস্থান থেকে সরে এসেছে। তবে এই স্বস্তির পরিস্থিতি কতদিন টিকবে, তা নিয়ে এখনো যথেষ্ট প্রশ্ন রয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্র-ইরান উচ্চপর্যায়ের বৈঠক আসছে
এ অবস্থায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষণা দিয়েছেন, আগামী সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যে একটি উচ্চপর্যায়ের আলোচনা অনুষ্ঠিত হবে। আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে থাকবে ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি এবং ভবিষ্যৎ পারমাণবিক নীতি।
ট্রাম্প দাবি করেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে ইরানে চালানো সর্বশেষ বিমান হামলায় তাদের পারমাণবিক অবকাঠামো ধ্বংস হয়ে গেছে এবং সেই কারণেই ইরান আলোচনায় বসতে বাধ্য হয়েছে।
গোয়েন্দা প্রতিবেদন নিয়ে দ্বিধা
যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ জানিয়েছে, তাদের কাছে ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি ধ্বংসের ‘বিশ্বাসযোগ্য তথ্যপ্রমাণ’ রয়েছে। সিআইএ পরিচালক জন র্যাটক্লিফ বলেন, “ইরানের একাধিক গুরুত্বপূর্ণ পারমাণবিক স্থাপনা গুঁড়িয়ে গেছে এবং সেগুলো পুনর্গঠন করতে বহু বছর সময় লাগবে।”
তবে মার্কিন প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা সংস্থা (ডিআইএ) থেকে ফাঁস হওয়া একটি প্রাথমিক মূল্যায়নে বলা হয়, এই হামলায় ইরানের কর্মসূচি মাত্র কয়েক সপ্তাহ বা মাসের জন্য বিলম্বিত হয়েছে। এই মূল্যায়নকে চ্যালেঞ্জ করেছে ইসরায়েল, যারা বলছে, ইরানের সক্ষমতা কয়েক বছর পিছিয়ে গেছে।
আইএইএ-কে নিষিদ্ধের পথে ইরান
এদিকে ইরানের পার্লামেন্ট একটি বিতর্কিত বিল পাস করেছে, যেখানে জাতিসংঘের পারমাণবিক পর্যবেক্ষণ সংস্থা আইএইএ-এর সঙ্গে সব ধরনের সহযোগিতা স্থগিতের কথা বলা হয়েছে। বিলটি এখন ‘গার্ডিয়ান কাউন্সিল’-এর অনুমোদনের অপেক্ষায়। আইন কার্যকর হলে, ভবিষ্যতে আইএইএ ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় কোনো পরিদর্শন চালাতে পারবে না—যতক্ষণ না দেশটির সর্বোচ্চ জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদ তা অনুমোদন করে।
পরিস্থিতি এখনো উত্তপ্ত
যদিও যুদ্ধবিরতি এখনও কার্যকর, পারমাণবিক কর্মসূচি ঘিরে উত্তেজনা প্রশমিত হয়নি। আগামী সপ্তাহের যুক্তরাষ্ট্র-ইরান বৈঠকেই নির্ধারিত হবে, বর্তমান যুদ্ধবিরতি কূটনৈতিক সমাধানে রূপ নেবে, নাকি সংঘাত আবারও মাথাচাড়া দিয়ে উঠবে।
সূত্র : এবিসি নিউজ
বিডি প্রতিদিন/আশিক