শিরোনাম
১৪ জুলাই, ২০১৯ ২০:৫৪

চট্টগ্রামে জলাবদ্ধতায় নাভিশ্বাস

রেজা মুজাম্মেল, চট্টগ্রাম:

চট্টগ্রামে জলাবদ্ধতায় নাভিশ্বাস

চট্টগ্রাম নগরের চকবাজার বগার বিল এলাকার ভুক্তভোগী জাফর আলমের খেদোক্তি, ‘ভোর থেকে দুপুর পর্যন্ত বাড়া থেকে কেবল পানিই সেচ করছি। দীর্ঘ সময় পানি সেচ করেও কোনো কূল-কিনারা করতে পারিনি। এরই মধ্যে বাসার প্রয়োজনীয় অনেক আসবাবপত্র নষ্ট হয়ে গেছে। গত ছয় বছর ধরেই বর্ষা মৌসুমে এমন কষ্ট ভোগ করে আসছি। এটি আমাদের জন্য বড় অভিশাপ।’

চট্টগ্রাম নগর এখন চরম দুর্ভোগ, কষ্ট এবং অন্তহীন ভোগান্তির শহর। টানা বর্ষণে নাভিশ্বাস ওঠেছে জনজীবনে। বিপর্যস্ত নাগরিক জীবন। ঘরে বাইরে অবর্ণনীয় দুর্ভোগের মুখে পড়েছে সবাই। বাসায় বাস করতে হচ্ছে কাঁদা এবং কাঁদা পানিতে। বাইরে সড়কগুলো ক্ষতবিক্ষত। সংকট থাকে যানবাহনের। পক্ষান্তরে, জলাবদ্ধতায় অনেক নালার ময়লা আবর্জনা সড়কে জমে স্তুপ হয়ে আছে। ময়লায় ভরাট হয়েছে নালা নর্দমা। ফলে ভোগান্তি অতিমাত্রা ধারণ করেছে।  

জানা যায়, গত ৪ জুলাই থেকে শুরু হওয়া অতিবর্ষণের কারণে নগরের অধিকাংশ নিন্মাঞ্চল প্লাবিত হয়। স্থবির হয়ে পড়ে জনজীবন। এর মাঝে গত শুক্রবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত বৃষ্টি না থাকলেও বিকাল থেকে ফের শুরু হয়। কিন্তু বৃষ্টি হলেই তলিয়ে যাচ্ছে নগরের অধিকাংশ ওয়ার্ড। ফলে চট্টগ্রাম নগরবাসীকে দিনাতিপাত করতে হচ্ছে জলাবদ্ধতাকে সঙ্গে নিয়েই।

এদিকে, জলাবদ্ধ নগর থেকে পানি নামার সঙ্গে সঙ্গে হা করে দেখা দিয়েছে বিভিন্ন সড়কের ক্ষতগুলো। অতিবর্ষণে সড়কগুলোতে তৈরি হয়েছে ছোট-বড় গর্ত। সঙ্গে যোগ হয়েছে সেবা সংস্থার অপরিকল্পিত খোঁড়াখুঁড়ি। ফলে সড়ক অতীতের চেয়ে বেশি মাত্রায় ক্ষতি হয়েছে। ছোট-বড় অসংখ্য গর্ত এখন বিপজ্জনকভাবে বলে জানা যায়।

চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী কর্নেল মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘টানা বর্ষণ এবং জোয়ারের পানিতে নগরের অনেক সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে কোথায় কোন সড়ক কেমন ক্ষতি হয়েছে তা নির্ণয় করতে কাজ চলছে। চূড়ান্ত তথ্য সংগ্রহের পর সড়ক সংস্কারের উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে।’

জানা যায়, বর্তমানে নগরে সিটি কর্পোরেশন, সিডিএ এবং ওয়াসা বিভিন্ন সড়কে খোঁড়াখুঁড়ি করছে। উন্নয়ন চলমান অবস্থায় সড়কে তৈরি হয়েছে নানা খানাখন্দ।

তাছাড়া অতিবর্ষণের কারণেও নগরের অনেক সড়কে তৈরি হয়েছে অসংখ্য গর্ত। পতেঙ্গা থানার সামনে থেকে কাটগড় পর্যন্ত চলমান এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণের কারণে প্রায় ৮ কিলোমিটার সড়কের বিভিন্ন অংশে বড় বড় গর্ত তৈরি হয়। ছোট বড় গর্ত তৈরি হয়ে চরম বেহাল অবস্থা পাঁচ কিলোমিটারের পোর্ট কানেক্টিং রোডের নয়াবাজার, সরাইপাড়া ও সাগরিকার বিভিন্ন পয়েন্টে। ভারী গাড়ি এসব গর্তে পড়ে প্রতিনিয়ত ঘটছে দুর্ঘটনা। এক্সেস রোড, নয়া বাজার, বড়পুল, ছোটপুল সংলগ্ন সড়ক চলাচল অনুপযোগী হয়ে ওঠেঠে। তাছাড়া নগরের চকবাজার কাচাবাজার মোড়, বহদ্দারহাট, বিবিরহাট রোড, ২নং গেইট থেকে মুরাদপুর, কেবি আমান আলী রোড, রাহাত্তারপুল সড়ক, নতুন ব্রিজ গোল চত্বর, শাহ আমানত সেতু সংযোগ সড়ক, আরাকান সড়ক, বাকলিয়া ডিসি রোড, নিউমার্কেট থেকে টাইগার পাস রোড, বহদ্দারহাট থেকে কাপ্তাই রাস্তার মাথা সড়কের অবস্থা চরম বেহাল।

বিডি প্রতিদিন/মজুমদার

সর্বশেষ খবর