চট্টগ্রামে করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে গণপরিবহনে যাত্রীদের বাধ্যতামূলক মাস্ক পরিধান, স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিতে নগরীর তিন প্রবেশপথে চেকপোস্ট বসানো, মাস্ক না থাকলে বিনামূল্যে বিতরণ করে ভবিষ্যতের জন্য সতর্ক করা, গণপরিবহনে জেলা প্রশাসন ও বিআরটিএর এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট দিয়ে সচেতনতামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করা, স্বাস্থ্যবিধি শতভাগ নিশ্চিতে সমুদ্রসৈকত, পার্ক, বিনোদনকেন্দ্র ও অন্যান্য দর্শনীয় স্থানে ভ্রাম্যমাণ অভিযান পরিচালনা, সচেতনতা বাড়াতে মাইকিং, নগরীর স্টেডিয়াম, সিআরবি, বাদামতলী মোড়সহ গুরুত্বপূর্ণ স্থানে বিএনসিসি, স্কাউট, রোভার স্কাউটস, গার্লস গাইড, রেড ক্রিসেন্ট ও এনজিও প্রতিনিধিদের সম্পৃক্ত করে মাস্ক ব্যবহার নিশ্চিতসহ গুচ্ছ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে।
সোমবার বিকেলে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত করোনাভাইরাস সংক্রমণজনিত উদ্ভুত পরিস্থিতিতে সার্বিক কার্যক্রম সমন্বয় ও করণীয় নির্ধারণ বিষয়ক জরুরি সভায় এসব সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোহাম্মদ মমিনুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রামের জেলা সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বি, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মহিউদ্দিন মাহমুদ সোহেল, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) এস এম জাকারিয়া, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোছা. সুমনী আক্তার, চমেক হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. মো. সাজ্জাদ হোসেন চৌধুরী, সমাজসেবা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মো. শহীদুল ইসলাম, জেলা তথ্য অফিসের উপ-পরিচালক মো. সাঈদ হাসান, জেলা শিক্ষা অফিসার এসএম জিয়াউল হায়দার হেনরি, সিভিল সার্জন কার্যালয়ের মেডিকেল অফিসার (রোগ নিয়ন্ত্রণ) ডা. মো. নুরুল হায়দার, সহকারী জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. কফিল উদ্দিন, সিটি কর্পোরেশনের জোনাল মেডিকেল অফিসার ডা. মো. হাসান মুরাদ চৌধুরী ও জেলা স্বাস্থ্য তত্ত¡াবধায়ক সুজন বড়ুয়া প্রমুখ।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মমিনুর রহমান বলেন, কোভিড ভ্যাকসিন কার্যক্রম সাফল্যের সঙ্গে শুরু হয়েছে। এখন অনেকে স্বাস্থ্যবিধি মানছে না। এ কারণে করোনাভাইরাসের সংক্রমণের হার আবারও বৃদ্ধি পেয়েছে। ভ্যাকসিন নেয়ার পরে মানুষের মাঝে অসচেতন হয়ে পড়েছে। তাই এখন থেকে জেলা ও নগরীর সকল কমিউনিটি সেন্টার, হোটেল রেস্টুরেন্টগুলোতে সামাজিক-রাজনৈতিক অনুষ্ঠানসহ অন্যান্য অনুষ্ঠানে ১০০ জনের বেশি অতিথির সমাগম নিষিদ্ধ করা হয়েছে। স্বাস্থ্যবিধি ও ৩ ফুট শারীরিক দুরত্ব বজায় রেখে অত্যন্ত সীমিত পরিসরে অনুষ্ঠান পরিচালনা করতে হবে। অন্যথায় প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে। সকল মসজিদে স্বাস্থ্যবিধি ও শারীরিক দুরত্ব মেনে নামাজ আদায়ের বিষয়টি আগামী শুক্রবার জুম্মার খুৎবার আগে প্রচার করতে ইসলামিক ফাউন্ডেশন ভূমিকা রাখবে।
সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বি বলেন, অসচেতনতার কারণে কোভিড পরিস্থিতির কিছুটা অবণতি হয়েছে। করোনা রোগীদের সুচিকিৎসায় আন্দরকিল্লা ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল, জেনারেল হাসপাতাল-২ হলি ক্রিসেন্ট হাসপাতাল, চমেক হাসপাতালের ২৫০টি শয্যা প্রস্তুত রয়েছে। তাছাড়া নির্দিষ্ট বেসরকারি ক্লিনিক-হাসপাতালগুলোতে ৬০-৭০টি আইসিইউ বেড আছে। মুমুর্ষ রোগীর জন্য হাইফ্লো ন্যাজাল ক্যানোলা অত্যন্ত জরুরি। চমেক হাসপাতালে ৮০টি, জেনারেল হাসপাতালে ৩০টি, বিআইটিআইডিতে ১০টি ও বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে ১০০টি হাইফ্লো ন্যাজাল ক্যানোলা রয়েছে। জরুরি প্রয়োজনে এগুলো ব্যবহার করা হবে।
বিডি প্রতিদিন/এ মজুমদার