চট্টগ্রামে মাস্ক পড়া নিশ্চিত করতে জেলা প্রশাসন সাঁড়াশি অভিযান শুরু করে। সকাল-বিকাল দুই শিফটে ছয়জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট অভিযানে সতর্ক, সচেতনতা বৃদ্ধি ও বিনামূল্যে মাস্ক বিতরণ করছেন। গত ২২ মার্চ করোনা প্রতিরোধ জেলা কমিটির জরুরি বৈঠকে স্বাস্থ্যবিধি মানা ও সংক্রমণ ঠেকাতে গুচ্ছ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। কিন্তু করোনা পরিস্থিতির অবস্থা এমন ‘কে শুনে কার কথা’। কোথাও নেই স্বাস্থ্যবিধি, সামাজিক দুরত্ব, অনেকেই পরছে না মাস্ক। ফলে প্রতিদিনই প্রতিযোগিতা হারে বাড়ছে করোনা। চলছে অভিযান, বাড়ছে সংক্রমণ। প্রতিরোধে সিদ্ধান্ত নেয়া হলেও নেই এর কোনো প্রভাব। গত বুধবার একদিনে আক্রান্ত হয় ২০৮ জন, মঙ্গলবার আক্রান্ত হয় ২৬৯ জন ও সোমবার আক্রান্ত হয় ২৭২ জন।
জানা যায়, করোনা সংক্রমণ নতুন করে বৃদ্ধির পর গত ১৫ মার্চ থেকে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটগণ সমুদ্রসৈকত, পার্ক, বিনোদনকেন্দ্র ও অন্যান্য দর্শনীয় স্থানে অভিযান শুরু করেন। অভিযানে জরিমানা, সতর্ক ও সচেতন করা হচ্ছে। তাছাড়া ১০০ জনের বেশি সমাগম না হওয়া, গণপরিবহনে যাত্রীদের বাধ্যতামূলক মাস্ক পরিধান, স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিতে নগরীর তিন প্রবেশপথে চেকপোস্ট বসানোসহ নানা উদ্যোগ নেয়া হয়। তবুও সাধারণ মানুষের মধ্যে করোনা নিয়ে কোনো ভীতি দেখা যাচ্ছে না। নগরের ছয়টি স্থানে অভিযান পরিচালনা করা হয়।
জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. উমর ফারুক বলেন, ‘স্বাস্থ্যবিধি মানাতে প্রতিদিন সাঁড়াশি অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। অভিযানে সতর্কতা ও সচেতন করা হচ্ছে। প্রয়োজনে জরিমানাও করা হচ্ছে। তবে স্বাস্থ্যবিধি মানাতে সরকার কঠোর অবস্থানে থাকার কথা ঘোষণা করেছে। তাই যেকোনো মূল্যে স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিতের চেষ্টা চলছে।’
চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বি বলেন, ‘স্বাস্থ্যবিধি না মানার ফল আমরা গত এক সপ্তাহ ধরে দেখে আসছি। সামনে আরও কী রকম চরম আকারের পরিস্থিতি তৈরি হয় তার কোনো ঠিক নেই। তাই আমাদের সর্বোচ্চ সতর্কতা ও সচেতন থাকতে হবে।’
সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, বর্তমানে চট্টগ্রামে করোনা রোগীদের চিকিৎসায় জেনারেল হাসপাতালে ২৫০ শয্যা, জেনারেল হাসপাতাল-২ হলি ক্রিসেন্ট হাসপাতাল, চমেক হাসপাতালের ২৫০টি শয্যা প্রস্তুত রয়েছে। তাছাড়া নির্দিষ্ট বেসরকারি ক্লিনিক-হাসপাতালগুলোতে ৬০-৭০টি আইসিইউ বেড আছে। মুমুর্ষ রোগীর চিকিৎসায় অতিজরুরি হাইফ্লো ন্যাজাল ক্যানোলা চমেক হাসপাতালে ৮০টি, জেনারেল হাসপাতালে ৩০টি, বিআইটিআইডিতে ১০টি ও বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে আছে ১০০টি। গতকাল বৃহস্পতিবার পর্যন্ত চট্টগামে মোট আক্রান্ত হয় ৩৮ হাজার ৫০০ জন। এর মধ্যে মহানগরে ৩০ হাজার ৫৩২ জন ও ১৫ উপজেলায় ৭ হাজার ৯৬৮ জন। ইতোমধ্যে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৩৮৪ জন। এর মধ্যে মহানগরে ২৮১ জন ও উপজেলায় ১০৩ জন।
বিডি প্রতিদিন/এ মজুমদার