প্রায় সাত হাজার মানুষের ইফতারি আয়োজনের এক কর্মযজ্ঞ। কেউ ব্যস্ত ছোলা পিয়াজু তৈরিতে। কেউ ব্যস্ত খেজুর, কলা, ডিম পরিষ্কার করে খাবার উপযোগী করার।
সকাল থেকে ইফতারের আগ পর্যন্ত চলে এ মহাযজ্ঞ। কেউ ফুসরত পান না দম ফেলার। সবাই ব্যস্ত বন্দিদের জন্য ইফতারি তৈরিতে। প্রথম রোজা থেকেই এমন দৃশ্য দেখা মিলছে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে।
চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার দেওয়ান মোহাম্মদ তারিকুল ইসলাম বলেন, ‘প্রতিদিন বন্দিদের সাড়ে ৩৮ টাকার ইফতারি সরবারহ করা হয়। ইফতারিতে প্রতিদিন ৯ পদের খাবার থাকে। এরই বাইরে বন্দিদের জন্য বরাদ্দকৃত দুপুরের খাবার রাতে এবং রাতের খাবার সেহেরিতে সরবারহ করা হয়।’
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘এবার খাদ্য সরবরাহকারী ঠিকাদার চিনি, তেল, ডিমসহ অন্যান্য জিনিসপত্র বাজার ধরের চেয়ে কম দামে সরবারহ করছেন। বন্দিদের জন্য বরাদ্দের মধ্যে বেশি খাবার পাওয়া যাচ্ছে। তাই বেশি পরিমাণ সরবারহও করা যাচ্ছে।’
জানা যায়, প্রতিদিন কারাগারের ২৮টি চুলায় রান্না হয় প্রায় সাত হাজার বন্দির ইফতারে। যার মধ্যে ছোলা, পিয়াজু, জিলাপী তৈরি হয় কারাগারের চুলায়। ডিম সিদ্ধও করা হয় কারাগারের চুলায়। বাকি পাঁচ পদ খাবার বাইরের বাজার থেকে সংগ্রহ করা হয়। কারাগারের চুলায় ইফতারি তৈরি করার পর ইফতারের আগে আগে তা বন্দিদের মাঝে সরবারহ করা হয়। বন্দিদের ইফতারির তালিকায় থাকা খাবারের মধ্যে রয়েছে ছোলা ৭০ গ্রাম, মুড়ি পরিমাণ মত, পিয়াজু ২টি, খেজুর ৩টি, জিলাপী ৭০ গ্রাম, চিড়া, কলা, ডিম এবং চিনি।
চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারগারে রোজাদার বন্দিদের কেউ দণ্ডপ্রাপ্ত। কেউ আবার মামলা বিচারাধীন অবস্থায় বন্দি রয়েছেন কারাগারে। তাদের মধ্যে রবিবার জামিনে মুক্তি পাওয়া কয়েকজনের সাথে কথা হয় কারা ফটকে। তারা জানান-নানা কষ্ট বুকে নিয়েই কারাগারে বন্দি জীবন কেটেছে তাদের। সবাই চায় নিজের পরিবার পরিজন নিয়ে ইফতার করতে। কিন্তু বন্দি থাকার কারণে তা সম্ভব ছিল না। তাই সেলে থাকা অন্যান্য বন্দিদের নিজের আপনজন মনে করেই এক সাথে ইফতার করে বেশির ভাগ বন্দিরা। সেলে থাকা বন্দিদের ৮ থেকে ১০ জন মিলে কারা কর্তৃপক্ষ থেকে সরবারহ করা ইফতার এক সাথে জড়ো করে। পরে তাই সবাই এক সাথে ইফতার করে।
বিডি-প্রতিদিন/বাজিত হোসেন