চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের দেওয়া লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে পারেনি। তবে আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় রাজস্ব আয় বেড়েছে।
কাস্টম হাউস সূত্র জানায়, গত জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪১ হাজার ৫২৪ কোটি ৮৬ লাখ টাকা। এর বিপরীতে আদায় হয়েছে ৩৫ হাজার ৯০৩ কোটি ৪১ লাখ টাকা। এক্ষেত্রে আদায়ে ঘাটতি ৫ হাজার ৬২১ কোটি ৪৫ লাখ টাকা।
তবে লক্ষ্যমাত্রা পূরণ না হলেও আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে রাজস্ব আয়ে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৭ দশমিক ১১ শতাংশ। ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে আদায় হয়েছিল ৩৩ হাজার ৫২১ কোটি ৩১ লাখ টাকা।
রাজস্ব আহরণের দিকে থেকে দেশের সবচেয়ে বড় কাস্টম স্টেশন চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস। চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে দেশের সমুদ্রকেন্দ্রিক আমদানি-রপ্তানির ৯২ শতাংশ হয়ে থাকে। এসব পণ্যের শুল্ক আদায় করে এই কাস্টম হাউস।
কাস্টম-সংশ্লিষ্টরা জানান, ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতায় আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য কিছুটা ব্যাহত হয়। এ ছাড়া দেশব্যাপী সপ্তাহখানেক ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছিন্ন থাকা, বন্যা, ডলার ও এলসি সংক্রান্ত জটিলতা, দুর্বল ব্যাংকগুলোর নেতিবাচক প্রভাবে লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়নি। তবে চোরাচালান রোধসহ নানা উদ্যোগের ফলে আগের অর্থ বছরের একই সময়ের তুলনায় বেশি রাজস্ব আদায় হয়েছে।
চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের ডেপুটি কমিশনার মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম বলেন, গত ডিসেম্বরে রাজস্ব আদায়ে প্রায় ২৮ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে। এই ধারা বজায় থাকলে পুরো অর্থবছর শেষে আশা করি আমরা লক্ষ্যমাত্রার কাছাকাছি যেতে পারব।
ছোট-খাট ত্রুটির কারণে ফাইল আটকে না রাখলে রাজস্ব আয় আরও বাড়ানো সম্ভব বলে মনে করেন আমদানি-রপ্তানি সংশ্লিষ্টরা।
চট্টগ্রাম কাস্টমস এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক কাজী মাহমুদ ইমাম বিলু বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, সামাজিক ও অর্থনৈতিক কারণে কিছু পণ্যের আমদানি কম হয়েছে। অনেক রকম চাপের মুখেও গত বছরের শেষ দিকে এসে দেখছি রাজস্ব আদায় বেড়েছে। এটা ইতিবাচক। প্রায়ই কাস্টম হাউসে কিছু প্রশাসনিক জটিলতার কারণে আমদানি-রপ্তানিকারকদের দীর্ঘসূত্রতায় পড়তে হয়। আমরা সংস্কার কমিশনের কাছে এসব সমস্যার কথা তুলে ধরেছি। এগুলোর সমাধান হয়ে গেলে রাজস্ব আয় আরো বাড়বে।
কাস্টম হাউস সূত্রে জানা গেছে, ২০২৩ সালের জুলাই মাসে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৫ হাজার ১৪৮ কোটি টাকা, আদায় হয় ৬ হাজার ৩১১ কোটি ৮৪ লাখ টাকা। আগস্ট মাসে লক্ষ্যমাত্রা ৬ হাজার ৪৭৯ কোটি টাকা, আদায় ৬ হাজার ৪২ কোটি ১১ লাখ টাকা। সেপ্টেম্বরে লক্ষ্যমাত্রা ৭ হাজার ৫৭৮ কোটি টাকা হালেও আদায় হয় ৬ হাজার ৬ কোটি ৫০ লাখ টাকা, অক্টোবরে লক্ষ্যমাত্রা ৭ হাজার ৪৩৫ কোটি টাকার বিপরীতে আদায় ৬ হাজার ৬১ কোটি ৮৪ লাখ টাকা। নভেম্বরে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৭ হাজার ৪৫৭ কোটি টাকা, আদায় ৫ হাজার ২৫৩ কোটি ৫৫ লাখ টাকা। ডিসেম্বরে ৭ হাজার ৪২৮ কোটি লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে আদায় হয় ৬ হাজার ৫৩৬ কোটি ৬১ লাখ টাকা।
বিডি প্রতিদিন/এমআই