ঘড়ি মেরামতকে কেন্দ্র করে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) শিক্ষার্থীদের উপর মারধর ও বিশ্ববিদ্যালয় অগ্রণী ব্যাংক শাখার ভবনে ভাঙচুর করেছে পুরান ঢাকার ঘড়ি ব্যবসায়ীরা। এ ঘটনায় ২০ জন শিক্ষার্থী আহত হয়। রবিবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের পেছনের ফটক পাটুয়াটুলিতে এ ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, পুরান ঢাকার পাটুয়াটুলির এস আর ভবনের সায়েম টাইমস সেন্টার ঘড়ি দোকানে জবির দুই শিক্ষার্থী অর্ণব ও রনি ঘড়ির ফিতা ফুটা করতে গেলে দোকানদারের সাথে তাদের কথা বাকবিতণ্ডা হয়। এক পর্যায়ে ঘড়ির দোকানের মালিক কর্মচারীরা তাদের আটকে রেখে দোকানের সাটার বন্ধ করে বেধড়ক মারপিট করে। এ ঘটনার সংবাদ শুনতে পেয়ে অর্ণব ও রনির বিশ্ববিদ্যালয়ের বন্ধুরা তাদের উদ্ধার করতে গেলে ঘড়ি ব্যবসায়ী মালিক ও কর্মচারীরা একত্রিত হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের উপর হামলা করে। এসময় ব্যবসায়ীরা পাটুয়াটুলীর ঘড়ি মার্কেট সংলগ্ন বিশ্ববিদ্যালয় অগ্রণী ব্যাংকে টাকা জমা দেয়ার লাইনে দাড়িয়ে থাকা সাধারণ শিক্ষার্থীদের উপর হামলা এবং ব্যাংকের ভবনে ইট পাটকেল ছোঁড়ে। পরবর্তীতে ঘটনাস্থলে কোতয়ালী থানা পুলিশ, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি শান্ত হয়।
আহত শিক্ষার্থীরা হলেন বিশ্ববিদ্যালয় হিসাববিজ্ঞানবিভাগের নবম ব্যাচের শিক্ষার্থী রাসেল, অর্ণব, রনি, শাকিল, সজীব, নাজিম, সাকিব, হাবিবুর, ইমরানসহ ২০ জন। এদের মধ্যে গুরুতর আহত রাসেল, অর্ণব, রনি, শাকিলকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ও বাকিদের বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেল সেন্টারে প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদান করা হয়।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি এফ এম শরীফুল ইসলাম বলেন, পুরান ঢাকার ঘড়ি ব্যবসায়ীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের উপর এর আগেও অনেকবার হামলা করেছে। আগামীকাল ঘড়ি ব্যবসায়ী সমিতির সদস্যরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও আমাদের সাথে আলোচনায় বসতে চেয়েছে। সেখানে আমরা আহত শিক্ষার্থীদের চিকিৎসা ব্যয়, ক্ষতিপূরণ, পুনরায় যেন ঘটনার পুনরাবৃত্তি না ঘটে এমন স্বীকারোক্তি এবং আমাদের দাবি দাওয়া জানাব। আর তারা যদি আমাদের দাবি না পূরণ করে তবে আমরা আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. নূর মোহাম্মদ বলেন, আমাদের না জানিয়ে ঘড়ি ব্যবসায়ীরা শিক্ষার্থীদের উপর হামলা চালিয়ে অন্যায় করেছে। আগামীকাল তারা প্রশাসনের সাথে আলোচনায় বসতে চেয়েছে, সেখানে ঘটনার সমাধান না হলে আমরা তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
বাংলাদেশ ঘড়ি ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মো. আবুল বাসার শিক্ষার্থীদের এবং ব্যাংকে হামলার ঘটনা অস্বীকার করে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীরা ঘড়ি দোকান মালিক কর্মচারীদের উপর হামলা করলে ব্যবসায়ী, মালিক, কর্মচারীরা তাদের ধাওয়া করে।
বিডি প্রতিদিন/২০ নভেম্বর ২০১৬/মাহবুব