রংপুর নগরীর পথ-ঘাটগুলো এখন বেওয়ারিশ কুকুরের দখলে। কুকুরের উপদ্রপে জনজীবন অতিষ্ঠ হলেও এ নিয়ে কারো মাথা ব্যথা নেই। স্বাস্থ্য বিভাগ বলছে বিষয়টি সিটি করপোরেশনের দেখার কথা। সিটি করপোরেশন বলছে কুকুর নিধনের বিধান নেই। কুকুরের জন্ম নিরোধ কার্যক্রমের একটি পরিকল্পনা হাতে নেয়া হয়েছে। এটি বাস্তবায়ন হলে কুকুরের বংশ বিস্তার কমে গেলে মানুষের ভোগান্তি কিছুটা কমবে।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, নগরীর কাচারিবাজার, সিটি করপোরেশনের সামনে, কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল মোড়, পিটিসি মোড়, পর্যটন, মেডিকেল মোড়, সিও বাজার, ধাপ পুলিশ ফাঁড়ি, ধাপ লালকুঠি, সার্কিট হাউস, কামালকাছনা, মাহিগঞ্জ, মর্ডান মোড়, বুড়িরহাট, শিরিন পার্ক, বাংলাদেশ ব্যাংক মোড়, বেতপট্টি, পায়রা চত্বর, জাহাজ কোম্পানির মোড়, ফায়ার সার্ভিস, শালবন, মিস্ত্রিপাড়া, সিগারেট কোম্পানি মোড়, শাপলা চত্বর, চামড়াপট্টিসহ বিভিন্ন এলাকায় প্রতিদিন শত শত বেওয়ারিশ কুকুর ঘুরে বেড়াচ্ছে। প্রতিদিন কোথাও কোথাও কুকুরের কামড়ে মানুষ আহত হচ্ছে।
সিটি করপোরেশনের সূত্র অনুযায়ী প্রতিদিন গড়ে সিটি করপোরেশনের ১০ থেকে ১২ জন কুকুরের কামড়ে আক্রান্ত হয়ে জলাতঙ্কের ভ্যাকসিন নিচ্ছেন। কুকুর নিধনের আইন না থাকায় সিটি করপোরেশন, স্বাস্থ্য বিভাগ কেউ কোন উদ্যোগ নিতে পারছেনা। ফলে দিন দিন নগরীতে বেওয়ারিশ কুকুরের সংখ্যা বাড়ছে। নগরবাসীর অভিযোগ বেওয়ারিশ কুকুরের উৎপাতে নগরের বাসিন্দারা অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে। দিনের বেলা কুকুরকে এড়িয়ে চলা গেলেও রাতে কোন পথচারিকে একা পেলে তারা কুকুরের দ্বারা আক্রান্ত হচ্ছেন।
কামাল কাছনা এলাকার মকসুদ হোসেন বলেন, গত এক মাসে তার এলাকায় ৮ থেকে ১০ জন কুকুরের আক্রমণের শিকার হয়েছেন। কুকুরের কারণে অনেকে রাতে বাড়ি থেকে বের হতে ভয় পায়। অনেক স্থানে নারী শিশুরা কুকুরের ভয়ে বাড়ি থেকে বের হওয়া বন্ধ করে দিয়েছেন।
রংপুর সিভিল সার্জন ডা. হিরন্ব কুমার বলেন, কুকুর নিধনের আইন নেই। বিষয়টি সিটি করপোরেশনের দেখার দায়িত্ব। তারা কুকুরের বংশ বিস্তার রোধে কাজ করলে কুকুরের অত্যাচার অনেকটা কমে যাবে।
রংপুর সিটি করপোরেশনের স্বাস্থ্য বিভাগের প্রধান আব্দুল কাইয়ুম বলেন, কুকুর নিধনের বিধান না থাকায় তারা অভিযান চালাতে পারছেন না। তবে কুকুরের বংশ বিস্তার রোধে জন্ম নিরোধ ইঞ্জেকশন দেয়ার একটি পরিকল্পনা হাতে নেয়া হয়েছে। পরিকল্পনাটি বাস্তবায়ন হলে বেওয়ারিশ কুকুরের হাত থেকে নগরবাসী রক্ষা পাবে। তিনি আরো বলেন, কুকুরের উপদ্রব এত বৃদ্ধি পেয়েছে প্রতিদিন সিটি করপোরেশনে ১০ থেকে ১২ জন কুকুরের দ্বারা আক্রান্ত রোগী ভ্যাকসিন নিতে আসছেন।
বিডি-প্রতিদিন/সালাহ উদ্দীন