বৃহস্পতিবার, ২২ আগস্ট, ২০১৯ ০০:০০ টা

রুয়েট ছাত্রীকে যৌন হয়রানির ঘটনায় মামলা

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী

রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (রুয়েট) এক ছাত্রীকে চলন্ত অটোরিকশার মধ্যেই যৌন হয়রানি করে ধাক্কা দিয়ে রাস্তায় ফেলে দেওয়ার ঘটনায় মামলা হয়েছে। নগরীর বোয়ালিয়া মডেল থানায় ভুক্তভোগী ছাত্রী বাদী হয়ে মামলাটি করেন। এতে অজ্ঞাতনামা পাঁচজনকে আসামি করেছেন তিনি। গতকাল দুপুরে রাজশাহী নগরীর বোয়ালিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নিবারণ চন্দ্র বর্মণ এ তথ্য নিশ্চিত করেন। ওসি নিবারণ চন্দ্র বর্মণ বলেন, ‘মঙ্গলবার রাতে ভুক্তভোগী ছাত্রী থানায় এজাহার দাখিল করেন। পরে সেটি মামলা হিসেবে গ্রহণ করা হয়। মামলায় অজ্ঞাতনামা পাঁচজনকে আসামি করা হয়েছে। তাদের মধ্যে একজন অটোরিকশাচালক এবং অন্যরা তার (চালকের) পরিচিত কেউ।’

তিনি বলেন, ‘যে সড়কে ঘটনাটি ঘটেছে, ইতিমধ্যে সেই সড়কের পাশে থাকা ক্লোজ সার্কিট (সিসি) ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়েছে। আমরা আসামিদের শনাক্ত করার চেষ্টা করছি। জড়িতদের চিহ্নিত করে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’ সোমবার বিকালে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস থেকে ওই ছাত্রী বাসায় ফেরার সময় রাজশাহীর নগর ভবন এলাকায় ঘটনাটি ঘটে। ভুক্তভোগী রুয়েটের ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং (ইইই) বিভাগের শিক্ষার্থী। ঘটনার পর ওই ছাত্রী নিজেই তার ফেসবুকে ঘটনাটি তুলে ধরেন।

ফেসবুক স্ট্যাটাসে ঘটনার সূত্রপাত নিয়ে তিনি লেখেন, ‘‘আমার বাসা উপশহর। বাসা দূর বলে আমি সাধারণত রুয়েট থেকে রেইলগেট পর্যন্ত অটোতে করে আসি। আজকেও প্রতিদিনের মতো অটো নিলাম, সঙ্গে ছিল দুইজন অপরিচিত রুয়েটিয়ান ভাইয়া আর একজন ভদ্রলোক। রুয়েটিয়ান ভাই দুইজন চিশতিয়ার সামনে নেমে গেলেন। ভদ্রা পার হয়ে কিছু দূর যাওয়ার পর হঠাৎ অটোওয়ালা অটো থামায় দিলো, সামনে থাকা ভদ্রলোককে বলল, ‘আপনি নেমে যান, আমি নিজস্ব লোক তুলবো!’ আমি কিছু বুঝে ওঠার আগেই ওই ভদ্রলোককে জোরপূর্বক নামিয়ে চারজন গু া উঠলে অটো চালানো শুরু হয়ে গেল! ভদ্রা থেকে রেলস্টেশন পর্যন্ত রাস্তা মোটামুটি নির্জন, ইচ্ছামতো সেই চারজন আমাকে স্পর্শ করা শুরু করল। হাজারবার অটো থামানোর জন্য চিৎকার করার পরও অটোওয়ালা পশুর মতো হাসতে থাকল...।’’

তাকে চলন্ত অটোরিকশা থেকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেওয়া হয়েছে জানিয়ে ওই ছাত্রী লেখেন, ‘নগর ভবনের সামনে পুলিশ দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে ভয় পেয়ে তারা অটো থেকে ধাক্কা মেরে আমাকে ফেলে দিয়ে দ্রুত চলে গেল!  যতক্ষণে নিজের পায়ে দাঁড়াতে পেরেছি ততক্ষণে অটো বহুদূর...।’

তাকে যৌন হয়রানির কোনো বিচার হবে না জানিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি লেখেন, ‘কাহিনিটা শুধু শেয়ার করলাম। এইটা বাংলাদেশ, কোনো বিচারের আশা আমি করছি না। অনেকের মনে প্রশ্ন থাকতে পারে, আমার পোশাক কী ছিল। সাধারণ বাঙালি নারীর মতো সালোয়ার-কামিজ।’

ওই ছাত্রী তার ফেসবুকে ঘটনাটি তুলে ধরার পর তা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। তার পোস্টটি অসংখ্যবার লাইক ও শেয়ার হয়েছে।

নগর পুলিশের মুখপাত্র গোলাম রুহুল কুদ্দুস জানান, ওই ছাত্রী পুলিশের কাছে আগে কোনো অভিযোগ করেননি। ফেসবুকে দেখার পর পুলিশ স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে ওই ছাত্রীকে ডেকে মামলাটি নিয়েছে। কঠোরভাবে মামলার তদন্তও করছে পুলিশ।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর