মঙ্গলবার, ১৭ মে, ২০২২ ০০:০০ টা

সামাজিক অস্থিরতা বাড়ছে খুলনায়

♦ ঘরে ঢুকে এক বোনকে ধর্ষণ অপর বোনকে ধর্ষণ চেষ্টা ♦ পুলিশের বিরুদ্ধে ছাত্রীকে ধর্ষণের মামলা

নিজস্ব প্রতিবেদক, খুলনা

সামাজিক অস্থিরতা বাড়ছে খুলনায়

খুলনায় আবারও সামাজিক অস্থিরতা বেড়েছে। গত পাঁচ দিনে নারীসংক্রান্ত বিরোধে ব্যবসায়ী নেতা খুন, পিবিআই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে কলেজছাত্রীকে ধর্ষণের ঘটনায় মামলা ও বটিয়াঘাটায় কিশোরীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ ও তার বোনকে ধর্ষণচেষ্টার ঘটনা ঘটেছে।

একই সময়ে পাইকগাছায় মেয়েকে উত্ত্যক্তের প্রতিবাদ করায় বাবাকে কুপিয়ে জখম ও কয়রায় স্ত্রীকে হত্যায় স্বামীর বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। এ ছাড়া মায়ের ওপর অভিমান করে স্কুলছাত্রীর আত্মহত্যা ও বাসের চালক-হেলপারদের সঙ্গে বাগবিতন্ডায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধের ঘটনা ঘটেছে। জানা যায়, নগরীর ছোট মির্জাপুরে একটি অফিস কক্ষে নিয়ে কলেজছাত্রীকে ধর্ষণের ঘটনায় পিবিআই পরিদর্শক মঞ্জুরুল হাসান মাসুদের বিরুদ্ধে রবিবার রাতে খুলনা থানায় মামলা হয়েছে। খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (দক্ষিণ) সোনালী সেন বলেন, ফেসবুকে ওই তরুণীর ছবি অন্য কেউ শেয়ার করায় তার প্রতিকার নিয়ে কথা বলতে মঞ্জুরুল হাসানের কাছে গিয়েছিলেন ভুক্তভোগী। সমস্যা সমাধানের কথা বলে মোটরসাইকেলে তাকে ওই অফিসে নিয়ে ধর্ষণ করা হয়। পরে মেয়েটি ৯৯৯ নম্বরে ফোন করে খবরটি জানানোর পর পুলিশের পক্ষ থেকে পদক্ষেপ নেওয়া হয়। এর আগে ১২ মে রাতে ভাড়াটে খুনিরা গুলি করে হত্যা করে ফুলতলার বণিক কল্যাণ সোসাইটির ক্রীড়া সম্পাদক মো. রকিবুল ইসলামকে। প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, রকিবুলের সদ্য বিয়ে করা স্ত্রী পিয়ারী খাতুন ওরফে বর্ষার (২৬) পূর্বে নওয়াপাড়ায় আরেকটি বিয়ে ছিল। সেখান থেকে পালিয়ে তিনি গোপনে রকিবুলকে বিয়ে করেন। ঘটনার প্রতিশোধ নিতে এ হত্যা হতে পারে বলে ধারণা করছেন নিহতের ভগ্নিপতি খায়রুল ইসলাম। এ ছাড়া ১৪ মে বিকালে পাইকগাছায় স্কুলপড়ুয়া মেয়েকে উত্ত্যক্ত করার প্রতিবাদ করায় মোতাহার রহমান টুকুকে মারপিট করে আহত, একই দিন স্কুলের টিফিনে মাংস না দেওয়ায় মরিয়াম (৯) নামে এক স্কুলছাত্রীর আত্মহত্যা ও ১৫ মে রাতে বটিয়াঘাটায় এক কিশোরীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ ও বাড়িতে বেড়াতে আসা তার খালাতো বোনকে ধর্ষণের চেষ্টা করা হয়।

বাংলাদেশ মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্থা, খুলনা সমন্বয়কারী অ্যাডভোকেট মোমিনুল ইসলাম জানান, মাদক বেচাকেনা, রাজনৈতিক ও পেশাদার সন্ত্রাসীদের ছত্রছায়ায় প্রভাব বিস্তার করছে বখাটেরা। অপরাধ করলেও কোনো শাস্তি হবে না এ ধরনের বিশ্বাস থেকে আরও বেপরোয়া হয়ে উঠছে বখাটেরা। ফলে একজোট হয়ে সন্ত্রাসীরা ধর্ষণ, হত্যাসহ নানা ধরনের অপরাধে যুক্ত হচ্ছে। খুলনা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ এর পিপি জেসমিন পারভীন জলি বলেন, নিম্নবিত্ত বঞ্চিত পরিবারের বখাটেরা এ ধরনের ঘটনায় বেশি যুক্ত হচ্ছে। তবে মামলা শুরু হওয়ার পর নানাভাবে প্রভাবিত করে আসামিরা ভিকটিমের সঙ্গে সমঝোতা করে নেয়। ফলে শেষ পর্যন্ত তাদের শাস্তি দেওয়া যায় না।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর