নিত্যনতুন দাবি নিয়ে প্রতিদিনই রাস্তায় নামছেন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। বিক্ষোভ, মানববন্ধন, সংবাদ সম্মেলন আর স্লোগানের মধ্য দিয়ে তারা তুলে ধরছেন নানা বৈষম্যের কথা। প্রকাশ করছেন ক্ষোভ। গতকালও রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে দাবি আদায়ে রাস্তায় নামতে দেখা গেছে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষকে। বৈষম্য বিলোপ আর সংস্কারের লক্ষ্যে কর্মরত অন্তর্বর্তী সরকার তাদের দাবি পূরণ করবেন এমন প্রত্যাশা তাদের।
রিকশাওয়ালাদের বিক্ষোভ : এক দফা দাবিতে আন্দোলনে নেমেছেন রিকশাচালকেরা। ঢাকার রাস্তায় অবৈধ অটোরিকশা বন্ধ চান তারা। দাবি আদায়ে গতকাল জাতীয় প্রেস ক্লাব ও হাই কোর্টের মাজার গেটের সামনে অবস্থান নেন রিকশাচালকেরা।
ব্যাংকারদের চাকরিতে পুনর্বহালের দাবি : মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছেন করোনা মহামারির সময় নানা অজুহাতে পদত্যাগে বাধ্য করা বা ছাঁটাইয়ের শিকার হওয়া ব্যাংক কর্মকর্তারা। চাকরিতে পুনর্বহালের দাবিতে গতকাল বাংলাদেশ ব্যাংকের সামনে মানববন্ধন করেন তারা।
সচিবালয় কর্মকর্তা কর্মচারীদের ৯ দফা : সব মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা নয় দফা দাবি জানিয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়সহ বিভিন্ন দপ্তরে আবেদন জানিয়েছেন। গতকাল নয় দফা দাবি জানান তারা। দাবিগুলো বাস্তবায়নের লক্ষ্যে প্রতিটি মন্ত্রণালয় ও বিভাগ থেকে সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকসহ তিনজন করে প্রতিনিধির সমন্বয়ে সোচ্চার আন্দোলন অব্যাহত থাকবে বলে জানানো হয়।
এর আগে, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সচিবালয় লাইব্রেরিতে সব মন্ত্রণালয়/বিভাগের কল্যাণ সমিতির নির্বাচিত প্রতিনিধি এবং কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সমবেত হয়ে তাদের পদনাম পরিবর্তন, পেশাগত ও বেতনবৈষম্য দূরীকরণ, বেতন কমিশন গঠনসহ দীর্ঘদিনের ক্ষোভ ও হতাশা নিরসনের জন্য বর্তমান সরকারের প্রতি দাবি জানান।
এতে বক্তব্য রাখেন ৩৫টি মন্ত্রণালয়/বিভাগের প্রতিনিধিরা। তাদের উত্থাপিত নয় দফা দাবি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে সব মন্ত্রণালয়/বিভাগের নির্বাচিত প্রতিনিধিরা জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব, অতিরিক্ত সচিব (বিধি) ও অতিরিক্ত সচিবের (সওব্য) দপ্তরে দলবেঁধে সাক্ষাৎ করেন। সভা সঞ্চালনা করেন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. নজরুল ইসলাম।
আলোচনাকালে ক্যাডার বহির্ভূতদের জন্য বিভিন্ন স্তরে এক তৃতীয়াংশ পদ অবিলম্বে সংরক্ষণ, বিদ্যমান ব্যাপক বৈষম্য দূরীকরণে বিভিন্ন গ্রেডের পদবি পরিবর্তন, ২০১৫ সালের বেতন কমিশনের সুপারিশে কতিপয় মামলা-মোকদ্দমার অজুহাতে বাদ দেওয়া টাইম স্কেল ও সিলেকশন গ্রেড পুনর্বহাল, বেতন কাঠামোতে স্কেল/গ্রেডের সংখ্যা হ্রাস করে ২০ থেকে ১৬টি গ্রেড করা, শতভাগ পেনশন পুনর্বহাল, গ্র্যাচুইটির হার ১:২৩০ এর স্থলে ১:৫০০ নির্ধারণ করা, সব ব্লক পদকে বিলুপ্ত করে সমপদনাম, মর্যাদা ও অনুরূপ স্কেলে পদোন্নতির সুযোগ সৃষ্টি, নবম জাতীয় পে-কমিশন অবিলম্বে গঠন ইত্যাদি বিষয়ে কর্মপরিকল্পনা ও কর্মপদ্ধতি নিয়ে তারা আলোচনা করেন।