২৬ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমেছে সার্বিক মূল্যস্ফীতি। যদিও এপ্রিল-২০২৫ শেষে তা ৯.১৭ শতাংশ রয়েছে। শহর ও গ্রামাঞ্চলে খাদ্যের সরবরাহ বাড়া এবং দাম কমার কারণে খাদ্য ও খাদ্যবহির্ভূত পণ্যে নিম্নমুখিতা দেখা দিয়েছে মূল্যস্ফীতিতে। দীর্ঘদিন পর তাই এবার শহর ও গ্রামে প্রায় একই চিত্র মিলেছে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) তথ্যমতে, সদ্য শেষ হওয়া এপ্রিল মাসে শহর ও গ্রামীণ পর্যায়ে খাদ্য ও খাদ্যবহির্ভূত উভয় খাতেই ‘খরচ কমার’ তথ্য দিয়েছে সরকার। এজন্য এপ্রিল মাসে সার্বিক মূল্যস্ফীতির হার আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় কমে ৯ দশমিক ১৭ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। গত বছর এপ্রিলে সার্বিক মূল্যস্ফীতির চাপ ছিল ৯ দশমিক ৭৪ শতাংশ।
আর এ বছরের মার্চে ছিল ৯ দশমিক ৩৫ শতাংশ। যা গত ২৬ মাসের সর্বনিম্ন। মূল্যস্ফীতির হার এর চেয়ে কম ছিল সবশেষ ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে, ৮ দশমিক ৮৭ শতাংশ। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতেও সার্বিক মূল্যস্ফীতি অনেকটা কমার তথ্য দিয়েছিল সরকার, তবে তখন কেবল খাদ্য খাতেই কমেছিল মূল্যস্ফীতি। গত অর্থবছরের শেষ মাস তথা জুনের পর এবারই গ্রামীণ ও শহর পর্যায়ে খাদ্য ও খাদ্যবহির্ভূত খাতে মূল্যস্ফীতি একই সঙ্গে কমার তথ্য এলো।
বিবিএসের প্রতিবেদন বিশ্লেষণে দেখা যায়, সার্বিক মূল্যস্ফীতি মাসের ব্যবধানে কমে যাওয়ার কারণ খাদ্য ও খাদ্যবহির্ভূত পণ্যে নিম্নমুখী মূল্যস্ফীতি। শহর ও গ্রামে একই চিত্র মিলেছে। মার্চে খাদ্যমূল্যস্ফীতি ৮ দশমিক ৯৩ শতাংশে ছিল তা, এপ্রিলে আরও কমে ৮ দশমিক ৬৩ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। খাদ্যবহির্ভূত খাতে এপ্রিলে মূল্যস্ফীতি কমে দাঁড়িয়েছে ৯ দশমিক ৬১ শতাংশ যা মার্চে ছিল ৯ দশমিক ৭০ শতাংশ। এপ্রিলে শহরের খাদ্য খাতে মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৯ দশমিক ১৩ শতাংশ; যা মার্চে ৯ দশমিক ১৮ শতাংশ ছিল। অন্যদিকে গ্রামে খাদ্যমূল্যস্ফীতি এপ্রিলে ছিল ৮ দশমিক ৪০ শতাংশ, যা মার্চে ছিল ৮ দশমিক ৮১ শতাংশ। আর গ্রামে খাদ্যবহির্ভূত খাতে মূল্যস্ফীতি মার্চের ৯ দশমিক ৯৭ শতাংশ থেকে কমে এপ্রিলে ৯ দশমিক ৮৬ শতাংশ হয়েছে।
শহরে খাদ্যবহির্ভূত খাতে মূল্যস্ফীতি মার্চের ৯ দশমিক ৯৫ শতাংশ থেকে কমে এপ্রিলে দাঁড়িয়েছে ৯ দশমিক ৮৮ শতাংশে। গত ৫ অগাস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগের সরকার পতনের পর দেশের হাল ধরে অন্তর্বর্তী সরকার। প্রধান উপদেষ্টার দায়িত্ব নেওয়ার পরপরই মুহাম্মদ ইউনূস মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে পদক্ষেপ নেওয়ার কথা বলেন।
মুদ্রা সরবরাহে লাগাম দিতে বারবার সুদের হার বাড়ানো হয়। এতে অর্থের চাহিদা কমায় সরকারের পরিসংখ্যানেও গত চার মাস মূল্যস্ফীতির নিম্নমুখিতা দেখা দিয়েছে। তবে নিত্যপণ্যের বাজার এখনো সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতা থেকে অনেক দূরে রয়েছে বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা।