নভেল করোনাভাইরাস মহামারীর বিস্তার ঠেকাতে লকডাউনের মধ্যে বেতন-ভাতা পেতে পোশাক কারখানার শ্রমিকদের সহজেই অ্যাকাউন্ট খুলে দিচ্ছে দেশের সবচেয়ে বড় মোবাইল সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান বিকাশ। করোনাভাইরাসের ক্ষতি পুষিয়ে দিতে দেশের রপ্তানি আয়ের প্রধান খাত তৈরি পোশাক কারখানার শ্রমিক-কর্মচারিদের বেতন-ভাতা দিতে ৫ হাজার কোটি টাকার একটি প্রণোদনা তহবিলে গঠন করেছে সরকার।
সেই তহবিল থেকে মাত্র ২ শতাংশ সুদে ঋণ নিয়ে শ্রমিকদের বেতন-ভাতা পরিশোধ করছে কারখানার মালিকরা। এই তহবিলের টাকা কারখানার মালিকদের না দিয়ে সরাসরি শ্রমিকদের ব্যাংক হিসাব বা মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসের (এমএফএস) মাধামে পাঠিয়ে দিচ্ছে ব্যাংকগুলো। এ পরিস্থিতিতে যে সব শ্রমিক-কর্মচারির এমএফএস অ্যাকাউন্ট নেই তাদের সহজেই বিকাশ অ্যাকাউন্ট খুলে দেওয়া হচ্ছে।
সোমবার বিকাশের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, করোনাভাইরাস প্রতিরোধে বিশেষ এই পরিস্থিতিতে রপ্তানিমূখী পোশাক কারখানার শ্রমিকদের প্রণোদনার অর্থ মোবাইল ব্যাংকিং অ্যাকাউন্টে বিতরণের নির্দেশ দিয়েছে সরকার। বিকাশ সরকারের ওই এই নির্দেশনা বাস্তবায়নে জন্য কারখানার মালিক এবং তাদের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকগুলোর সাথে যৌথভাবে শ্রমিকদের অ্যাকাউন্ট খোলার সেবা দিচ্ছে।
পাশাপাশি সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে শ্রমিকরা তাদের সুবিধামত বিকাশের ই-কেওয়াসি ব্যবহার করে অ্যাপ থেকে অ্যাকাউন্ট খুলতে পারেন- সে বিষয়ে গণমাধ্যমে বিজ্ঞাপন দিয়ে সচেতনতা তৈরি করছে প্রতিষ্ঠানটি। একই সাথে অ্যাকাউন্ট সুরক্ষিত রাখতে পিন ও ওটিপি গোপন রাখতে বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে সচেতন করা হচ্ছে। এছাড়া সারাদেশে বিকাশের নির্ধারিত ডিজিটাল ই-রেজিস্ট্রেশন পয়েন্টে গিয়েও সামাজিক দূরত্বের নির্দেশনা মেনে অ্যাকাউন্ট খুলতে পারছেন শ্রমিকরা।
যদি কোন গার্মেন্টস শ্রমিকের জাতীয় পরিচয় পত্র না থাকে সেক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা অনুসারে শ্রমিকদের জন্ম নিবন্ধন সনদ দিয়েও অ্যাকাউন্ট খুলে দেয়া হচ্ছে। গার্মেন্টস প্রতিষ্ঠানগুলোর দেয়া তথ্যতালিকা অনুসারে বিকাশ অ্যাকাউন্ট খোলার কাজ করছে প্রতিষ্ঠানটি। সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বিকাশ অ্যাপ দিয়ে অ্যাকাউন্ট খুলতে শুরুতে অ্যাপ ডাউনলোড করে নিতে হবে। এরপর কয়েকটি সহজ ধাপে জাতীয় পরিচয়পত্র স্ক্যান করে এবং নিজের ছবি তুলে কয়েক মিনিটেই অ্যাকাউন্ট খোলার কাজ সম্পন্ন করতে পারবেন শ্রমিকরা।
নিকটবর্তী ডিজিটাল ই-রেজিস্ট্রেশন পয়েন্টে যে সিমে অ্যাকাউন্ট খুলতে চান সেই সিমসহ মোবাইল এবং জাতীয় পরিচয় পত্র সাথে নিয়ে গিয়ে কয়েক মিনিটেই অ্যাকাউন্ট খুলতে পারবেন শ্রমিকরা। বাংলাদেশের যেকোন প্রান্তে যেকোন পদ্ধতিতেই সম্পূর্ণ বিনামূল্যে বিকাশ অ্যাকাউন্ট খোলার সেবা পাবেন শ্রমিকরা। যেসব শ্রমিকের আগে থেকেই বিকাশ অ্যাকাউন্ট আছে তারা তাদের প্রতিষ্ঠানকে অবহিত করে ওই অ্যাকাউন্টেই প্রণোদনার অর্থ পাওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন।
২০১৫ সাল থেকে প্রায় ৪০০টি শীর্ষস্থানীয় গার্মেন্টস তাদের ৪ লাখেরও বেশি কর্মীর বেতন-ভাতা বিকাশের মাধ্যমে সফলতার সাথে বিতরণ করে আসছে। সেই অভিজ্ঞতা বিশেষ সময়ের এই সেবাকে আরো সমৃদ্ধ করবে বলে জানিয়েছে বিকাশ। শ্রমিকদের বেতন-ভাতা বিকাশ অ্যাকাউন্টে পাওয়ার পর তা ক্যাশআউট করতে বাড়তি কোনো অর্থ প্রয়োজন হবে না। বিকাশ এবং কারখানাগুলো যৌথভাবে এই খরচ বহন করবে ফলে শ্রমিক তার বেতনের পুরো অর্থই পেয়ে যাবেন বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
বিডি-প্রতিদিন/শফিক