বুধবার, ৮ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা

ঝুঁকি নিয়ে পদ্মা-মেঘনা পারাপার

নেয়ামত হোসেন, চাঁদপুর

ঝুঁকি নিয়ে পদ্মা-মেঘনা পারাপার

ঝুঁকি নিয়ে পদ্মা-মেঘনা নদী পারাপার হচ্ছে প্রতিদিন অসংখ্য যাত্রী। এই দুই নদীতে চলাচলকারী নৌযানগুলোতে নেই কোনো নিরাপত্তা সরঞ্জাম। ফলে বর্ষা মৌসুমে নদী উত্তাল থাকে। চাঁদপুর সদর, মতলব উত্তর, মতলব দক্ষিণ ও হাইমচর উপজেলাগুলো দুই নদীর উপকূলবর্তী এলাকা। এ সব উপজেলায় ছোট-বড় প্রায় ৪০টি চর মেঘনা নদীর পশ্চিম পাড়ে রয়েছে। এই চরাঞ্চলের মানুষরা  দৈনন্দিন কেনাকাটা ও চিকিৎসাসেবা গ্রহণে ঝুঁকি নিয়ে পদ্মা-মেঘনা পাড়ি দিয়ে জেলা সদরে  যেতে হয়। চরগুলোর সঙ্গে জেলা সদরে যোগাযোগে ইঞ্জিনচালিত নৌকা/ ট্রলার একমাত্র মাধ্যম।  আসমা বেগম ও মরন গাজী  বলেন, বর্ষায় আমরা জীবনের ঝুঁকি নিয়েই ইঞ্জিনচালিত নৌকাতে নিয়মিত যাওয়া-আসা করে থাকি। আকাশ যখন  মেঘাচ্ছন্ন ও নদীতে যখন উত্তাল ঢেউ উঠে তখন পদ্মা-মেঘনা পাড়ি দেওয়া অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। সেই প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও উত্তাল নদীতে চরের নারী-পুরুষরা বাধ্য হয়ে ঝুঁকি নিয়েই মেঘনা নদী পারি দিয়ে থাকি। এ ছাড়া শিক্ষা, স্বাস্থ্য, বাণিজ্য ইত্যাদির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বহু মানুষ শহর থেকে ট্রলারে নদী পাড়ি দিয়ে নিয়মিত পশ্চিম পাড়ে যাতায়াত করতে হয়। পুরানবাজার মদিনাঘাট ইজারাদার শাহ আলম জানান, আমাদের পক্ষ থেকে বলা হয়, বর্ষায় নদী পারাপারে নিয়োজিত ট্রলারগুলো যাতে অতিরিক্ত যাত্রী ও মালামাল পরিবহন না করে। আমরা ঘাটে ট্রলার মাঝিদের বার বার নদী পারাপারে ঝুঁকির বিষয়টি স্মরণ করে দেই এবং লাইফ জ্যাকেট এবং বয়া ট্রলারে রাখার জন্য বলে থাকি। ট্রলার মাঝি শাহজালাল ও রহিম খাঁ বলেন, যাত্রীদের নিরাপত্তার কথা ভেবে ট্রলারে লাইফ জ্যাকেট ও বয়া রেখেছি। বর্ষায় নদীর উত্তাল ঢেউ ও প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে যদি কোনো সময় যাত্রীবাহী ট্রলার দুর্ঘটনার শিকার হয়, তাহলে যাত্রীরা সেই লাইফ জ্যাকেট/বয়া নিয়ে নিজেদের জীবন বাঁচাতে সক্ষম হবেন। এই নদীতে যে ধরনের ঘূর্ণাস্রোত থাকে, তাতে অন্যস্থানের ট্রলার চালকরা এখানে এসে ট্রলার চালালে দুর্ঘটনা ঘটাবে। রাজরাজেশ্বর ইউপি  চেয়ারম্যান হযরত আলী বেপারি জানান, নদীর পশ্চিম পাড়ের চরাঞ্চলে আমার ইউনিয়ন। জীবনের ঝুঁকি নিয়েই মানুষদের যাতায়াত করতে হয়।

 তবে গর্ভবতী  মাদের জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে বেশি সমস্যা হয়। বর্ষা ছাড়াও সব মৌসুমে চরাঞ্চলের মানুষদের ট্রলারেই যাতায়াত করতে হয়। ঝুঁকিপূর্ণ ভেবেও তাদের যাতায়াতে বিকল্প পথ নেই। কারণ জেলা সদরের সঙ্গে  যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম ট্রলার/নৌকা। দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায় অনেক সময় যাত্রী ও মালামালসহ  ট্রলার নদীতে ডুবে গিয়ে বহু যাত্রীর  প্রাণহানি এবং অনেক ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। আমাদের দাবি জেলা প্রশাসন জরুরি ভিত্তিতে চরাঞ্চলের মানুষদের ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থা থেকে নিরাপদ যোগাযোগ ব্যবস্থা কওে দেবেন। চাঁদপুর বিআইডব্লিউটিএর উপ-পরিচালক কায়সারুল ইসলাম বলেন, এই ট্রলারগুলো চলাচলে আমাদের কোনো অনুমোদন নেই। তবে পুরানবাজার থেকে আলুরবাজারসহ বিভিন্ন চরাঞ্চলে ঝুঁকি নিয়ে যাতে ট্রলারগুলো চলাচল করতে না পারে, সেজন্য নৌ-পুলিশকে চিঠি দিয়ে অবহিত করা আছে। কালবৈশাখী আসার প্রাক্কালে আমরা এই সংক্রান্ত কিছু পদক্ষেপ নিয়ে থাকি। যাতে করে ট্রলারগুলো ঝড়ের সিগনাল অনুসরণ করে, সেজন্য সার্বক্ষণিক আবহাওয়া অফিসের সংকেত অনুসরণ করতে বলা হয়ে থাকে।

সর্বশেষ খবর