ভারতের ফারাক্কা বাঁধের কারণে সুন্দরবন ও পশুর নদের প্রতিবেশ ব্যবস্থার ভারসাম্য নষ্ট হয়েছে। ইউনেস্কো সুন্দরবনের ক্ষতির প্রথম কারণ হিসেবে গঙ্গা নদীর উজানে ভারতের নির্মাণ করা ফারাক্কা ব্যারাজকে চিহ্নিত করেছে। ফারাক্কা ব্যারাজ নির্মাণের পর থেকে সুন্দরবনের নদী-খালে মিষ্টি পানির প্রবাহ ব্যাপকভাবে কমেছে। সুন্দরবনের জীববৈচিত্র্য রক্ষা করতে হলে গঙ্গা দিয়ে মিষ্টি পানির প্রবাহ বাড়াতে হবে। বিশ্ব নদী দিবস উপলক্ষে বাগেরহাটের মোংলা প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে গতকাল ‘ফারাক্কার প্রভাবে বিপর্যন্ত সুন্দরবন ও পশুর আন্তসীমান্ত নদীতে বাংলাদেশের অধিকার’ শীর্ষক সেমিনারে বক্তারা এ কথা বলেন। উপজেলা প্রশাসন, বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা), সেভ দ্য সুন্দরবন ফাউন্ডেশন ও সার্ভিস বাংলাদেশ-এর সেমিনারের আয়োজক। বাপার কেন্দ্রীয় যুগ্ম সম্পাদক পশুর রিভার ওয়াটারকিপার নূর আলম শেখের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন মোংলা সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর কে এম রব্বানী। বিশেষ অতিথি ছিলেন- উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা অঞ্জন বিশ্বাস, সুন্দরবন জাদুঘরের পরিচালক সুভাষ চন্দ্র বিশ্বাস, অধ্যক্ষ মো. সেলিম, প্রভাষক শ্যামা প্রসাদ সেন, ড. অসিত বসু, ড. অপর্ণা অধিকারী প্রমুখ। বক্তারা বলেন, ভারত ফারাক্কাসহ আন্তসীমান্ত নদী থেকে পানি প্রত্যাহার করে নিচ্ছে। ফলে জোয়ারের পানিতে বাংলাদেশের নদীতে পলি পড়ে নদী-খাল ভরাট হয়ে যাচ্ছে। একইভাবে সভ্যতার সুযোগ যত গ্রহণ করছি প্রকৃতি তত বিলীন হয়ে যাচ্ছে। নদীসহ পরিবেশ সংরক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে। খাদ্যের অভাব এবং দূষণের কারণে পশুর নদীর ইলিশ মাছ ছোট হয়ে যাচ্ছে।
আন্তসীমান্ত নদীগুলোর ন্যায্য হিস্যা আদায়ে ভারত ও অন্যান্য রাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে সুষ্ঠু সমাধান করতে হবে। সেমিনারের আগে বাপা, সেভ দ্য সুন্দরবন ফাউন্ডেশন, পশুর রিভার ওয়াটারকিপার ও সার্ভিস বাংলাাদেশের আয়োজনে সুন্দরবন ও পশুর নদ রক্ষার দাবিতে নৌ-বন্ধন করা হয়।