বিনা দোষে ২২ বছর কারাভোগের পর সিলেট কারাগার থেকে মুক্তি পেয়ে নিজ বাড়িতে ফিরেছেন ফজলু মিয়া।
মঙ্গলবার ভোরে জামালপুরে পৌঁছান তিনি। এ সময় শারীরিকভাবে অসুস্থ ফজলুকে জামালপুরের জেলা প্রশাসক শাহাবুদ্দিন খান তার নিজ বাসভবনে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান।
পরে সকালে নিজ বাড়ি জামালপুর সদরের সাউনিয়া আসেন ফজলু। এ সময় ফজলুকে ফিরে পেয়ে আনন্দে আত্মহারা হয়ে ওঠেন ফজলুর পরিবারসহ পুরো গ্রামের লোকজন।
জামালপুর সদরের সাউনিয়া গ্রামের মৃত বিষু মিয়ার একমাত্র ছেলে ফজলু ১২/১৩ বছর বয়সে প্রায় ৩৫ বছর আগে বাড়ি থেকে অভিমান করে পালিয়ে ঢাকায় যান।
সেখান থেকে পরে তিনি সিলেট আসেন। একসময় সিলেট থেকে হারিয়ে যান ফজলু। এরপর আর তার কোনো খোঁজ পাননি পরিবারের সদস্যরা। একমাত্র ছেলেকে হারানোর শোকে কাঁদতে কাঁদতে অন্ধ হয়ে গেছেন ফজলুর মা মজিরন। আর দুনিয়া থেকে চিরবিদায় নিয়েছেন ফজলুর বাবা বিষু মিয়া।
এদিকে, কোনো অপরাধ না করলেও ১৯৯৩ সালে এক মামলায় সিলেট কোতোয়ালি থানা পুলিশ ফজলুকে ৫৪ ধারায় গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠায়। তার পক্ষে জামিন চাওয়ার কেউ না থাকায় বিনা দোষে এরপর থেকে ২২ বছর কারাবাস করেন ফজলু।
সম্প্রতি গণমাধ্যমে ফজলু মিয়ার কাহিনী ছড়িয়ে পড়লে গত ১৫ অক্টোবর আদালত তাকে মুক্তি দেন। পরে আত্মীয়-স্বজনরা জামালপুর জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে সিলেটে যোগাযোগ করেন এবং মঙ্গলবার ভোরে ফজলুকে ফিরিয়ে আনেন।
এদিকে, দীর্ঘ ২২ বছর কারাগারে থাকার পর নিজ বাড়িতে ফিরতে পেরে আনন্দে আত্মহারা ফজলু নিজেও।
তবে বিনা দোষে কারাভোগের ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত এবং এর সঙ্গে জড়িতদের শাস্তির দাবি জানান পরিবারের সদস্যরা।
জামালপুরের জেলা প্রশাসক শাহাবুদ্দিন খান জানান, ফজলু মিয়া দরিদ্র ঘরের সন্তান। তার জীবন থেকে ২২টি বছর হারিয়ে গেছে। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ফজলুকে বসতবাড়ি ও তার পরিবারের চলার মতো ব্যবস্থা করে দেওয়া হবে।
বিডি-প্রতিদিন/ ২৭ অক্টোবর ১৫/ সালাহ উদ্দীন