নোয়াখালীতে এক সহকারী শিক্ষকের বিরুদ্ধে তার বিদ্যালয়ের নারী প্রধান শিক্ষককে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
আজ বুধবার জেলার সদর উপজেলার নেয়াজপুর ইউনিয়নের ধর্মপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে। এর আগে গত বছরের ৮ সেপ্টেম্বরও একই শিক্ষক ওই প্রধান শিক্ষককে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেছিলো। এতে ওই প্রধান শিক্ষক মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ায় গত তিনমাসের বেশি সময় চিকিৎসাজনিত ছুটিতে ছিলেন তিনি।
নির্যাতনের শিকার প্রধান শিক্ষক শামীম আরা বেগম জানান, বুধবার সকাল ৯ টায় তিনি চিকিৎসাজনিত ছুটি শেষে বিদ্যালয়ে যোগদান করেন। অন্যান্য শিক্ষকেরা বিদ্যালয়ে উপস্থিত থাকলেও সকাল ১০টা পর্যন্ত সহকারী শিক্ষক আবদুল কুদ্দুস আসেননি। এ সময় শিক্ষক হাজিরা খাতায় দেখেন আগের দিনও (৫ জানুয়ারি) খাতায় তার স্বাক্ষর নাই।
তিনি আরো জানান, হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর না থাকার বিষয়টি তাৎক্ষনিক সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে অবহিত করলে তিনি অনুপস্থিতির বিষয়টি হাজিরা খাতায় নোট রাখার পরামর্শ দেন। পরামর্শ অনুযায়ী তিনি আবদুল কুদ্দুসের নামের পাশে ‘আগের দিনের উপস্থিতির স্বাক্ষর নেই’ মর্মে উল্লেখ করে রাখেন। এ ঘটনার কিছুক্ষণ পর আবদুল কুদ্দুস বিদ্যালয়ে আসেন। এসেই তিনি হাজিরা খাতা দেখে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন এবং বলেন ‘তুই হাজিরা খাতায় নোট লেখার কে, কেন এসব লিখছস?’ এসব বলতে বলতে টেবিলের সামনে এসে তাঁকে শারীরিকভাবে আঘাত করে এবং শাড়ি ধরে টান দেয় এবং গলাটিপে ধরার চেষ্টা করে।
শামীম আরার অভিযোগ, এক পর্যায়ে তাঁর সঙ্গে থাকা ব্যাগ ও মুঠোফোন ছিনিয়ে নেয়। এ সময় তিনি দৌড়ে পঞ্চমশ্রেণির কক্ষের সামনে গিয়ে ছাত্রছাত্রীদের তাকে রক্ষা করতে আকুতি জানালে পাঠদানরত শিক্ষক সালমা সুলতানা ছাত্রছাত্রীদের ধমক দিয়ে শ্রেণিকক্ষ থেকে বের হতে দেননি এবং তিনি নিজেও সহায়তায় এগিয়ে আসেননি। পরে তিনি মাঠে এসে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি অবহিত করেন এবং বিকেলে লিখিতভাবে জানিয়েছেন।
অভিযোগের বিষয়ে বক্তব্য জানতে সন্ধ্যায় শিক্ষক আবদুল কুদ্দুসের সেলফোনে একাধিকবার ফোন করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেন নি।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. জসিম উদ্দিন শেখ বলেন, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার বরাবরে লেখা প্রধান শিক্ষকের লিখিত অভিযোগ তিনি পেয়েছেন। অভিযোগটি তিনি যথাযত কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠিয়েছেন।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেন ছিদ্দিকী বলেন, প্রধান শিক্ষকের অভিযোগ তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বিডি-প্রতিদিন/ ০৬ জানুয়ারি ১৬/ সালাহ উদ্দীন