লক্ষীপুরে কলেজছাত্রী ফারহানা আক্তারের ওপর হামলার ঘটনায় মামলা করা হয়েছে। রবিবার সন্ধ্যায় ওই ছাত্রী বাদি হয়ে লক্ষীপুর সদর থানায় অজ্ঞাতনাম এক আসামীর বিরুদ্ধে মামলা করেন।
মামলা সুত্রে জানা যায়, বাংলাদেশ উম্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাউবি) অধিনে লক্ষীপুর মহিলা কলেজে থেকে পরীক্ষা দেওয়ার জন্য ০৬ অক্টোবর রাত ১০ টায় ফারহানা তার পরিচিত লক্ষীপুর পৌর শহরের শাখারীপাড়ার সবিতার বাসায় আসেন। ০৭ অক্টোবর পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করেন ফারহানা। ০৮ অক্টোবর সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে ঢাকা যাওয়ার জন্য বাস টার্মিনালে টিকেটের জন্য গিয়ে না পেয়ে ওই বাসায় ফিরছিলেন। এসময় শাখারী পাড়াস্থ ছোট ব্রীজের নিকট রিক্সা থেকে নেমে হেঁটে যাওয়ার সময় হঠাৎ অজ্ঞাতনামা এক লোক ধারালো অস্ত্র দিয়ে ফারহানার নাভীর নিচে পোঁচ দেয়। এসময় তার হাতে থাকা হ্যান্ডব্যাগটি ছিনিয়ে নেয়ার সময়ে বুকের উপর বাম পার্শ্বে কাটা জখম প্রাপ্ত হন ওই ছাত্রী। এসময় ঘটনাস্থল থেকে রক্তাক্ত অবস্থায় স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেন।
মামলায় আরো উল্লেখ করা হয়, ফারহানা মা-মনি প্রকল্পের প্যারামেডিক চাকুরী করা কালীন সময়ে স্থানীয় আতিকুর রহমানের ছেলে বিএমএ লক্ষীপুর জেলা সভাপতি ডাক্তার আশফাকুর রহমান মামুনের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। পরবর্তীতে ২৭ ডিসেম্বর ২০১৫ ইং সালে সিলেটের সুরমা ভ্যালী রেস্ট হাউজে তাদের বিয়ে হয়।
বিয়ের সকল আয়োজন করেন আশফাকুর রহমানের বন্ধু ডাক্তার এনামুল হক। বিয়ের আগে ও পরে স্বামী স্ত্রী হিসেবে তাদের মেলামেশা হয়। এক পর্যায়ে বিয়ের কাবিননামা সম্পর্কে জানতে চাইলে কাবিননামা দিতে অস্বীকৃতি জানায় মামুন। এ নিয়ে তিক্ততা সৃষ্টি হওয়ার এক পর্যায়ে ফারহানাকে লক্ষীপুর আসতে নিষেধ করে বিভিন্ন প্রকার হুমকি দেয়া হয়।
লক্ষীপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুন মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, মামলাটি তদন্তাধীন অবস্থায় আছে।
প্রসঙ্গত: কলেজ ছাত্রী ফারহানার উপর হামলা, বিএমএ জেলা সভাপতি ডাক্তার আশফাকুর রহমানকে নিয়ে বিয়ের ঘটনা ধামাচাপা দিতে ও তাকে হত্যা চেষ্টা করার বিষয়ে ভিকটিমের বক্তব্য জেলা জুড়ে তোলপাড় সৃষ্টি হয়।
এদিকে এ ঘটনার পর থেকে ডাক্তার মামুন তার নিজস্ব হাসপাতাল (মডেল হসপিটাল) এর নিজ চেম্বারে বসছেন না বলে ওই হাসপাতালের কর্মরত এক স্টাফ জানান। কেউ কেউ বলছেন তিনি পলাতক রয়েছেন। তবে এর আগে (০৮ অক্টোবর) তিনি গণমাধ্যম কর্মীদেরকে অসুস্থ রয়েছেন বলে জানান। ওই সময়ে ফারহানার বিষয়ে কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি তিনি।
বিডি-প্রতিদিন/ ০৯ অক্টোবর, ২০১৬/ সালাহ উদ্দীন