ঝিনাইদহ জেলার সাংবাদিকরা অব্যাহতভাবে সাইবার ক্রাইমের শিকার হচ্ছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। প্রতিপক্ষ একটি মহল সাংবাদিকদের নানাভাবে হয়রানী ও ভোগান্তির জন্য কয়েক বছর ধরে এই সাইবার ক্রাইম করে যাচ্ছেন। এ নিয়ে আদালতে মামলা ও থানায় জিডি করেও কোন প্রতিকার পাচ্ছেন না সাংবাদিকরা।
অভিযোগ পাওয়া গেছে, স্বার্থ সিদ্ধির জন্য বিভিন্ন ব্যক্তির বিরুদ্ধে নিউজ লিখে ভুয়া মেইল খুলে পত্রিকায় খবর পাঠানো হচ্ছে। এতে হয়রানী, মিথ্যা মামলা এমনকি জীবনের প্রতি হুমকীর শিকার হচ্ছেন সাংবাদিকরা। সম্প্রতি বাংলাদেশ প্রতিদিন, দৈনিক ইনকিলাব, আলোকিত বাংলাদেশ, মানবজমিন, জনতাসহ বিভিন্ন পত্রিকায় শৈলকুপার একটি ঘটনা নিয়ে মিথ্যা খবর পাঠানো হয়। ব্যস্ততা ও হাজারো কাজের ভীড়ে যাচাই বাছাই না করেই কিছু পত্রিকায় এ খবর প্রকাশ করে দেয়। কোন পত্রিকায় অনলাইন ভার্সনে সেই খবর ছাপা হয়। এ নিয়ে জেলায় হৈ চৈ পড়ে যায়।
রাজনৈতিক নেতারা ক্ষুদ্ধ হন সাংবাদিকদের উপর। কয়েক বছর আগে ঝিনাইদহ পৌরসভার মেয়রের বিরুদ্ধে এমন অপপ্রচার চালানোর জন্য বিভিন্ন পত্রিকায় ভুয়া খবর প্রকাশ করা হয়। অথচ যে সব পত্রিকায় খবর প্রকাশিত হয়, সে সব পত্রিকার জেলা প্রতিনিধিরা জানেনই না। অথচ বাংলাদেশ প্রতিদিনের জেলা প্রতিনিধি শেখ রুহুল আমিনকে ১নং আসামী করে সদর পৌর মেয়র ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আদালতে একটি মামলা দায়ের করে। ২০০৮ সালে বিটিভির ঝিনাইদহের সাবেক জেলা প্রতিনিধি আসিফ ইকবাল কাজলের বিরুদ্ধে এমন মিথ্যা ও হয়রানী মুলক মামলা করা হয়। পরবর্তীতে ওই মামলা আদালতে মিথ্যা প্রমানিত হয়। খবর প্রকাশ হয় পত্রিকায় অথচ মামলা হয় টিভি সাংবাদিকের নামে।
দৈনিক নবচিত্র পত্রিকার প্রধান সম্পাদ আলহাজ্ব শহিদুল ইসলাম ও সম্পাদ আলাউদ্দীন আজাদ এবং সমকাল প্রতিনিধি মাহমুদ হাসান টিপু এখনো এমন সাইবার ক্রাইম জনিত কারণে একটি মামলায় আদালতে হাজিরা দিচ্ছেন। সম্প্রতি বহুল প্রচারিত বিভিন্ন দৈনিকে ভুয়া মেইল খুলে একটি চক্র সংবাদ পাঠানো অব্যাহত রেখেছে। একুশে টিভির এফটিপিতে অন্য সাংবাদিকের নাম ও মোবাইল লিখে ভিডিও ফুটেজ এবং নিউজ দেওয়া হয়েছে। অথচ একুশে টিভির ঝিনাইদহ প্রতিনিধি বিষয়টি জানেনও না। পার্টির কাছ থেকে আর্থিক সুবিধা কিংবা রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে এমন মিথ্যা কুরুচিপূর্ণ নিউজ পাঠানো হচ্ছে। এ সব বিষয়ে জেলার সিনিয়র সাংবাদিকরা ঝিনাইদহ সদর থানায় একাধিকবার জিডি করলেও পুলিশ একটি ঘটনারও ক্লু উদ্ধার করতে পারেনি। ধরা পড়েনি সাইবার অপরাধীরা।
সর্বশেষ সাইবার ক্রাইমের শিকার জেলার সিনিয়র সাংবাদিক মোস্তফা মাজেদ জানান, তার নামে একটি ইমেই ব্যবহার করে শৈলকুপায় যাত্রাদলের দুই নারী ধর্ষিত হওয়ার ভুয়া খবর ইনকিলাবে পাঠানো হয়। খবরটি অসাবধান বশতঃ পত্রিকায় ছাপাও হয়। খবরে সরকারী দলের স্থানীয় এমপি ও দলীয় নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা খবর প্রকাশিত হয়। তিনি আরো জানান, এ নিয়ে তিনি ঝিনাইদহ সদর থানায় একটি জিডি করেছেন। তিনি এই চক্রকে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন।
এদিকে ঝিনাইদহ প্রেসক্লাবের সিনিয়র সাংবাদিকরা এমন সাইবার ক্রাইমের কারণে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে প্রতিকার দাবি করেছেন।
বিডি প্রতিদিন/০৬ জানুয়ারি ২০১৭/হিমেল