নওগাঁর রাণীনগর উপজেলার ঘোষগ্রামে র্যাফেল ড্র লটারি অনুষ্ঠানে সন্ত্রাসীদের এলোপাথাড়ী গুলিবর্ষণে রোবায়েত হোসেন (১৪) নামে এক স্কুলছাত্রসহ তিনজন গুলিবিদ্ধ হওয়ার ঘটনায় মামলা হয়েছে। সন্ত্রাসীদের গুলিতে আহত রোবায়েত হোসেনের পিতা উপজেলার ভবানীপুর মন্ডলপাড়া গ্রামের জাবের আলী মন্ডল বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের অভিযুক্ত করে মামলা দায়ের করেন।
মামলা দায়েরের পরপর নওগাঁর পুলিশ সুপার ইকবাল হোসেন মামলাটি তদন্তের জন্য জেলা গোয়েন্দা শাখায় স্থানান্তর করেন। জেলা গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক আব্দুল্লাহিল জামান এ মামলা তদন্ত করছেন।
এদিকে উক্ত মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রানীনগর উপজেলার গোনা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল হাসনাত খান হাসানকে আটক করেছে ডিবি পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে রবিবার সন্ধ্যায় তাকে এ মামলায় গ্রেফতার করা হয়েছে। এছাড়া পুলিশের হাতে উপজেলার ভবানীপুর গ্রামের মৃত. মতিউর রহমানের ছেলে আশিকুজ্জামান রাব্বীকে এ মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়েছে।
পুলিশী জিজ্ঞাসাবাদে এলোপাথারি গুলিবর্ষণের বিষয়ে আশিকুজ্জামান রাব্বী গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিতে চাইলে পুলিশ তাকে নওগাঁর সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট সিরাজুল ইসলামের আদালতে হাজির করেন। আদালতে বিজ্ঞ বিচারকের কাছে আশিকুজ্জামান রাব্বী ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেন এবং এই গুলিবর্ষষের ঘটনায় জড়িতদের নাম প্রকাশ করেন।
জেলা গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক আব্দুল্লাহিল জামান জানান, ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি প্রদানের পর বিজ্ঞ আদালতের নির্দেশে গ্রেফতারকৃত আশিকুজ্জামান রাব্বীকে নওগাঁ জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। আদালতে দেয়া ১৬৪ ধারার জবানবন্দিতে আশিকুজ্জামান রাব্বী নিজে এই ঘটনার সাথে জড়িত বলে স্বীকার করেছেন এবং এই গুলিবর্ষণের ঘটনায় জড়িতদের নাম, অস্ত্র সরবরাহকারীসহ পরিকল্পনাকারীদের নাম প্রকাশ করেছেন।
তিনি আরো বলেন, মামলা তদন্ত এবং আসামী গ্রেফতারের স্বার্থে এ মুহুর্তে তাদের নাম প্রকাশ করা সম্ভব হচ্ছে না।
নওগাঁর পুলিশ সুপার ইকবাল হোসেন জানান, স্পর্শকাতর এই মামলার প্রকৃত আসামীদের গ্রেফতার করার জন্য নওগাঁর ডিবি পুলিশের একাধিক টিম মাঠে কাজ করছে। আশা করছি অল্প সময়ের মধ্যে ঘটনায় সাথে জড়িতদের গ্রেফতার করা সম্ভব হবে।
উল্লেখ্য, গত শুক্রবার বিকেলে উপজেলার বেতগাড়ী বাজার এলাকার ঘোষগ্রাম কফিলিয়া উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে ঈদ উপলক্ষে স্থানীয় উদয়ন ক্রিড়া সংসদ ফুটবল টুর্নামেন্টর আয়োজনে ফাইনাল প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। এ উপলক্ষে স্থানীয় উদয়ন সংসদ থেকে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের বা প্রশাসনের কোনরুপ অনুমতি ছাড়াই শুধুমাত্র স্থানীয়ভাবে ম্যানেজ করে র্যাফেল ড্র লটারীর আয়োজন করে তারা। ফুটবল খেলা শেষে ওই রাতেই লটারীর ড্র অনুষ্ঠিত হয়। ড্র চলাকালে রাত অনুমান সাড়ে ১১টা নাগাদ অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী অনুষ্ঠানে অতর্কিত হামলা চালিয়ে এলোপাথাড়ি গুলি বর্ষণ করে। এ সময় চেয়ারে বসে থাকা রোবায়েত হোসেন মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়।
বিডি প্রতিদিন/এ মজুমদার