দিনাজপুরে ‘ইয়াসমীন ট্রাজেডির ২৩ বছর পালন ও নিহতদের স্মরণে সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার কাহারোল উপজেলার দশমাইল মোড়ে এই স্মরণ সভায় আয়োজন করা হয়।
সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে সংসদ সদস্য মনোরঞ্জন শীল গোপাল বলেন, দিনাজপুরের সহজ-সরল ও বাহে মানুষগুলো ৯৫’র ইয়াসমিন ধর্ষণ ও হত্যার প্রতিবাদ করতে গিয়ে দেখিয়েছেন তাদের বাহুকার জোড় কত। ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের ফলে আমরা যে বিচার পেয়েছি তা বিশ্বের ইতিহাসে বিরল। সেদিন পুলিশ সুপারকে বলেছিলাম একজন মানুষ মারা গেছে। কিন্তু পুলিশ সুপার বলেছিলেন না একজন পতিতা মারা গেছে। সেদিন যদি দিনাজপুরের মানুষ জেগে না উঠত তাহলে হয়তো অপরাধী পুলিশের বদলে আমার ফাঁসি হতো। যাদের কারণে সামু, কাদের, সিরাজ নিহত হয়েছেন তাদের বিচার হওয়া উচিত।
তিনি আরও বলেন, বিএনপি এবং খালেদা জিয়ার প্রতিনিধি সে সময় দিনাজপুরে এসে সাধারণ মানুষের ৮ দফা দাবি মেনে নিলেও তারা তা বাস্তবায়ন করেনি। পরবর্তীতে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় এসে মামলা প্রত্যাহারসহ নিহত ও আহতদের ক্ষতিপূরণ দিয়েছে।
ইয়াসমিন ট্রাজেডি স্মরণ পরিষদের আহ্বায়ক মো. মজিদুল ইসলাম মাস্টারের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আজিজুল ইমাম চৌধুরী, দৈনিক আজকের দেশবার্তা পত্রিকার সম্পাদক চিত্ত ঘোষ, জেলা সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সাধারণ সম্পাদক সুলতান কামাল উদ্দিন বাচ্চু, বীরগঞ্জ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদের সদস্য মো. নুর ইসলাম নুর প্রমুখ ।
উল্লেখ্য, ১৯৯৫ সালের ২৪ আগস্ট কিছু বিপথগামী পুলিশ সদস্য ইয়াসমিনকে ধর্ষণের পর শ্বাস রোধ করে হত্যা করে। তারই প্রতিবাদে যে আন্দোলন গড়ে উঠেছিল তার চূড়ান্ত রূপ নেয় ২৭ আগস্ট। সেদিন পুলিশের গুলিতে সামু, কাদের, সিরাজসহ ৭ জন নিহত হন। সেই থেকে তাদের স্মরণে ২৭ শে আগস্ট স্মরণ সভা পালিত হয়ে আসছে।
কাহারোল উপজেলার দশমাইলস্থ পূর্ব সাদিপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে ইয়াসমিন ধর্ষণ ও হত্যার প্রতিবাদে সৃষ্ট গণ আন্দোলনে নিহত সামু, সিরাজ, কাদেরসহ ৭ শহীদ স্মরণে’ ৭১ লাখ টাকা ব্যয়ে ‘সামু-সিরাজ-কাদের’ নামকরণে একটি একাডেমিক ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে।
বিডি প্রতিদিন/এনায়েত করিম