চলন্ত লঞ্চ থেকে পড়ে যাওয়া শিশু সন্তানকে বাঁচাতে নদীতে ঝাঁপিয়ে পড়েন মা; এরপর দুজনই নিখোঁজ হন। সোমবার বিকালে ঢাকা থেকে চাঁদপুরের উদ্দেশে ছেড়ে যাওয়া এমভি হাসান ইমাম-২ লঞ্চটি মতলব উত্তর উপজেলার ষাটনল এলাকায় মেঘনা নদী অতিক্রমকালে এ ঘটনা ঘটে।
নিখোঁজ সেই মা ও সন্তানের মরদেহ মেঘনা নদী থেকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। বুধবার দুপুরে মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলার কালির চর এলাকা থেকে ৩ মাস বয়সী শিশু মোহাম্মদের মরদেহ ভাসমান অবস্থায় উদ্ধার করে পুলিশ। এর আগে, মঙ্গলবার বিকেলে মা কহিনুর রহমান ইভার (৩০) মরদেহ উদ্ধার করা হয়। সেদিন বিকেল ৪টার দিকে চরআব্দুল্লাহ নৌ-ফাঁড়ি পুলিশ ভাসমান অবস্থায় ওই নারীর মরদেহ উদ্ধার করে।
নিখোঁজ শিশুর মরদেহ উদ্ধার করতে এলাকাবাসী নৌকা ট্রলারে অভিযান চালিয়ে অবশেষে তাদের সন্ধান পান।
বিষয়টি নিশ্চিত করে চরআব্দুল্লাহ নৌ-ফাঁড়ির ইনচার্জ মো. বাচ্চু মিয়া জানান, সোমবার দুপুর দেড়টার দিকে ঢাকার সদরঘাট থেকে ছেড়ে আসা এমভি ইমাম হাসান-২ চাঁদপুরের উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। লঞ্চটি চাঁদপুরের ষাটনল এলাকার মেঘনা নদীতে পৌঁছলে ৩ মাসের সন্তান মোহাম্মদ নদীতে পড়ে গেলে সন্তানকে বাঁচাতে মা ইভা নদীতে ঝাপ দেন। এ ঘটনায় মা ও সন্তান দুইজনই মেঘনা নদীতে নিখোঁজ হন। পরে মঙ্গলবার বিকেলে ভাসমান অবস্থায় মা কহিনুর রহমান ইভার মরদেহ এবং বুধবার দুপুরে জেলা সদরের কালিরচর এলাকার মেঘনা নদী থেকে ভাসমান অবস্থায় শিশু মোহাম্মদের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
কহিনুর রহমান ইভা মুন্সীগঞ্জ শহরের শিলমন্দি এলাকার জিয়াউর রহমানের স্ত্রী। জিয়াউর রহমান একটি কোরিয়ান কোম্পানির প্রকৌশলী বলে জানা গেছে। তিনি স্ত্রী-সন্তান নিয়ে ঢাকার মোহাম্মদপুরে একটি ভাড়া বাসায় থাকতেন।
নিহতের ভগ্নিপতি অ্যাডভোকেট মো. মাহবুব জানান, নিহত ইভা ঢাকার মোহাম্মদপুর থেকে মুন্সীগঞ্জের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়ে দুপুর দেড়টার দিকে সদরঘাট থেকে মুন্সীগঞ্জে উদ্দেশ্যে আসেন। পরে লঞ্চ থেকে মুন্সীগঞ্জ লঞ্চঘাটে না নামতে পেরে ছটফট করতে থাকেন। এই সময় মেঘনা নদীর মতলব থানার ষাটনল এলাকায় ৩ মাসের সন্তান পড়ে যায়। সন্তানকে বাঁচাতে তিনিও নদীতে লাফ দেন। এ ঘটনায় মুন্সীগঞ্জ শহরের শিলমন্দি এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে।
বিডি প্রতিদিন/এনায়েত করিম