অজ্ঞাত রোগে অসুস্থতায় ৫ জনের মৃত্যুর পর ঠাকুরগাঁও পরিদর্শনে গেছেন সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা বিভাগের বিশেষজ্ঞ দল। এদিকে, আতঙ্কে ঘরবাড়ি ছেড়ে অন্যত্র চলে যাচ্ছেন অনেকে।
প্রথমে তারা অজ্ঞাত রোগে আক্রান্তদের দেখতে রংপুর মেডিকেল যায় আইইডিসিআরের বিশেষজ্ঞ দলটি। বুধবার দুপুরে জেলা প্রশাসক ও সিভিল সার্জনের সঙ্গে দেখা করে বালিয়াডাঙ্গীর মরিচপাড়া গ্রামে গিয়ে মৃত ব্যক্তিদের ব্যবহৃত বিভিন্ন নমুনা সংগ্রহ করেন।
সার্বক্ষণিক চিকিৎসা দিতে ঘটনাস্থলে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে একটি মেডিকেল টিম বসানোর পাশাপাশি খোলা হয়েছে কন্ট্রোল রুম।
ঝুঁকি মোকাবেলায় বিতরণ করা হচ্ছে বিশেষ মুখোশ। ওই এলাকায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধসহ জনগণের চলাচলে সাময়িক নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়েছে প্রশাসন। কিন্তু এলাকার শিক্ষার্থীদের স্কুলগুলোতে উপস্থিতির সংখ্যা কম লক্ষ্য করা গেছে।
এলাকার সাধারণ মানুষের সাথে কথা বলে জানা গেছে, মৃত তাহের গোপনে দেব-দেবী ও মূর্তি পূর্জা করতো। এলাকার বেশিরভাগ মানুষের বিশ্বাস- এরই কারণে মৃত্যু হয়েছে পরিবারের লোকজনের। কিন্তু মেডিকেল টিম ও চিকিৎসকরা সেই কথা মানতে নারাজ। বিজ্ঞানের যুগে কুসংস্কার না ছড়ানোর জন্য অনুরোধ করেন তারা।
ধনতলা ইউপি চেয়ারম্যান সমর কুমার চ্যাটার্জী বলেন, অজ্ঞাত রোগে মৃত্যুর ঘটনায় আতঙ্ক কাটছে না। প্রাণ ভয়ে আত্মীয় স্বজনের বাড়িতে পাড়ি জমাচ্ছে অনেক পরিবার। মেডিকেল টিম আতঙ্কিত না হওয়ার অনুরোধ করছেন সাধারণ মানুষকে।
ইউপি চেয়ারম্যান আরও বলেন, অজ্ঞাত রোগের মূল কারণ বের হয়ে আসলে সাধারণ মানুষের মনে স্বস্তি ফিরে আসবে।
বালিয়াডাংঙ্গী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাসুদুর রহমান জানান, প্রশাসনের পক্ষ থেকে ওই এলাকায় সার্বিকভাবে তদারকি নেওয়া হচ্ছে। এলাকায় স্কুল-কলেজ ও সাধারণ মানুষর চলাফেরা স্বাভাবিক রয়েছে। অনেকে রোগে আক্রান্তের ভয়ের কারণে স্কুলে উপস্থিতির সংখ্যা কম হতে পারে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
ঠাকুরগাঁওয়েরর ভারপ্রাপ্ত সিভিল সার্জন ডা: শাহাজাহান নেওয়ার বলেন, মেডিকেল টিম কাজ শুরু করেছে। আরও একটি টিম রাজশাহী থেকে আসবেন আজই। সকল নমুনা সংগ্রহ করে ল্যাবে পাঠানোর পর বলা যাবে আসলে কোন রোগে আক্রান্ত ওই ৫ জন মারা গেছে।
যেহেতু ৩ দিন পার হয়ে যাওয়ার পরেও কেউ আক্রান্ত হয়নি সেহেতু এটি কোন ভাইরাস হতে পারে না বলে ধারনা করছেন চিকিৎসকরা। কারণ ভাইরাস প্রতিনিয়ত বিস্তার লাভ করে। আতংঙ্কিত না হওয়ার জন্য এলাকাবাসীকে পরামর্শ দেন সিভিল সার্জন।
বালিয়াডাঙ্গিতে ৯ ফেব্রুয়ারি থেকে ১৫ দিনের মধ্যে অসুস্থতায় মারা যান ৫ জন। আর ৭ জন অসুস্থ হয়ে রংপুর মেডিকেলে চিকিৎসাধীন।
বিডি প্রতিদিন/ফারজানা