শ্রীবরদী উপজেলায় ফসলি জমি বাঁচাতে এবং লোকালয়ে গড়ে তোলা ইটভাটা বন্ধের দাবি জানিয়ে মঙ্গলবার অভিনব প্রতিবাদ জানিয়েছে এলাকাবাসী। তারা সবুজ ফসলের মাঠ বাঁচাতে ক্ষেতের পাশে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে প্রতিকী প্রতিবাদ করেছেন। মঙ্গলবার বিকেলে উপজেলার জালকাটা গ্রামে এ প্রতীকী প্রতিবাদ করা হয়।
জানা গেছে, এ উপজেলায় ফসলি জমিতে একের পর এক ইটভাটা স্থাপন করে ইট পোড়ানো হচ্ছে। এতে নিরব রয়েছে স্থানীয় প্রশাসন। অভিযোগ উঠেছে প্রশাসনকে ম্যানেজ করে এসব ইট ভাটা চালিয়ে যাচ্ছেন মালিকরা।
সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র ও প্রশাসনের অনুমতি ছাড়াই সম্প্রতি শ্রীবরদীর জালকাটা এলাকায় ফসলি জমি ও লোকালয়ে ‘রাজু ব্রিকস’ নামে একটি ইটভাটা স্থাপন করে ইট পোড়ানো হচ্ছে। ইট ভাটা স্থাপনের সময় এলাকাবাসী পরিবেশ দূষণ, ফসলি জমি ও ফসল ক্ষতিগ্রস্ত, সদ্যনির্মিত শ্রীবরদী-জালকাটা-গিলাগাছা পাকা সড়কটি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা এবং ইটভাটার আশেপাশে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থাকায় উক্ত ইট ভাটাটির নির্মাণ কাজ বন্ধের দাবিতে জেলা প্রশাসকসহ প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগও করেন।
গত বছরের ৪ নভেম্বর অননুমোদিতভাবে ইটভাটা নির্মাণের অভিযোগে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী হাকিম সেঁজুতি ধর ‘রাজু ব্রিকসে’ ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন। ওই সময় তিনি ১০ হাজার টাকা জরিমানা ও ইট ভাটাটির নির্মাণকাজ বন্ধের নির্দেশ দিলেও অদৃশ্য কারণে ওই ইটভাটা নির্মাণ বন্ধ না হয়ে ইট ভাটায় এখন ইট পোড়ানো হচ্ছে।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, ১৯৮৯ সালের ইট পোড়ানো (নিয়ন্ত্রণ) আইনের ৪ এর ১ ধারায় সুস্পষ্ট উল্লেখ আছে, ‘লাইসেন্স ব্যতীত কোন ব্যক্তি ইটের ভাঁটা স্থাপন করতে পারবেন না বা ইট প্রস্তুত বা ইট পোড়াতে পারবেন না।’ ওই আইনে আরও বলা হয়েছে, ‘মিউনিসিপ্যালিটি, আবাসিক এলাকা ও ফলের বাগান হতে তিন কিলোমিটার দূরত্বের মধ্যে কোন ভাটা স্থাপন করার লাইসেন্স প্রদান করা যাবে না।’
এবিষয়ে শ্রীবর্দী উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা সেজুতি ধর বলেন, অভিযোগ পেয়েছি। রাজু ব্রীকস এর মালিককে ডাকা হয়েছে। তার কি কাগজপত্র আছে তা দেখা হবে। এছাড়া শুধু রাজু ব্রীকসই নয় অন্যান্য ইটভাটার বিষয়ে খোঁজখবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এবিষয়ে জেলা প্রশাসক আনারকলি মাহবুব সাংবাদিকদের জানায়, বিষয়টি দ্রুত তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নেয়ার জন্য স্থানীয় প্রশাসনকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল