সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার গলাদিয়া গ্রামে সেনাবাহিনী ও যুবলীগের ইউপি চেয়ারম্যান সমর্থক সন্ত্রাসীদের গোলাগুলির ঘটনার পর গুলিবিদ্ধ একজনের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। রবিবার বিকালে সন্ত্রাসীদের কাছ থেকে অস্ত্র উদ্ধার করতে গেলে সেনাবাহিনী ও অস্ত্রধারীদের মধ্যে গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। পরে ঘটনাস্থলে আবু সাঈদ নামের স্থানীয় এক রাজমিস্ত্রির লাশ পাওয়া যায়। আবু সাঈদ (৩০) দিরাই উপজেলার কুলঞ্জ ইউনিয়নের তারাপাশা গ্রামের তাজ মিয়ার ছেলে। জগন্নাথপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাহফুজ ইমতিয়াজ ভূঁইয়া একজনের লাশ পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, বুকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় একজনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। তবে কার গুলিতে তিনি নিহত হয়েছেন সেটি নিশ্চিত হওয়া যায়নি। লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।
আইএসপিআর যা জানিয়েছে : এদিকে গতকাল রাতে ওই ঘটনা সম্পর্কে আন্তবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) জানিয়েছে, সুনামগঞ্জ জেলার দিরাই উপজেলার কুলঞ্জ ইউনিয়নে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে স্থানীয় রাজনৈতিক দলের দুইপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ, গোলাগুলি ও অস্ত্রের মহড়া চলতে থাকায় জননিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়ে। এই প্রেক্ষাপটে গত ২২ জুন কুলঞ্জ ইউনিয়নের হাতিয়া গ্রামে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর নেতৃত্বে একটি যৌথ অভিযান পরিচালিত হয়। অভিযান চলাকালে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান একরার হোসেন সমর্থিত সন্ত্রাসীরা সেনাবাহিনীর উপস্থিতি টের পেয়ে নৌকাযোগে পালানোর চেষ্টা করে। সেনাবাহিনীর টহল দল ধাওয়া করলে সন্ত্রাসীরা পার্শ্ববর্তী গাদিয়ালা গ্রামে প্রবেশ করে এলোপাতাড়ি গুলি চালাতে থাকে। একপর্যায়ে সন্ত্রাসীরা সেনাবাহিনীকেও লক্ষ্য করে গুলি চালালে আত্মরক্ষার্থে সেনাবাহিনী পাল্টা গুলি চালায় ও সন্ত্রাসীদেরকে প্রতিহত করে। পরে তল্লাশি অভিযান পরিচালনা করে যৌথবাহিনীর টহল দল ঘটনাস্থল থেকে মো. আবু সাঈদ (৩৫) নামের এক ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করে। এ ছাড়াও চার সন্ত্রাসী তাজউদ্দীন, আমির উদ্দিন, হিরণ মিয়া ও জমির মিয়াকে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তারদের স্বীকারোক্তি ও তথ্যের ভিত্তিতে তাদের বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে একটি একনলা বন্দুক, চারটি পাইপগান, এক রাউন্ড তাজা গুলি, ছয়টি বুলেট প্রুফ জ্যাকেট এবং বেশ কিছু দেশীয় ধারালো অস্ত্র উদ্ধার করা হয়। আইএসপিআর জানিয়েছে, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী সর্বদা সাধারণ জনগণের জান-মালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বদ্ধপরিকর। আইন-বহির্ভূত যে কোনো কার্যকলাপ সম্পর্কে তথ্য প্রদান করতে সংশ্লিষ্ট সবাইকে নিকটের সেনা ক্যাম্প বা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে জানানোর জন্য অনুরোধ জানানো যাচ্ছে।