গাজীপুরের কাশিমপুর হাইসিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত তিন আসামি পালানোর চেষ্টা করায় তাদের আলাদা সেলে স্থানান্তর করা হয়েছে। এ ঘটনায় জিএমপির কোনাবাড়ী থানায় মামলা দায়ের করেছে কারা কর্তৃপক্ষ।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে কারাগারের জেলার আসাদুর রহমান বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন।
আসামিরা হলেন—টাঙ্গাইল সদর থানার চৌবাড়িয়া এলাকার শাহাদাত হোসেন (বন্দি নং- ৫৫১১), জয়পুরহাটের পাঁচবিবি থানার মাঝিনা এলাকার রনি মহন্ত (বন্দি নং- ৬৩৮৮) এবং কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারী থানার দিয়াডাঙ্গা এলাকার নজরুল ইসলাম (বন্দি নং- ৬৩৯৪)।
আসামিরা সবাই মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত এবং মামলায় অভিযুক্ত বলে নিশ্চিত করেছেন কোনাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সালাহউদ্দিন।
মামলার এজাহার ও অন্যান্য সূত্র জানায়, কারাগারের মাঝামাঝি স্থানে অবস্থিত 'তমাল' ভবনের ১২ নম্বর কক্ষে কয়েকজন ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত বন্দি ছিলেন। গত ৫ আগস্ট রাত সোয়া ৮টার দিকে দায়িত্বে থাকা সহকারী প্রধান কারারক্ষী মোখলেছুর রহমান ওই কক্ষ থেকে দেয়ালে আঘাতের শব্দ পান। পরদিন সকালে তল্লাশিতে একটি লোহার পাত, দুটি রড, কম্বল কেটে বানানো ২৮ ফুট লম্বা রশি, ২৫ ফুট লম্বা বেল্ট, লোহার তৈরি দুটি আংটা, ১০ ফুট লম্বা একটি খুঁটি ও অন্যান্য উপকরণ উদ্ধার করে জব্দ করা হয়।
জিজ্ঞাসাবাদে বন্দিরা স্বীকার করেন, পালানোর প্রস্তুতি হিসেবে এসব উপকরণ সংগ্রহ করেছিলেন। সূত্র জানায়, মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ওই তিন আসামি সুযোগের অপেক্ষায় ছিলেন এবং গত বছরের ৫ আগস্টের মতো পরিস্থিতি সৃষ্টি হলে পালানোর পরিকল্পনা করেছিলেন। গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে দেশের সব কারাগারে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।
ওসি মো. সালাহউদ্দিন বলেন, এজাহার পর্যালোচনায় দেখা গেছে, এটি অন্তর্ঘাতমূলক কাজ এবং সরকারি প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম ব্যাহত করার উদ্দেশ্যে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা চেষ্টা ও সহযোগিতা করেছে। সেই ধারায় মামলা রুজু হয়েছে। আসামিদের পুলিশ হেফাজতে এনে জিজ্ঞাসাবাদসহ তদন্ত চলছে।
গাজীপুরের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট সালমা খাতুন জানান, জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও জেলা প্রশাসককে অবহিত করার পর কারাগার পরিদর্শন করা হয়েছে। অভিযুক্ত বন্দিদের অন্য সেলে স্থানান্তর করা হয়েছে এবং বর্তমানে কারাগারের পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।
বিডি প্রতিদিন/জুনাইদ