রাজধানীর কাফরুলে সুমি আক্তার (২১) নামে এক নারীকে হত্যার অভিযোগে তার সাবেক স্বামী মো. শফিকুল ইসলাম কাজীকে (২৬) গ্রেফতার করেছে কাফরুল থানা-পুলিশ।
নারায়ণগঞ্জ জেলার বন্দর থানার কলাগাছিয়া এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। ঢাকা মহানগর পুলিশের মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
কাফরুল থানার বরাত দিয়ে তালেবুর রহমান বলেন, গত ১৯ এপ্রিল ভিকটিম সুমি আক্তার (২১) ও মো. শফিকুল ইসলাম কাজী বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। দাম্পত্য জীবনে তাদের পাঁচ বছর বয়সী একটি ছেলে সন্তান রয়েছে। পারিবারিক কলহের কারণে চলতি বছরের (৩০ জুন) সুমি আক্তার তার স্বামীকে তালাক দেয়। তালাকের পরও উভয়ে পাশাপাশি বাসায় বসবাস করতো এবং তাদের মধ্যে তালাক নিয়ে বিরোধ চলছিল। তাদের একমাত্র সন্তান বাবার কাছে থাকতো এবং সুমি আক্তার মাঝে মধ্যে খাবার নিয়ে গিয়ে সন্তানকে খাইয়ে দিতেন। ২১ জুলাই সন্ধ্যা আনুমানিক ৭টার দিকে কাফরুল থানার বাইশটেকি, ইমামনগর এলাকায় সুমি আক্তার যথারীতি ছেলের জন্য খাবার নিয়ে তার সাবেক স্বামীর বাসায় যান এবং সন্তানসহ একসাথে রাতের খাবার খান। রাত আনুমানিক ৩টার দিকে শফিকুল রুমে তালা দিয়ে ছেলেকে নিয়ে বাসা থেকে বের হওয়ার চেষ্টা করলে ছেলে কান্নাকাটি করতে থাকে।
তিনি আরও জানান, এসময় তাদের প্রতিবেশী সামিয়া আক্তার ও তার স্বামী রাসেল দেখেন শফিকুল তার ছেলেকে রেখে চাবি নিয়ে পালিয়ে যাচ্ছেন। প্রতিবেশীরা তখন বাসার মালিক মো. হায়দার আলীকে ডেকে আনেন কিন্তু শফিকুলের কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি। পরদিন (২২ জুলাই) সকাল আনুমানিক ৯টার দিকে উপস্থিত লোকজনের সামনে বাসার মালিক শফিকুলের বাসার তালা ভেঙে প্রবেশ করে দেখেন যে লাল-সাদা প্লাস্টিকের বস্তায় ঢাকা অবস্থায় সুমি আক্তারের লাশ খাটের নিচে পড়ে আছে এবং গলায় ওড়না পেঁচানো রয়েছে। তাৎক্ষণিক কাফরুল থানায় খবর দেওয়া হলে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে মরদেহের সুরতহাল প্রতিবেদন প্রস্তুত করে এবং ময়নাতদন্তের জন্য শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়।
মুহাম্মদ তালেবুর রহমান বলেন, এ ঘটনায় ডিএমপি কাফরুল থানায় একটি হত্যা মামলা হয়। মামলার পরিপ্রেক্ষিতে শনিবার (৯ আগস্ট) রাত আনুমানিক আড়াইটার দিকে কাফরুল থানার একটি অভিযান দল মদনগঞ্জ নৌ-পুলিশের সহায়তায় নারায়ণগঞ্জ জেলার বন্দর থানার কলাগাছিয়া এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে শফিকুলকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতার শফিকুলকে আদালতে হাজির করা হলে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।
বিডি-প্রতিদিন/আব্দুল্লাহ