যুক্তরাষ্ট্রের সাম্প্রতিক ইরানবিরোধী হামলার বিরুদ্ধে দেশটির অভ্যন্তরে ব্যাপক জনরোষ সৃষ্টি হয়েছে। ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় মার্কিন বিমান হামলার পর রবিবার যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন শহরে হাজারো সাধারণ মানুষ রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ জানায়। ভেটেরানস ফর পিস সংগঠনের সদস্য রেইন বোরো বলেন, ‘মার্কিন জনগণের সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশ ইরানের সঙ্গে যুদ্ধ চায় না।’ মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন জানায়, বিক্ষোভকারীরা মনে করছেন এ হামলা শুধু আগাম যুদ্ধের ইঙ্গিত নয়, বরং দেশের ভিতরের সমস্যাগুলো থেকে জনগণের মনোযোগ সরানোর কৌশলও হতে পারে। গতকাল সিএনএনের প্রতিবেদনে বলা হয়, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্দেশে চালানো হামলার প্রতিবাদে লসঅ্যাঞ্জেলেস থেকে নিউইয়র্ক, বস্টন থেকে সান ফ্রান্সিসকো পর্যন্ত বিভিন্ন শহরে ‘ইরান থেকে হাত সরাও’, ‘চাকরি চাই, যুদ্ধ নয়’ স্লোগান দিয়ে রাস্তায় নামেন বিক্ষোভকারীরা। প্রতিবাদকারীদের একটি বড় অংশ ইরানি বংশোদ্ভূত আমেরিকান, যারা এ হামলার সরাসরি প্রভাব নিয়ে উদ্বিগ্ন। এক তরুণ বলেন, ‘আমার পরিবার ইরানে, ওদের শহরে বোমা পড়ছে। এটা শুধু রাজনৈতিক নয়, আমার ব্যক্তিগত বিষয়ও।’
নিউইয়র্কের মিডটাউনে শতাধিক বিক্ষোভকারী ‘হ্যান্ডস অব ইরান’ লেখা প্ল্যাকার্ড হাতে শান্তিপূর্ণ মিছিল করেন। আয়োজক ইভেট ফেলারকা সতর্ক করে বলেন, ‘এ পরিস্থিতি যদি এভাবেই চলতে থাকে, তাহলে তা বিশ্বযুদ্ধ ডেকে আনতে পারে।’ একই দিনে বস্টন কমন পার্কে শতাধিক মানুষ একত্রিত হয়ে শহরের সিটি হল পর্যন্ত মিছিল করেন। অংশগ্রহণকারীরা বলেন, ‘যখন সাধারণ মানুষ বাসাভাড়া, শিক্ষা ও চিকিৎসার জন্য লড়ছে, তখন সরকার কোটি কোটি ডলার খরচ করছে অপ্রয়োজনীয় যুদ্ধের জন্য।’
সান ফ্রান্সিসকোর মার্কেট স্ট্রিট, ওরেগনের বেন্ড এবং ভার্জিনিয়ার রিচমন্ড শহরেও বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ সময় অনেকেই ট্রাম্পের বিরুদ্ধে নির্বাচনি প্রতিশ্রুতি ভঙ্গের অভিযোগ আনেন। কারণ নির্বাচনি প্রচারে ট্রাম্প বলেছিলেন, তিনি বিদেশে আর কোনো নতুন যুদ্ধ শুরু করবেন না। অথচ এখন যুদ্ধের পথে হাঁটছেন। এক ইরানি বংশোদ্ভূত অ্যাকটিভিস্ট বলেন, ‘আমার আত্মীয়রা ইরানে আছে। ওদের নিরাপত্তা নিয়েই এখন আমাদের সবচেয়ে বেশি চিন্তা।’ ওরেগনের বেন্ড শহরে আয়োজিত প্রতিবাদে স্থানীয় বাসিন্দারা কংগ্রেসের অনুমতি ছাড়াই ইরানে হামলার সিদ্ধান্ত নেওয়ার কারণে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে প্রশ্ন তোলেন। আয়োজক ফ্রেডি ফিনি-জোর্ডেট বলেন, ‘শুধু ট্রাম্প নন, অতীতের অনেক প্রেসিডেন্টই নির্বাহী ক্ষমতার অপব্যবহার করেছেন।’ অন্যদিকে, রিচমন্ড শহরে ভেটেরানস ফর পিস সংগঠনের সদস্য রেইন বোরো বলেন, ‘মার্কিন জনগণের সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশ ইরানের সঙ্গে যুদ্ধ চায় না।’