ফেনীতে মাদ্রাসা ছাত্রী নুসরাতের গায়ে আগুন দিয়ে হত্যা চেষ্টার ঘটনায় স্তব্দ হয়ে পড়েছে মাদ্রাসার শিক্ষার্থীসহ অভিভাবকরা। দিনে দুপুরেই পরীক্ষা কেন্দ্রে এভাবে গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন দেয়ার ঘটনা কিছুতেই মানতে পারছেনা তারা। সহপাঠিদের দাবি নুসরাত ছিলো শান্ত প্রকৃতির মেয়ে, তবু কেন এমন বর্বর ও নেক্কারজনক হত্যাচেষ্টা?
সংশ্লিষ্ট খবর: লাইফ সাপোর্টে আগুনে ঝলসে দেওয়া ফেনীর সেই মাদ্রাসাছাত্রী
ঘটনার তিনদিন পর সোমবার দুপুর সাড়ে ৩টায় নুসরাতের বড় ভাই মাহমুদুল হাসান নোমান বাদী হয়ে সোনাগাজী মডেল থানায় অজ্ঞাত ৪ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেছেন। ফেনীর পুলিশ সুপার এসএম জাহাঙ্গীর আলম সরকার জানান, ঘটনার সাথে জড়িত থাকার সন্দেহে এই পর্যন্ত ৭ জনকে আটক করা হয়েছে।
এদিকে সোমবার সকালে সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসায় আলিম পরীক্ষা কেন্দ্রে পরীক্ষা দিতে আসা শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানান। তারা অবিলম্বে দোষীদের গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন।
সংশ্লিষ্ট খবর: দগ্ধ সেই মাদ্রাসাছাত্রীকে সিঙ্গাপুর নিতে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ
এ ঘটনায় প্রথম দিন আটক মাদ্রাসার ইংরেজি বিভাগের প্রভাষক আবছার উদ্দিন ও ছাত্র আরিফুল ইসলামকে ৫৪ ধারায় আটক দেখিয়ে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। রবিবার রাতে ও সোমবার দিনে আরো ৫ জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে আসা হয়েছে।
এই ঘটনায় তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। ১৬ এপ্রিল পর্যন্ত মাদ্রাসায় কোন শ্রেণি কার্যক্রম চলবে না শুধুমাত্র পরীক্ষা চলবে বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। মাদ্রাসার অধ্যক্ষকে যে দিন ঘটনা ঘটেছে সেদিন থেকে সাসপেন্ড করা হয়েছে।
নাম প্রকাশ করতে অনিচ্ছুক স্থানীয়রা জানায়, মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির বিভেদের কারণে এক পক্ষ অধ্যক্ষের পক্ষে ও অপর পক্ষ নুসরাতের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে। তারা জানান, মাদ্রাসার অধ্যক্ষ জামায়াতের রুকন।
বর্তমানে ওই ছাত্রী ঢাকা মেডিকেল কলেজের বার্ন ইউনিটে আইসিইউতে লাইফ সাপোর্টে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। আগুনে তার শরীরের ৮০ শতাংশ পুড়ে গেছে।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল