বান্দরবানের লামা উপজেলায় চাঁদা না দেওয়ায় মো. খালেকুজ্জামান নামে এক স্কুল শিক্ষকের বসতবাড়ি পুড়িয়ে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। উপজেলার রুপসীপাড়া ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের হাফেজ পাড়ায় গতকাল দিবাগত রাতে এ ঘটনা ঘটে। মো. খালেকুজ্জামান হাফেজ পাড়ার আব্দুল লতিফের ছেলে। তিনি বলেন, গত ৩ ফেব্রুয়ারি আমার কাছে উড়োচিঠি দিয়ে সাড়ে তিন লাখ টাকা চাঁদা দাবি করা হয়। চিঠিতে বেঁধে দেওয়া সময়ের মধ্যে চাঁদার টাকা না দেওয়ায় বসতবাড়িটি পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।
তিনি জানান, দুর্বৃত্তরা পেট্রল বা কেরোসিন দিয়ে অগ্নিসংযোগ করেছে। আমরা কিছু বুঝে উঠার আগেই কয়েক মিনিটের বসতঘরটি সম্পূর্ণ পুড়ে যায়।
ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের পক্ষে আব্দুল মালেক ক্ষয়ক্ষতি ১৫ লক্ষ টাকা বলে দাবি করেছেন। আগুনে ৫ টন ধান ৮ বস্তা চালসহ ঘরের অন্যান্য জিনিসপত্র পুড়ে যায়।
একই এলাকার বাসিন্দা চনুমং মার্মার কাছে দেড় লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে উঠোচিঠি দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, আমি আমার পরিবার নিয়ে আতংকে আছি। আমি প্রশাসনের কাছে নিরাপত্তা দাবি করছি। ঘটনাস্থল পুলিশ ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধি পরিদর্শন করেছে। ঘটনার পর এলাকায় জনসাধারণের মধ্যে আতংক বিরাজ করছে।
গত এক মাসে মাস্টারপাড়া, হাফেজপাড়া ও বৈদ্য ভিটায় ১২টির বেশি বাড়িঘর দুর্বৃত্তরা আগুনে পুড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছে বলে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার আবু তাহের ও মো. শফিউল আলম জানিয়েছেন। রুপসীপাড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ছাচিং প্রু মার্মা বলেন, ঘটনাটি দুঃখজনক। আমরা আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সহায়তা কামনা করছি। পাশাপাশি এলাকার লোকজনের মাধ্যমে ১৮টি গ্রুপ করে দিয়েছি। তারা ধারাবাহিকভাবে প্রতি রাতে পাহারা দেবে।
লামা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) অপ্পেলা রাজু নাহা বলেন, অপরাধীদের ধরতে আমরা তৎপর। এসব সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড কঠোর হাতে দমন করা হবে। কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। চাঁদা দাবি ও আগুন লাগিয়ে বাড়িঘর পুড়িয়ে দেওয়া অপরাধীদের যেকোনো মূল্যে গ্রেফতার করা হবে।
লামা উপজেলা চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল বলেন, আতংকিত হওয়ার কিছু নেই। আমরা প্রশাসনকে সঙ্গে নিয়ে স্থানীয় সবার সহায়তায় সকলের নিরাপত্তার জন্য কাজ করছি।
বিডি প্রতিদিন/আল আমীন