কয়েকদিনের অবিরাম টানা বৃষ্টিতে দিনাজপুরসহ বিভিন্ন উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। জেলার প্রধান তিনটি নদীর পানি বিপদসীমা ছুঁই ছুঁই করছে। বন্যার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। বৃষ্টি অবিরাম থাকলে পানি বেড়ে শনিবার সকালের মধ্যে বিপদসীমা অতিক্রম করবে বলে আশঙ্কা করেছেন পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) কর্মকর্তা। তবে আর বৃষ্টিপাত না হলে পানি দ্রুত নেমে যাবে বলে জানায় পানি উন্নয়ন বোর্ড।
এদিকে করোনার এই সময়ে টানা বৃষ্টিতে কোন কাজ কর্ম করতে না পেরে অচল হয়ে পড়েছে দিনমজুর ও শ্রমিক পরিবারগুলো। দুর্ভোগে পড়েছে শ্রমজীবি মানুষ। টানা বৃষ্টির কারনে শহরের দোকান পাট অধিকাংশ বন্ধ রয়েছে, বিশেষ কাজ ছাড়া বাড়ির বাহিরে বের হচ্ছে না কেউ।
কয়েকদিনের অবিরাম টানা বর্ষণে দিনাজপুর সদরের মাঝাডাঙ্গাসহ আশপাশের গ্রাম, বাঙ্গীবেচা ঘাট এলাকা, সাধুর ঘাট এলাকা, দপ্তরীপাড়া, হঠাৎপাড়ার নিচু এলাকা প্লাবিত হয়েছে। ফুলবাড়ী উপজেলার রাজারামপুর, সুজাপুর, খয়েরবাড়ী ও বেতদিঘি, বিরল উপজেলাসহ আরো কয়েকটি উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। কিছু জায়গায় ডুবে গেছে ফসলের ক্ষেত। আগাম তৈরি করা আমন ধানের বীজতলা তলিয়ে গেছে অনেকের। কাহারোল উপজেলার ডাবুর ইউপির বলেয়া ও রসুলপুর ইউপির ভেলোয়া গুচ্ছ গ্রামগুলোর চারিদিকে নিম্নাঞ্চল পানিতে তলিয়ে গেছে। এতে সাধারন নিম্ন আয়ের মানুষ পড়েছে দুর্ভোগে। বৃহস্পতিবার বিকেলে দিনাজপুরের কাহারোল উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত এলাকা পরিদর্শন করেছেন স্থানীয় (বীরগঞ্জ-কাহারোল) সংসদ সদস্য মনোরঞ্জন শীল গোপাল।
দিনাজপুর পাউবোর পানি বিজ্ঞান উপ-বিভাগের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. ইলিয়াস হোসেন জানান, শুক্রবার বিকাল ৩টায় দিনাজপুর জেলার উপর দিয়ে প্রবাহিত পুনর্ভবা নদীতে পানির স্তর রয়েছে ৩২.৪৭০ মিটার এর বিপদসীমা ৩৩.৫০০ মিটার, আত্রাই নদীতে ৩৮.৭৫০ মিটার এর বিপদসীমা ৩৯.৬৫০ মিটার ও ইছামতি নদীতে ২৭.৯৫০ মিটার এর বিপদসীমা ২৯.৯৫০ মিটার। তবে যদি অবিরাম বৃষ্টি হয় তাহলে শনিবার সকালের মধ্যে কোন নদীর পানি বিপদসীমা অত্রিক্রম করতে পারে। আর বৃষ্টিপাত না হলে পানি দ্রুত নেমে যাবে বলেও জানান তিনি।
দিনাজপুর আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তোফাজ্জল হোসেন জানান, শুক্রবার সকাল ৬টা থেকে দুপুর ৩টা পর্যন্ত দিনাজপুরে ১৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। আগামী তিনদিন এই বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকবে।
উল্লেখ্য, জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তাদের বন্যা ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ সম্পর্কে প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এজন্য জেলা প্রশাসনের ত্রাণ ভান্ডারে মজুদ রাখা হয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণ খাদ্য। এছাড়াও আগামী রবিবার আরও ত্রাণ চেয়ে মন্ত্রণালয়ে ফ্যাক্সবার্তা পাঠানো হবে জানায় দিনাজপুর জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা এবিএম আকরাম হোসেন।
বিডি প্রতিদিন/ ওয়াসিফ