তীব্র শীত ও ঘন কুয়াশার কারণে বাগেরহাট জেলার পান বরজগুলোতে দেখা দিয়েছে নানা রোগ। গত অক্টোবর মাসে ভারী বর্ষণের পর সৃষ্ট বন্যায় জেলার পান বরজ প্লাবিত হয়েছিল। সে ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে না উঠতেই পান গাছের পাতা হলুদ হয়ে ঝড়ে পড়া ও পাতাপচা রোগসহ ছত্রাকের আক্রমণে বিপাকে পড়েছে জেলার পান চাষিরা।

এ অবস্থায় জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে জেলা কৃষকদের পরামর্শ দেওয়ার পাশাপাশি বিভিন্ন ছত্রাক নাশক ওষুধ প্রয়োগের কথা বলা হচ্ছে। তবে কৃষকরা বলছে, ঘন কুয়াশার কারণে বরজে ওষুধ ছিটিয়েও কোনো সুফল পাচ্ছে না তারা।

বাগেরহাট সদর উপজেলার কাড়াপাড়া ইউনিয়নের দেওয়ানবাটি গ্রামের মানিক পাল বলেন, ‘সমিতি থেকে টাকা তুলে ১৫ কাঠা জমিতে পানের বরজ করিছি। কয়েক মাস আগে যে বৃষ্টি হইলো, তাতে আমার বরজও ডুবে গেইলো। সে সমস্যা যাতি না যাতি কয়েকদিন ধইরে যে ঠান্ডা পড়ছে, তাতে পানের পাতা সব হলুদ হয়ে ঝইড়ে পড়ছে। এত কুয়াশার কারণে পান গাছের পাতায় কালা কালা দাগ পইরে হলুদ হয়ে যাচ্ছে। এখন আমি কী করবো, সমিতির কিস্তির টাহাই বা দেবো কিরাম করে।’
 
একই গ্রামের আমিরুল ইসলাম মিন্টু বলেন, ‘প্রতি বছরই শীতের সময় কমবেশি পান গাছের পাতা ঝইড়ে পড়ে। কিন্তু এবার শীত একটু বেশি পড়তিছে, সাথে আবার কুয়াশা। আমার বরজের পানও হলুদ হতি শুরু করিছে সাথে পোকের কারণে গাছের মাঝ থেকে ঢইলে পড়তিছে। উপজেলা থেকে একজন কৃষি অফিসার আসিলো, বরজ সে দেইখে গেছে। ওষুধ দিছে, তা ছিটাইয়ে দিছি, সাথে বরজের উপরে নেট জাল দিয়ে দিছি, যাতে ভেতরে কুয়াশা না ঢুকতি পারে। এরপরও কাজ হচ্ছে না।’ 

বাগেরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক সঞ্জয় কুমার দাস বলেন, শীত মৌসুমে কুয়াশার কারণে পান পাতা হলুদ হয়ে ঝড়ে পড়াসহ ছাত্রাকের আক্রমণ দেখা দেয়। শীতের তীব্রতা ও কুয়াশার পরিমাণ বৃদ্ধির সাথে সাথে এ সমস্যাগুলো বাড়তে থাকে।

এসময় পান পাতায় ছত্রাকজনিত কালো দাগও দেখা যায়। তবে এ সমস্যা সমাধানে আমরা কৃষকদের বরজের ভেতরে কুয়াশা যাতে না ঢুকতে পারে সে জন্য পলিথিন বা নেটজাল দিয়ে ছাউনি দেওয়ার পরামর্শ দিচ্ছি। এছাড়া বরাজে ছত্রাকের আক্রমণ রুখতে কৃষকদের নিয়মিত ছত্রাকনাশক ওষুধ স্প্রে করার পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।

বিডি প্রতিদিন/এমআই