বোন জামাই মফিজ ব্যাপারী শ্রবণ প্রতিবন্ধী, বোন মোর্সেদা এবং ভাই জসিম উদ্দিন শারীরিক প্রতিবন্ধী। এরা জন্মগতভাবে কেউ প্রতিবন্ধী ছিলেন না। বয়স বাড়ার সাথে সাথে তিনজনের শরীরে দেখা দেয় নানা ধরণের সমস্যা। কুয়াকাটার খাজুরা গ্রামের জরাজীর্ণ একটি ঘরে তাদের বসবাস। অভাবের সংসার হলেও কখনো সাহায্যের জন্য করো কাছে হাত পাতেননি পরিবারটি। তবে সরকারের দেয়া প্রতিবন্ধী কার্ডের সুবিধা পেয়ে তারা খুশি।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, একই পরিবারের মোট ছয় জনের মধ্যে তিনজনই প্রতিবন্ধী। জসিম উদ্দিনের স্ত্রী এবং ছেলে মেয়ে রয়েছে। কিন্তু মফিজ ব্যাপারী এবং মোর্শেদা নিঃসন্তান। শারীরিক প্রতিবন্ধী দু’জন অন্যের সহযোগীতা ছাড়া ঘরের এক মেঝে থেকে অন্য মেঝেতে চলাচল করতে পারে না।
জসিম ব্যাপারীর ভগ্নিপতি শ্রবণ প্রতিবন্ধী মফিজ ব্যাপারী বলেন, তার আয় দিয়ে ছয়জনের সংসার চলে। ‘কাজ একদিন পাইলে আবার দুইদিন পাইনা। যেদিন কাজ পাই হ্যাই দিন মোরা খাইতে পারি। যেদিন কাজ পাইনা হ্যাই দিন না খাইয়া থাহা লাগে। কানে শুনতে পাইনা। তাই পরিচিত ছাড়া অন্য কেউ কাজ দেয় না।’
শারীরিক প্রতিবন্ধী বড় ভাই জসিম ব্যাপারী বলেন, আমি এবং আমার বোন মোর্শেদা প্রতিবন্ধী। কষ্ট করে বেঁচে থাকার চেষ্টা করেছি। আমার দুইটি সন্তান। ছেলেটা কুয়াকাটা বঙ্গবন্ধু স্কুলে সেভেনে পড়ে। আর মেয়েটা মাদ্রাসায় ষষ্ঠ শ্রেণীর ছাত্রী। শত কষ্টের মধ্যেও ওদের লেখা পড়া চালিয়ে নিচ্ছি।
কুয়াকাটা বঙ্গবন্ধু মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. খলিলুর রহমান বলেন, প্রতিবন্ধী জসিম উদ্দিন সম্পর্কে আমি জানি। কিন্তু তার সন্তান বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী। এই শিক্ষার্থীর লেখাপড়ার জন্য বিদ্যালয়ে কোন টাকা দিতে হবে না বলে তিনি সাংবাদিকদের জানিয়েছেন।
কুয়াকাটা মেয়র আনোয়ার হোসেন হাওলাদার জানান, পৌরসভার পক্ষ থেকে তাদেরকে সকল ধরনের সহযোগিতা করা হবে।
কলাপাড়া উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মো.মিজানুর রহমান জানান, কুয়াকাটায় ওই পরিবারের তিনজনই প্রতিবন্ধী ভাতা পান। আর সরকারের পক্ষ থেকে প্রতিবন্ধীদের জন্য ঋণ কার্যক্রমের আওতায় তাদের আনার জন্য চেষ্টা করবো।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল