নরসিংদীতে শাহিন মিয়া নামে এক ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ নেতাকে আদালতের সামনে থেকে অপহরণের ঘটনা ঘটেছে। পরে বিকাশের মাধ্যমে মুক্তিপণের টাকা আদায়ের পর ছেড়ে দেয়া হয়। এ ঘটনায় রবিবার রাতে থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী আলোকবালী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের কৃষি বিষয়ক সম্পাদক শাহিন মিয়া।
অভিযোগে আলোকবালী ইউনিয়ন যুবলীগের আহ্বায়ক কমিটি সদস্য হাবিব মিয়া (৪২) ও একই এলাকার আব্দুর রউফের ছেলে মিটল মিয়া (৪০) এর নাম উল্লেখ করা হয়। এর আগে রবিবার দুপুরে নরসিংদী আদালতের ৩ নং গেইটের সামনে এ ঘটনা ঘটে।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, অভিযুক্তদের সাথে রাজনৈতিক ও আধিপত্য নিয়ে দীর্ঘদিনের বিরোধ রয়েছে। রবিবার দুপুর দেড়টার দিকে আলোকবালী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি এ্যাড. আসাদ উল্লাহর আইনজীবী সমিতির চেম্বার থেকে বের হন তিনি। পরে নরসিংদী আদালতের ৩ নং গেটের সামনে পৌঁছালে তাকেসহ একই এলাকার ধনু মিয়ার ছেলে রাহীমকে ৭-৮ জন অজ্ঞাত ব্যক্তি দুইটি সিএনজির মাধ্যমে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে মারধর করে। এসময় তাদেরকে মারধর করার সময় সন্ত্রাসীরা বারবার প্রতিপক্ষ হাবি মিয়া ও মিটল মিয়ার কথা বলছিল। তাদের দাবি ছিল, তাকে হত্যা করার জন্য ১ লাখ টাকার চুক্তি করেছে প্রতিপক্ষরা। এখন বাঁচতে চাইলে তাদেরকে দেড় লাখ টাকা দিতে হবে। পরে প্রাণ ভয়ে নিজের বিকাশ থেকে দুইটি নাম্বারে ২৫ হাজার করে ৫০ হাজার ও আরেকজনের বিকাশ থেকে ২১ হাজারসহ ৭১ হাজার টাকা দেয়া হয়। পরে তাদের বিভিন্ন হুমকি দিয়ে ছেড়ে দেয়া হয়।
আলোকবালী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও নরসিংদী জজ আদালতের আইনজীবী আসাদ উল্লাহ বলেন, আইনী সেবা নিতে শাহীন মিয়া আমার চেম্বারে এসেছিলেন। পরে ফেরার পথে যেখান থেকে তাকে জিম্বি করে তুলে নেয়া হয়। পরে তাকে দুই ঘণ্টা আটকে রেখে নির্যাতন করে টাকা পেয়ে ছেড়ে দেয়। পরে সে বাহির হয়ে জিজ্ঞাসা করলে লোকজন জানায় এটা ব্যাংক কলোনী। আমরা ঘটনার সাথে জড়িত প্রকৃত আসামিদেরকে খুঁজে বের করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার আবেদন জানাচ্ছি।
অভিযুক্ত মিটল মিয়া বলেন, আমাকে রাজনৈতিক ভাবে হয়রানী করার জন্য মিথ্যা ঘটনা সাজিয়ে ফাঁসানো হচ্ছে। আমি যদি অপহরণ করাতাম তাহলে অপহরণকারীরা কি আমার নাম বলতো। আমার স্ত্রী ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান। আমাদের মধ্যে রাজনীতির কারণে পক্ষ বিপক্ষ আছে কিন্তু কোন বিরোধ নেই। আমি চাই তদন্ত সাপেক্ষে প্রশাসন যেন প্রকৃত ঘটনা খুঁজে বের করে।
এদিকে স্থানীয়রা জানায়, এই ঘটনায় আলোকবালির আবির এবং মুরাদনগর গ্রামের সুজন নামে দুইজনকে আটক করেছে পুলিশ।
নরসিংদী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কাশেস বলেন, আমরা জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দুইজনকে থানায় নিয়ে এসেছি। রহস্য উদঘাটনে কাজ করছে পুলিশ।
বিডি-প্রতিদিন/সালাহ উদ্দীন
