দেশের মধ্যে পিয়াজ উৎপাদনে তৃতীয় অবস্থানে রাজবাড়ী। এক দিনের ব্যবধানে রাজবাড়ীতে পিয়াজের ব্যাপক দরপতন হয়েছে। রবিবার জেলার বিভিন্ন স্থানে প্রতি মণ পিয়াজ ১ হাজার ৮০০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। আজ সোমবার সকাল থেকে জেলার বিভিন্ন হাট-বাজারে ১ হাজার ৪০০ টাকা প্রতি মণ পিয়াজ বিক্রি হচ্ছে। প্রতি মণ পিয়াজে দাম কমেছে অন্তত ৪শ টাকা পর্যন্ত।
পিয়াজ উৎপাদনে রাজবাড়ীর মধ্যে সবচেয়ে বেশি পিয়াজ উৎপাদন করে বালিয়াকান্দি উপজেলার কৃষকেরা। সোমবার উপজেলার বহরপুর ইউনিয়নের আড়কান্দি ও বালিয়াকান্দি উপজেলার জঙ্গল ইউনিয়নের ঢোলজানি বাজারে পিয়াজ বিক্রি হয়। সাপ্তাহিক হাট হিসাবে বিপুল পরিমাণ পিয়াজ বিক্রি হয় এই হাটগুলোতে। এছাড়া বালিয়াকান্দির তেতুলিয়া ও নারুয়া ইউনিয়নে সাপ্তাহিক হাট বসে সোমবার। সাপ্তাহিক হাট ছাড়াও ভরা মৌসুমে প্রতিদিন সবগুলো হাটে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত পিয়াজ বিক্রি হয়।
ভোর থেকে পিয়াজের বেচাকেনা শুরু উপজেলার হাটগুলোতে। সকাল ৭টায় বালিয়াকান্দি উপজেলার আড়কান্দি বাজারে গিয়ে দেখা যায়, কয়েকশত কৃষক পিয়াজ বিক্রির জন্য পিয়াজ হাটে তুলেছেন। সেখানে প্রতি মণ পিয়াজ ১ হাজার ২০০ টাকা থেকে ১ হাজার ৪০০ টাকা বিক্রি হচ্ছে।
সকাল সাড়ে ৯টার দিকে উপজেলার ঢোলজানি বাজারে গিয়ে দেখা যায়, বাজার প্রায় শেষের পথে। এই বাজারে প্রতিমণ পিয়াজ সর্বোচ্চ ১ হাজার ৪০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়েছে। রবিবার সকালে এই হাটে ১ হাজার ৮০০ টাকা পর্যন্ত পিয়াজ বিক্রি হয়েছে।
কৃষকেরা বলেন, ভারত থেকে পিয়াজ আমদানির কারণেই মূলত পিয়াজের দাম কমেছে। একদিনের ব্যবধানে প্রতিমণ পিয়াজের দাম কমেছে ৪শ টাকা। এ বছর পিয়াজের উৎপাদন খরচ অনেক বেশি হয়েছে। বর্তমান বাজার দরে কৃষকেরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। ২ হাজার টাকা প্রতি মণ পিয়াজ বিক্রি হলে কৃষকরা লাভবান হবেন বলে কৃষকদের।
সোমবার সাকলে কথা হয় পিয়াজ ব্যবসায়ীর সাথে। তারা বলেন, বর্তমান বাজারে পিয়াজ ক্রয় করে তারাও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। গ্রামের বিভিন্ন হাট থেকে কৃষকদের কাছ থেকে পিয়াজ ক্রয় করে ঢাকায় পাঠালে কম দামে পিয়াজ বিক্রি করতে হচ্ছে।
ব্যবসায়ী আরব আলী শেখ বলেন, গতকাল ঢোলজানি বাজার থেকে ১ হাজার ৮০০ টাকা করে প্রতিমণ পিয়াজ ক্রয় করে ঢাকায় পাঠিয়েছি। আমার কয়েক গাড়ি পিয়াজে ২ লাখ টাকা ক্ষতি হয়েছে। পিয়াজের বাজার স্থিতিশীল না হলে ব্যবসা বন্ধ করে দিবেন বলে দাবি করেন তিনি।
রাজবাড়ী জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ-পরিচালক আবুল কালাম আজাদ বলেন, এই সময় পিয়াজ আমদানি না করলে পিয়াজের দাম সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে যেত। বর্তমান দামে কৃষকেরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন না। তবে ভরা মৌসুমে ভারত থেকে আর যেন পিয়াজ আমদানি করা না হয় সেই অনুরোধ করেন এই কৃষি কর্মকর্তা।
বিডি প্রতিদিন/এএ