নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার চর এলাহী ইউনিয়নে কৃষক দলের সমাবেশে দুর্বৃত্তদের হামলা–ভাঙচুরে ইউনিয়ন কৃষক দলের সমাবেশ পণ্ড হয়ে গেছে। এই সময় নারীসহ ৭ জন আহত হয়েছে। এদিকে এই হামলা ও ভাঙচুরের প্রতিবাদে জেলা কৃষকদলের উদ্যোগে শুক্রবার রাতে নোয়াখালী প্রেসক্লাব সংলগ্ন একটি রেস্টুরেন্টে সংবাদ সম্মেলনে চট্টগ্রাম বিভাগীয় কৃষক দলের সাংগঠনিক সম্পাদক রবিউল হাসান পলাশ, জেলা কৃষক দলের সভাপতি ফজলে এলাহী ভিপি পলাশ ও জেলা সদস্য সচিব আবদুর জাহের হারুন ও এডভোকেট বাদল ও কৃষক দলের স্বপনসহ জেলা নেতারা উপস্থিত ছিলেন। সাংবাদিক সম্মেলনে তারা অভিযোগ করে বলেন। শুক্রবার বিকেল সাড়ে চারটার দিকে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার চর এলাহী ইউনিয়নের জাইকা আশ্রয়ণকেন্দ্র মাঠে কৃষক দলের সমাবেশে এ হামলার ঘটনা ঘটে। এতে উপজেলা কৃষক দলের যুগ্ম আহবায়ক জসিম উদ্দিন, তার স্ত্রী জান্নাতুল ফেরদৌস, সদস্য সচিব মনির আহাম্মদসহ কমপক্ষে ৭ জন আহত হয়েছেন।
এদিকে হামলা ভাঙচুর চালিয়ে কৃষক দলের সমাবেশ পণ্ড করার ঘটনার প্রতিবাদে আজ রাতে জেলা শহর মাইজদীতে সংবাদ সম্মেলন করেছে জেলা ও কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা কৃষক দল। সংবাদ সম্মেলনে হামলা–ভাঙচুরের ঘটনার জন্য উপজেলা বিএনপির আহবায়ক নুরুল আলম সিকদার ও সদস্যসচিব মাহমুদুর রহমান ওরফে রিপনকে দায়ী করা হয়েছে। প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সাড়ে চারটার দিকে চর এলাহী কৃষক দলের নেতা-কর্মীরা স্থানীয় জাইকা আশ্রয়ণকেন্দ্রের মাঠে কৃষক সমাবেশের কাজ শুরু করছিলেন। এ সময় একদল যুবক লাঠিসোঁটা নিয়ে অতর্কিত সেখানে হামলা চালান। হামলাকারীরা সমাবেশে আগত নারী-পুরুষদের এলোপাতাড়ি পিটিয়ে আহত করেন এবং সমাবেশস্থলে রাখা চেয়ার ভাঙচুর করেন। হামলাকারীদের পিটুনিতে উপজেলা কৃষক দলের যুগ্ম আহবায়ক জসীম উদ্দীন, তার স্ত্রী কৃষক দলের সদস্য জান্নাতুল ফেরদাউসসহ কমপক্ষে ৭ জন আহত হন। গুরুতর আহত জান্নাতুল ফেরদাউসকে সন্ধ্যায় নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। খবর পেয়ে কোম্পানীগঞ্জ থানা-পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। তবে পুলিশ যাওয়ার আগেই হামলাকারীরা ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন।
রাতে সংবাদ সম্মেলনে জেলা কৃষক দলের আহবায়ক ফজলে এলাহী বলেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশনা অনুযায়ী তৃণমূল পর্যায়ে দলের নেতা-কর্মীদের মধ্যে ৩১ দফা প্রচারের অংশ হিসেবে সমাবেশের আয়োজন করা হয়। কিন্তু উপজেলা বিএনপির নেতাদের অনুসারী একদল যুবক অতর্কিত সেখানে হামলা চালান। হামলাকারীরা সমাবেশে ব্যবহৃত পাঁচটি মাইক নিয়ে যান। একই সময় তারা সমাবেশস্থলের চেয়ার ভাঙচুর করেন। পিটিয়ে আহত করেন উপজেলা কৃষক দলের যুগ্ম আহবায়ক, এক নারী সদস্যসহ ৭ জনকে। বিষয়টি তারা দলের উচ্চপর্যায়ে জানিয়েছেন। অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা বিএনপির আহবায়ক নুরুল আলম শিকদার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, বিষয়টি আমি জানিনা। জেলা কৃষক দলের আহবায়ক ও সদস্যসচিব নিজেদের মনগড়া কৃষক দলের কমিটি করেছেন। এদের কে কেউ কোম্পানীগঞ্জের কেউ চিনেন না। কমিটি গঠনে স্থানীয় বিএনপির কোনো মতামত নেওয়া হয়নি। তারা বিষয়টি নিয়ে আপত্তি জানিয়েছেন। কিন্তু শুক্রবার বিকেলে কোথাও কৃষক দলের কোনো সমাবেশ হয়েছে কি না কিংবা কেউ সেখানে হামলা চালিয়েছে কি না, সে বিষয়ে তিনি কিছু জানেন না । কোম্পানীগঞ্জ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) বিমল কর্মকার বলেন, চর এলাহী ইউনিয়নে কৃষক দলের সমাবেশে হামলা–ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। খবর পেয়ে থানা-পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। পুলিশ সেখানে গিয়ে হামলাকারীদের কাউকে পায়নি। এ ঘটনায় লিখিত অভিযোগ পেলে পরবর্তী সময়ে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
বিডি প্রতিদিন/এএ