নওগাঁ সরকারি কলেজে একাদশ শ্রেণিতে অতিরিক্ত ভর্তি ফি নেওয়ার অভিযোগ তুলে প্রতিবাদ করায় কলেজ শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক জুনায়েদ হোসেন জুনের ওপর হামলার অভিযোগ উঠেছে কলেজ প্রশাসনের কর্মচারীদের বিরুদ্ধে। রবিবার (৭ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, হামলার আগে কলেজের সেন্ট্রাল মাইকে ঘোষণা দেওয়া হয় যে, একজন কর্মচারীকে মারধর করা হচ্ছে। এরপর ১৫–২০ জন কর্মচারীর একটি দল কলেজ চত্বরে শহীদ মিনারের পাশে জুনায়েদকে স্ট্যাম্প, লাঠি ও বাঁশ দিয়ে পিটিয়ে আহত করে। ঘটনার পর থেকে আহত জুনায়েদ কলেজের মূল ফটকের সামনে অবস্থান নিয়ে বিচারের দাবি জানান।
জুনায়েদ হোসেন অভিযোগ করেন, ‘ভর্তির সময় কলেজ কর্তৃপক্ষ ছেলেদের কাছ থেকে ৩,৪৯১ টাকা ও মেয়েদের কাছ থেকে ৩,২৫১ টাকা নিচ্ছে, যা পার্শ্ববর্তী জেলার তুলনায় অনেক বেশি। সাধারণ শিক্ষার্থীদের কথা বিবেচনায় নিয়ে ফি কমানোর অনুরোধ করেছিলাম এবং চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত না হওয়া পর্যন্ত ভর্তি কার্যক্রম স্থগিত রাখতে বলি। এরপর অধ্যক্ষ আমাকে শহীদ মিনার পাড়ে নিয়ে যান এবং সেখানেই হামলা হয়।’
জুন আরও বলেন, ‘হঠাৎ মাইকে ঘোষণা দিয়ে আমার ওপর হামলা করা হয়। এটি পূর্বপরিকল্পিত এবং কলেজ প্রশাসনের প্রত্যক্ষ মদদে হয়েছে। আমি এর সুষ্ঠু বিচার চাই।’
হামলার পর ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা ও সাধারণ শিক্ষার্থীরা কলেজে বিক্ষোভ করে এবং অধ্যক্ষের সঙ্গে বৈঠকে বসে। শিক্ষার্থীরা হামলাকারীদের বিচারের দাবিতে স্লোগান দিতে থাকে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘হঠাৎ মাইকে ঘোষণা আসে। এরপর শহীদ মিনারের পাশে মারধরের শব্দ শুনতে পাই। কিছুক্ষণ পর দেখি জুনায়েদ ভাইকে পেটানো হয়েছে।’
কলেজ অধ্যক্ষ প্রফেসর সামসুল হক বলেন, ‘ভর্তির ফি ৫০০ টাকা বাড়ানো হয়েছে, যা কলেজের উন্নয়ন ও কর্মচারীদের বেতন পরিশোধের জন্য প্রয়োজন। গরিব শিক্ষার্থীদের সহযোগিতাও এই ফি থেকে করা হয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘সকাল সাড়ে ৯টার দিকে জুনায়েদ ভর্তি শাখার কক্ষে ঢুকে বসে। সেখানে দামি যন্ত্রপাতি থাকায় আমরা তাকে বের করে দিতে বলি। সে কথা না শুনলে কর্মচারীরা তাকে সেখান থেকে সরিয়ে দেয়। শুনেছি তাদের মধ্যে হাতাহাতি হয়েছে।’
অধ্যক্ষ জানান, মারধরের ঘটনার সঙ্গে তার কোনো সম্পৃক্ততা নেই। তিনি বলেন, ‘একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে, এবং অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
বিডি প্রতিদিন/জামশেদ