নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগে আটক ৪২ শিক্ষার্থী জামিনে মুক্তি পেয়েছেন এই খবর ইতিবাচক; তাদের পক্ষে যারা আইনি লড়াই করেছেন তাদেরকে ধন্যবাদ। অন্তত ৪২টি পরিবার ঈদের দিন উদ্বেগ মুক্ত থাকবেন। কিন্তু এই একই সময়ে আটক বাকি ৫০টি পরিবারের কী হবে? এর মধ্যে আছেন, সংবাদপত্রের খবর অনুযায়ী, একজন অন্তঃসত্বা, একটি শিশুর জননী- কেউ আটক আছেন কেবল সন্তানপ্রতিমদের পানি-খাবার দেবার কারণে, এদের কাউকে কাউকে সরকারি ছাত্র সংগঠনের কর্মীরা আটক করে পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছেন।
আটকদের মধ্যে আছেন নওশাবা; রিমান্ডে থাকা অবস্থায় তার অসুস্থতা ও হাসপাতালে ভর্তি রিমান্ড বিষয়ে আদালতের নির্দেশনার সাথে সঙ্গতিপূর্ণ মনে করার কোনো কারণ নেই। তাঁর জামিন বিষয়ে কোনো অগ্রগতি নেই। শহিদুল আলমের জামিনের আবেদনের শুনানি নির্ধারিত হয়েছে ১১ সেপ্টেম্বর- জামিনের আবেদনের প্রায় এক মাস পরে। তার আটকে বিশ্বব্যাপী প্রতিক্রিয়া হয়েছে; কিন্তু সে বিষয়ে সরকারের ভ্রূক্ষেপ নেই।
কোটা সংস্কার আন্দোলনের ৮ জন নেতা আটক আছেন; বারবার আবেদন করেও তাদের জামিন হয়নি। সর্বশেষ আটক হয়েছেন যুগ্ম-আহ্বায়ক লুৎফুন্নাহার লুমা; তাকে সিরাজগঞ্জ থেকে আটক করেছে পুলিশ। খবর অনুযায়ী ‘প্রথমে অভিযোগ ছিল গোলাপি সালোয়ার-কামিজ পরে যে মেয়েটি আওয়ামী লীগ অফিসে শিক্ষার্থী খুন ও ধর্ষণের গুজব ছড়িয়েছিল, লুমাই সেই মেয়ে। তবে পরে ওই অভিযোগ ভিত্তিহীন প্রমাণিত হলেও মুক্তি মেলেনি লুমার, বরং গুজব প্রচার ও নাশকতায় উসকানির নতুন অভিযোগে গ্রেফতার দেখিয়ে পাঁচদিনের রিমান্ড আবেদন করে পুলিশ। আদালত তিনদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন।’
এই রকম প্রেক্ষাপটে ৪২ জনের জামিনের জন্যে যারা সরকারের নির্বাহী বিভাগের কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছেন তারা নিশ্চয় জানেন যে এর দুই রকমের অর্থ হয়। সেটা তারা বুঝেই বলছেন আশা করছি, এও প্রত্যাশা যে ভবিষ্যতে তারা তাদের এই বক্তব্য বদলাবেন না। জামিনে মুক্তিলাভ এবং জামিন না পাওয়া, রিমান্ডের ঘটনা সবই এখন বিবেচ্য।
সংবিধানে প্রদত্ত এবং আইনের আওতায় প্রাপ্য যে অধিকার তা এখন ইচ্ছে-অনিচ্ছে, করুণা-অনুরাগের বিষয়ে পরিণত হয়েছে; তাকে যারা সোৎসাহে সমর্থন করছেন তাদের বিষয়ে কিছু না বলাই শ্রেয়। শিক্ষার্থীদের জামিনে মুক্তির স্বস্তি আমাদের যেন অন্য বিষয়গুলো ভুলিয়ে না দেয়।
(ফেসবুক থেকে সংগৃহীত)
বিডি প্রতিদিন/এনায়েত করিম