ভারতের শিঙ্গাপুর নামের গ্রামটি এক বিষ্ময়ের জন্ম দিয়েছে। ভারতের প্রদেশ মহারাষ্ট্রর নাভাসা জেলার এ গ্রামটিতে মূলত শনি মন্দিরের কারণেই বেশি পরিচিত। গ্রামের নামও শনি দেবতার নামানুসারেই রাখা হয়েছে। তবে দুই শতাধিক বসতবাড়ির এই গ্রামটিতে নেই কোনো দরজা।
গ্রামটিতে দিন বা রাত যখনই হোক ২৪ ঘন্টা সব বাসিন্দাদের ঘরের দরজা খোলা থাকে। আসলে সেই গ্রামে কারোর বাড়িতেই নেই প্রবেশের দরজা। এই কারণে চাইলেও দরজা বন্ধ করার সুযোগ নেই।
এমনকি ২০১১ সালে ভারতের রাষ্ট্রায়ত্ব একটি ব্যাংকের শাখা খোলা হয় সেখানে। ব্যাংক খোলার পরিকল্পনার সময় গ্রামবাসীর সাথে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ আলোচনার করে স্থির করে যে ব্যাংকের দরজা থাকলেও তা হবে স্বচ্ছ গ্লাসের আর থাকবে না কোনো তালা।এই রহস্যের পিছনে আছে এক লোককথা। প্রচলিত আছে, প্রায় ৩০০ বছর আগে গ্রামটিতে একবার প্রচন্ড বৃষ্টি ও বন্যা হয়। বন্যা শেষ হলে গ্রামের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া পানাশালা নদীর তীর থেকে উদ্ধার হয় বিশালাকৃতির কালো রঙের একটি পাথর।
এক রাখাল তার হাতের লাঠি দিয়ে পাথরটিকে স্পর্শ করতেই সেটি থেকে নাকি অঝোর ধারায় রক্ত বইতে শুরু করে। গ্রামের সকল মানুষ ভয়ে দিশেহারা হয়ে দিগবিদিক ছুটতে শুরু করে। তারপর হঠাৎ করেই কোনো এক অদৃশ্য শক্তির প্রভাবে সবাই নাকি ঘুমিয়ে পড়ে।
সবাই যখন গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন ছিল, তখন সবার স্বপ্নে দেখা দেয় শনি দেবতা। সবাইকে তিনি জানান যে, এই মূর্তি তারই প্রতিমূর্তি। যদি তারা ঠিকভাবে তার উপাসনা করে তাহলে সবার মুক্তি ও নিরাপত্তা দেবেন ঈশ্বর। নইলে এই রক্তের ধারা বন্ধ হবে না।
তার উপাসনার জন্যে দুটি শর্ত জুড়ে দেন। প্রথমত, এই গ্রামের কোনো জায়গায় পবিত্র মূর্তিটিকে রাখতে হবে। দ্বিতীয়ত, গ্রামের কেউ তাদের ঘরের দরজা কখনোই বন্ধ করতে পারবে না। সেই থেকেই এমনভাবে চলে আসছে গ্রামটিতে।
বিডি প্রতিদিন / অন্তরা কবির