পাহাড় যেন এখন এক টুকরো বাংলাদেশ। আনন্দ উল্লাস আর প্রশংসার চর্চা হচ্ছে চারপাশে। পাহাড়কন্যারা আবারও জয় করেছে বাংলাদেশ। এ গৌরবে উচ্ছ্বসিত পাহাড়বাসি। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সরকারের পৃষ্ঠপোষকতা আর সহায়তা পেলে বিদেশের মাটিতে একদিন স্বর্ণাক্ষরে বাংলাদেশের নাম লিখবে পাহাড় কন্যারা।
২০২২ সালের পর এটি ছিল পাহাড় কন্যাদের দ্বিতীয় জয়। সাফ নারী চ্যাম্পিয়নশীপে নেপালের বুকে এক টুকরো বাংলাদেশের মানচিত্র একে দিয়ে এসেছে পাহাড় বাঘিনীরা। বলছি- গেলাদাতা ঋতুপর্ণা চাকমা, মনিকা চাকমা ও গোল রক্ষক রূপনা চাকমার কথা। পাহাড় জুড়ে এখন তাদের নিয়ে চর্চা। প্রশংসায় ভাসছেন তাদের পরিবারও। শুভেচ্ছার ঝড়-উল্লাস সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও। এখনো বাড়ি ফেরেনি তারা। তাই তাদের বরণ করতে আগেভাগে প্রস্তুত পাহাড়বাসি।
সাফ নারী চ্যাম্পিয়নশীপে নেপালকে পর পর দু’টি গোল দিয়ে জয় বয়ে এনেছে ঋতুপর্ণা চাকমা ও মনিকা চাকমা। আবার একই দলে সেরা গোলরক্ষক ছিল রূপনা চাকমাও। ২-১ গোলে নেপালকে হারিয়ে কাঠমন্ডুর দশরথ রঙশালা স্টেডিয়ামে বাংলাদেশের বিজয় এনেছে এ পাহাড়কন্যারা।
জানা গেছে, রাঙামাটি শহর থেকে দুর্গম উপজেলা কাউখালীর ঘাগড়া ইউনিয়নের মগাছড়ি ঋতুপর্ণা চাকমা বাড়ি। আর রাঙামাটির আরেক প্রান্তে নানিয়ারচর উপজেলার কার্বারী পাড়ায় রূপনা চাকমা বাড়ি। দ্’ুজন দু’উপজেলার বাসিন্দা হলেও খেলায় ছিল একই দলে। তাদের সাথে ছিল মনিকা চাকমাও। তার বাড়ি অপর পার্বত্য জেলা খাগড়াছড়ি লক্ষ্মীছড়িতে। সাপ চ্যাম্পিয়নশীপের বিজয়ের কথা ছড়িয়ে পড়ার পর তাদের বাড়িতে মানুষের ভিড় জমেছে। ফুলের শুভেচ্ছাতে ভাসছে তাদের পরিবার।
ঋতুপর্ণা চাকমার (মা) বসুমতি চাকমার বলেন, আমি সত্যি আনন্দিত আমার মেয়ে বাংলাদেশর মুখ উজ্জল করেছে। আমার মেয়ে আসলেই অনেক পরিশ্রমী। পরিবারের কাজে সহায়তার পাশপাশি সে খেলাধূলায়ও বেশ মনযোগী।
রাঙামাটি রবার্ট স্কাউটস সাধারণ সম্পাদক মো. আবছার উদ্দীন বলেন, রাঙামাটিতে একটি আধুনিক স্টেডিয়াম নেই। ঋতুপর্ণারা একটি সাধারণ বিদ্যালয়ের মাঠে খেলাধূলা করতো। সেখানে থেকে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে খেলে দুই দুইবার বাংলাদেশের জন্য জয় নিয়ে এসেছে। রাঙামাটিতে একটা বিকেএসপি করা হলে এ অঞ্চলের সন্তানরা আরও ভালোভাবে খেলায় প্রশিক্ষণ পাবে। আধুনিক মানের স্টেডিয়াম আর উন্নত প্রশিক্ষণের মাধ্যমে পার্বত্যাঞ্চলের মাটিতে জন্ম হতে পারে আরও রূপনা, মনিকা ও ঋতুপর্ণা চাকমার মতো নারী খেলোয়ার।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল