শুক্রবার ছিল রাঙামাটি পর্যটক ভ্রমণে নিরুৎসাহীত আদেশ প্রত্যাহারের প্রথমদিন। তবে ছিল না কোনো পর্যটক। নেই কোনো হোটেলে বুকিং। একেবারেই ফাঁকা পর্যটন কেন্দ্রগুলো। তবে টানা ২৩দিন পর পর্যটক বরণে প্রস্তুতির কমতি রাখেনি সংশ্লিষ্ট পর্যটন ব্যবসায়ীরা।
ঢেলে সাজানো হয়েছে হোটেল, মোটেল, রিসোর্ট ও রেস্টুরেন্ট, হাইজ ও ট্যুরিস্ট বোট। পর্যটকদের জন্য পুরো নভেম্বর মাস পর্যন্ত রাখা হয়েছে বুকিংয়ে ৩০ ভাগ ছাড়। ছাড় আছে পর্যটন তালিকাভুক্ত রেস্টুরেন্টগুলোতেও। কিন্তু প্রথম দিনে পর্যটক না থাকায় ম্লান করেছে সমস্ত আয়োজন। তবে শুক্রবার ছুটির দিন থাকায় ঘর ছেড়ে বেড়িয়ে এসেছে স্থানীয়রা। তাদের ভিড় চোখে পরেছে পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, গত বুধবার রাঙামাটি জেলা প্রশাসক মো. মোশারফ হোসেন খান এক প্রেস ব্রিফিংয়ের মাধ্যমে রাঙামাটি ভ্রমণের উপর নিরুৎসাহীতকরণ আদেশ তুলে নেন। এর পর পর্যটন ব্যবসায়ীদের শুরু হয় পর্যটক বরণে নানা প্রস্তুতি। দীর্ঘদিন কাপ্তাই হ্রদের পানিতে ডুবে থাকা ঝুলন্ত সেতুও ভেসে উঠার পর নতুন করে মেরামত করা হয়। রঙ তুলির আঁচরে রঙিন করা হয় সেতুর পাটাতন। পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করা হয় পর্যটন কেন্দ্রগুলো। হোটেল ও মোটেলগুলোতেও রঙ করে আকর্ষণ বাড়ানো হয়। শুধু তাই নয়, রেস্টুরেন্টগুলোতেও খাবারের মেনু পরির্বতন করা হয়। পর্যটকদের চাহিদাকে মাথায় রেখে স্থানীয় খাবারসহ যোগ করা হয় বিদেশী খাবারের মেনু।
রাঙামাটি ব্যার্গি লেক ভ্যালীর ব্যবস্থাপক বাপ্পী তংঞ্চঙ্গ্যা বলেন, শুধু নিষেধাজ্ঞা নয়। পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে প্রভাব পরেছে রাজনৈতিক অস্থিরতা। টানা চারমাস পর্যটক নেই পাহাড়ে। এ ব্যবসায় এখন লোকসান ছাড়া লাভ একেবারে নেই। আশা করছি এখন হয়তো আবার পর্যটক আসবে। কারণ এখন পরিবেশ পরিস্থতি একেবারে স্বাভাবিক।
রাঙামাটি লঞ্চ ও হোটেল মালিক সমিতির সভাপতি মো. মঈন উদ্দীন সেলিম বলেন, পর্যটকরা যাতে নিরাপদে পাহাড় ভ্রমণ করতে পারে তার জন্য সব ব্যবস্থা করা হয়েছে। পর্যটকদের জন্য প্রশাসনও নজদারি বাড়িয়েছে। হোটেলে বিশেষ ছাড়ে পর্যটকরা আনন্দ পাবে।
অন্যদিকে সাপ্তাহিক ছুটিরদিনেও পর্যটন কেন্দ্রে পর্যটক না থাকায় কিছুটা হতাশ রাঙামাটি পর্যটন কমপ্লেক্সের ব্যবস্থাপক আলোক বিকাশ চাকমা। তিনি বলেন, পর্যটকদের জন্য হোটেল মোটেল রিসোর্ট আর রেসনটুরেন্টে ৩০ ভাগ ছাড় দেওয়া হয়েছে। পর্যটক আসলেই বরণ করে নেয়া হবে। তবে ঝুলন্ত সেতুতে স্থানীয়দের আনাগোনা বেড়েছে। এতে কিছুটা রাজস্ব আয় হচ্ছে।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি সহিংষতার ঘটনার পর উদ্বেগ উৎকণ্ঠা থাকায় গত ৮অক্টোবর পর্যটকদের নিরাপত্তায় রাঙামাটিসহ অপর দু’পার্বত্য জেলা খাগড়াছড়ি ও বান্দরবানে পর্যটক ভ্রমণে নিরুৎসাহীতকরণ আদেশ জারি করা হয়।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল