স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, বাংলাদেশের প্রতিবেশী দেশগুলোতে ফের করোনা সংক্রমণ বাড়ছে। এ জন্য যারা এসব দেশ থেকে ফিরছেন তাদের ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে। আমাদের দেশেও সংক্রমণ বাড়তে পারে। এ জন্য সচেতন থাকতে হবে। গতকাল রাজধানীর মহাখালী জনস্বাস্থ্য পুষ্টি প্রতিষ্ঠান (নিপসম) অডিটোরিয়ামে জাতীয় পুষ্টি দিবসের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। দেশে এখন খুব একটা লোকের করোনা টিকা নেওয়ার বাকি নেই উল্লেখ করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, যারা এখনো টিকা পায়নি, তারা টিকা দিতে চায় না। অনেকে নেপাল ও ভুটানের সঙ্গে মেলায়, কিন্তু তাদের জনসংখ্যা কম। আমরা দিনে ১ কোটি টিকাও দিয়েছি। ১৩ কোটি মানুষকে টিকা দিয়েছি।
জাহিদ মালেক আরও বলেন, মানুষের গড় আয়ু এখন ৭৩ বছর। ভালো খাবার খেলে শরীর সুস্থ থাকে। ভালো খাবার বলতে পুষ্টিকর খাবার। আমাদের দেশে পুষ্টি সেবার অনেক উন্নতি হয়েছে। উন্নয়ন হয়েছে প্রাইমারি হেলথ কেয়ারে। মানুষকে এর মাধ্যমে সেবার পাশাপাশি কী খেতে হবে কী খাওয়া উচিত নয় তাও শিক্ষা দেওয়া হয়। আমরা লবণ পরিহার করতে বলি। অতিরিক্ত তেলযুক্ত খাবার বর্জন করতে বলা হয়। তিনি বলেন, সংক্রামক ব্যাধি টিবি, পোলিও ও ম্যালেরিয়ার মতো রোগ নিয়ন্ত্রণে রাখতে পেরেছি। এ জন্য মৃত্যুর হার কমেছে। কিন্তু আমাদের অসংক্রামক রোগ বাড়ছে অনেক। ক্যান্সারের মতো রোগ বাড়ছে। এসবের জন্য খাদ্যাভ্যাস ও জীবনাচরণের দিকে নজর দিতে হবে। এমন খাবার খেতে হবে যেটা আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াবে।
এখন মানুষ গড়ে ১২০টি ডিম খায় উল্লেখ করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, দেশের মানুষের ক্যালোরিও আশপাশের দেশ থেকে বেশি। এখনো দারিদ্র্যসীমার নিচে ১০-১৫ শতাংশ মানুষ আছে তা জানি। কিন্তু আমাদের খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা আছে।
অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সিনিয়র সচিব লোকমান হোসেন মিয়া বলেন, আধুনিকতায় আমাদের এগিয়ে নিয়ে গেলেও কিছু জায়গায় পিছিয়ে গেছে। সন্তানের জন্য শালদুধ গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু সেটা ঠিকমতো শিশুরা পায় না। অধিকহারে সিজার হওয়ায় প্রবণতা বেড়েছে। নরমাল ডেলিভারি হওয়া ভালো। স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাশার খুরশিদ আলম বলেন, স্বাধীনতার শুরু থেকে আমাদের নানা পুষ্টি সমস্যা ছিল। মানুষের ওজন কম ছিল, স্বাস্থ্য কম ছিল। এখন তা কমে এসেছে। জাতীয় পুষ্টি কার্যক্রমের পরিচালক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, সারা দিন রোজা রেখে না খেয়ে সন্ধ্যায় আমরা খাচ্ছি, কিন্তু কী খাচ্ছি সেটা আপনারাই জানেন। প্রতি তিনজনে একজন এনসিডিতে মারা যাচ্ছে। এ জন্য আমাদের পুষ্টি নিয়ে সচেতন হতে হবে। আমাদের সুস্থ থাকতে হলে নতুন যে ফাস্টফুডের বিপদ এসেছে সেটাকে বাসা থেকে বিদায় জানাতে হবে।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের (স্বাচিপ) সভাপতি এম ইকবাল আর্সলান, স্বাচিপের মহাসচিব এম এ আজিজ, বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব (বিএমএ) এহতেশামুল হক চৌধুরী প্রমুখ।
